Advertisement
Advertisement

পেট বড় বালাই, কুলির কাজ করেই দিন গুজরান এই গৃহবধূর

বধূর সংগ্রামকে কুর্নিশ।

Housewife works as coolie at Jaipur station to meet ends
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:May 28, 2018 1:23 pm
  • Updated:May 28, 2018 1:23 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:  দায়িত্ব বড় বালাই। তাই  সংসারের একমাত্র রোজগেরে মানুষটির চলে যাওয়া অনেক বড়মাপের ছাপ ফেলেছিল। জড়তা কাটিয়ে নিজের কাঁধেই তুলে নেন রেলযাত্রীর বাক্স প্যাঁটরা। সেদিন থেকেই মঞ্জুদেবী হয়ে গেলেন কুলি নম্বর ১৫।জয়পুর স্টেশনে নেমে এই বুলি হাঁকলে ব্যাজ পরা যিনি সামনে আবির্ভূত হবেন, তাঁকে দেখে চমকে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। ব্যাজ নম্বর ১৫-র মালকিন একজন মহিলা। নাম মঞ্জুদেবী। স্টেশনে মালবহন করেন। যা আয় হয়,  তা দিয়েই বড় করে তুলছেন তিন সন্তানকে। নিয়মিত পাঠাচ্ছেন স্কুলেও। স্বামী প্রয়াত হয়েছেন দশ বছর আগে। তিনিও ছিলেন একই পেশায়। মালবাহকের ব্যাজ নম্বর ১৫ আদপে ছিল তাঁরই। তবে মানুষ চলে গেলেও কাজ তো আর বন্ধ থাকতে পারে না। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। স্বামীর কুলি নম্বর এখন মঞ্জুদেবীর পেশাগত পরিচয়।

[মাও অধ্যূষিত এলাকায় উদ্ধার প্রায় ১৬০০ কেজি গাঁজা, বড় সাফল্য এনসিবির]

এই মঞ্জুদেবীই গোটা উত্তর-পশ্চিম রেলের প্রথম মহিলা মালবাহিকা বা কুলি। স্বামীর মৃত্যুর পর আকাশ ভেঙে পড়েছিল মঞ্জুদেবীর মাথায়। তবু বরাবরের লড়াকু এই গৃহবধূ হাল ছাড়েননি। সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে স্বামীর পেশাকেই গ্রহণ করবেন বলে মনস্থির করেন। কিন্তু নিজে নিজে ভাবলেই তো আর হল না! রেল কর্তৃপক্ষ, স্টেশন কর্তা কিংবা সহকর্মী পুরুষরা কী বলবেন ?  তাঁদের অনুমতি,  মতামতটাও তো জরুরি। তবু মা,  মোহিনীদেবীর কাছ থেকে সাহস সঞ্চয় করে নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে যান মঞ্জুদেবী। কথা বলেন আধিকারিকদের সঙ্গে। তাঁকে জানানো হয়,  উত্তর-পশ্চিম রেলে এখনও পর্যন্ত কোনও মহিলা কুলি নেই। ফলে যা মঞ্জুদেবী চাইছেন,  তা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবু সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন তিন সন্তানের এই জননী। ফলত, মঞ্জুদেবীর কথা মেনে নিয়ে তাঁকে প্রয়াত স্বামীর কাজের ব্যাজ নম্বর দিয়ে দেন আধিকারিকরা।

Advertisement

[লোকসভা নির্বাচনে প্রধান নির্ণায়ক শক্তি হবে আঞ্চলিক দলগুলি: চন্দ্রবাবু]

শুরু হয় নতুন জীবন সংগ্রাম। স্টেশনে দূরপাল্লার ট্রেন ঢোকার অপেক্ষামাত্র। মঞ্জুদেবী আগে থেকেই ঠিক করে নেন কীভাবে এগোবেন। তারপর শুরু ছুটে চলা। ট্রেনে যাত্রীদের লটবহর তোলা থেকে নামানো সবেতেই এখন সিদ্ধহস্ত। একটা সময় পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করে উঠতে পারতেন না। কিন্তু সময় ও অভ্যাস সবই তৈরি করে দেয়। তাই আজ আর কিছুই হয় না। অবলীলায় লট বহর নামিয়ে চলন্ত ট্রেন থকেও নেমে আসেন। মাঝে মাঝে প্ল্যাটফর্ম থেকে অপসৃয়মান ট্রেনকে দেখতে দেখতে ফিরে যান অতীতে। যখন ঘরকন্নাই ছিল তাঁর একমাত্র পরিচয়। তবে স্মৃতিমেদুরতা তো তাঁর কাছে বিলাসিতার শামিল। আবারও উঠতে হয়। বোঝা কাঁধে ছোটার পালা। পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেনের ঘোষণা যে চলছে…।

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ