সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৯ ঘণ্টার অপারেশনে মিলল সাফল্য। উত্তরপ্রদেশে ফারুকাবাদে এনকাউন্টারে নিকেশ অপহরণকারী সুভাষ বাথাম। সুস্থভাবে উদ্ধার করা হয়েছে ১৫ জন শিশু-সহ মহিলাদের। পুলিশের সাফল্যে বেজায় খুশি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। উদ্ধারকারী পুলিশদের ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন তিনি।
মেয়ের জন্মদিন রয়েছে এই অজুহাতে মোট ১৫ জন শিশু-সহ বেশ কয়েকজন মহিলাকে নিমন্ত্রণ করে সুভাষ বাথম নামে এক ব্যক্তি। নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে বৃহস্পতিবার দুপুরে করথিয়া গ্রামের নিমন্ত্রিতরা সুভাষের বাড়িতে যায়। রীতিমতো আপ্যায়ন করে একটি ঘরে নিয়ে যায় সুভাষ। ঘরের ভিতরে সকলে ঢুকেও যায়। অভিযোগ, সেই সুযোগে বাইরে থেকে ঘরটি বন্ধ করে দেয় সুভাষ। এদিকে, নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যায়। তখনই টনক নড়ে আমন্ত্রিতদের পরিজনদের। সুভাষের বাড়ির সামনে যায় নিমন্ত্রিতদের পরিবারের লোকজন। অভিযোগ, কিছু বুঝে ওঠার আগেই জানলা দিয়ে গুলি চালাতে শুরু করে সুভাষ। তাতে এক গ্রামবাসী জখম হন। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। সুভাষ বাথমের বাড়ির কাছে পৌঁছনো মাত্রই প্রায় অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়। বাড়ির ভিতর থেকে বোমা ছুঁড়তে থাকতে সুভাষ। বোমার প্লিন্টারে গুরুতর জখম হন তিন পুলিশকর্মী। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন জেলাশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপার।
সাতঘণ্টা ধরে চলে অপহরণকারী এবং পুলিশ গুলির লড়াই। ইতিমধ্যেই সুভাষ বাড়ির বারান্দা থেকে মাসছয়েকের এক কন্যাসন্তানকে গ্রামবাসীদের হাতে তুলে দেয়। ধৈর্য আর রাখতে পারেননি গ্রামবাসীরা। তাঁরা সুভাষের বাড়ির মূল দরজা ভাঙতে শুরু করে। সুযোগ বুঝে বাড়ির ভিতর ঢুকে পড়ে বিশাল পুলিশবাহিনী। পালটা আত্মরক্ষায় গুলি চালাতে শুরু করে সুভাষ।
অপহরণকারীর স্ত্রীকে হাতের নাগালে পেয়ে যান স্থানীয়রা। তাকে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করে গ্রামবাসীরা। পুলিশ ওই মহিলাকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। তবে কিছুক্ষণ পর হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই মহিলারও। এভাবে কেটে যায় প্রায় ৯ ঘণ্টা। রাত ১.৩০টা নাগাদ পুলিশ জানায়, এনকাউন্টারে খতম করা হয়েছে অভিযুক্ত সুভাষ বাথমকে। এনকাউন্টারে অপহরণকারীর মৃত্যুর পরই অপারেশনে থাকা পুলিশকর্মীদের জন্য ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
কেন শিশু এবং মহিলাদের টার্গেট করল সুভাষ? সূত্রের খবর, সুভাষের বাড়িতে শৌচাগার ছিল না। জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছিল সে। তবে আজও তার সমস্যার সমাধান হয়নি। প্রশাসনিক আধিকারিকদের প্রতিশোধ নিতেই এমন কাণ্ড বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখে অপহরণকারী সুভাষের মোটিভ বোঝার চেষ্টা করছে পুলিশ। এদিকে, শিশুরা বাড়ি ফিরেছে ঠিকই। তবে এখনও তাদের চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট।
UP Additional Chief Secretary and Principal Secretary Home Awanish Kumar Awasthi on children kept as hostage at a house in Farrukhabad: The person who was holding the children as hostage has been killed in an operation and all children have been safely evacuated. pic.twitter.com/48QYcsoGRr
— ANI UP (@ANINewsUP) January 30, 2020
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.