Advertisement
Advertisement

Breaking News

এই জায়গায় মেয়েরা একা থাকলেই ভূতে ধরে!

ফিরোজ শাহ কোটলায় একা মেয়ে যায় না। লোকবিশ্বাস, গেলে তার ক্ষতি হবেই! জিন সেই একা মেয়েকে হয় তখনই গ্রাস করবে! নয় তো, ধাওয়া করে বেড়াবে সারা জীবন!

In This Haunted Place, Ghosts Attack Young Women And Haunt Them Later
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:May 28, 2016 5:56 pm
  • Updated:February 28, 2019 4:24 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এই পৃথিবী চলে ঈশ্বরের ইচ্ছায়! তাঁর অভিপ্রায় ছাড়া একটা পাতাও নড়ে না, হাওয়া বয় না!
তাহলে এই যে ঐতিহাসিক ধ্বংসস্তূপ, যেখানে একা মেয়ে থাকলেই তাকে ভূতে ধরে, তার নেপথ্যেও কি রয়েছেন ঈশ্বর?
এ ভাবে বিচার করতে গেলে বিতর্ক উঠতে পারে। কিন্তু, তাঁর অভিপ্রায় বোঝা নশ্বর মানুষের সাধ্যে নেই!
আসলে, দিল্লির বাহাদুর শাহ জাফর রোডের ফিরোজ শাহ কোটলার অভিশপ্ত হওয়ার দিকে তাকালে ফিরে যেতে হয় সৃষ্টির প্রথম দিনে। তখনও মানুষকে সৃষ্টি করেননি সর্বশক্তিমান আল্লাহ। ধোঁয়াহীন আগুন থেকে শুধু জন্ম দিয়েছেন জিনদের!
প্রথমে জিনরা ছিল উপকারী। ঈশ্বর তাদের মানুষের অনিষ্ট করার জন্য পৃথিবীতে আনেননি!

feroz-shah-kotla-fort
কিন্তু, ঈশ্বরের চেতনা-সম্পন্ন সব সৃষ্টিই মানুষের মতো। তাদের কেউ ভাল, কেউ বা খারাপ! জিনদের মধ্যেও অতএব ভাল-খারাপ দুটোই ছিল!
এবার, ওই খারাপদের একজন, নাম তার ইবলিস, একদিন বেমক্কা বিদ্রোহ ঘোষণা করল ঈশ্বরের বিরুদ্ধে। বলল, সে সর্বশক্তিমানের কাছে মাথা নত করবে না।
ঈশ্বর অবশ্য ইবলিসের এই স্পর্ধা সহ্য করেননি! অভিশাপ দিয়ে তাঁকে পাঠিয়ে দেন পাপের জগতে। এই ইবলিস আর তার সন্তানরাই মন্দ জিন! তারা মানুষের ক্ষতি ছাড়া ভাল কিছু করে না। মানুষ ঈশ্বরের সামনে মাথা নত করেছে- এই তার অপরাধ!
সব ঠিক আছে! জিনদের এই কাহিনি আর ঈশ্বরের অভিপ্রায়ের সঙ্গে কী ভাবে জুড়ে গেল দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা?
যমুনা পারের এই দুর্গ আসলে শুরু থেকেই সন্ত্রাসের আঁতুড় ঘর! ১৩৫৪ খ্রিস্টাব্দে দিল্লির সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক যমুনা নদীর পারে এই কোটলা বা দুর্গ নির্মাণ করেন। তার সঙ্গেই শুরু হয়, মেয়েদের উপর অবর্ণনীয় অত্যাচার!

Advertisement

20110821211248-caveentrance
ভারত পর্যটক জিয়াউদ্দিন বারুনি তাঁর ‘তারিখ-ই-ফিরোজশাহি’ বইতে লিখে গিয়েছেন সুলতানের নারী সম্ভোগের নানা গা শিউরে ওঠা কাহিনি। হিন্দু নারীকে হারেমে এনে রাখা, তার উপর গায়ের জোর দেখানো- অল্প-বিস্তর অনেক নবাব-সুলতানই করেছেন! কিন্তু, ফিরোজ শাহ তুঘলকের অত্যাচার ছিল সীমাতীত! মেয়েদের তিনি হারেমে শুধু যৌনতার জন্যই বন্দী করে রাখতেন না। মাঝে মাঝেই তাদের অসহায়তা উপভোগ করার জন্য নগ্ন করে ছেড়ে দিতেন সবার সামনে। যোনির মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দিতেন জ্বলন্ত লোহার শলাকা। কখনও শাস্তি হিসেবে বন্দী নারীদের যোনি সেলাই করে দেওয়া হত।
সেই অত্যাচার দুর্গ ধুলোয় প্রায় মিশে যাওয়ার পরেও শেষ হয়নি। লোকবিশ্বাস, এখনও সেই অত্যাচারের ধারা বহাল রয়েছে। তবে, মানুষের হাতে নয়। জিন ইবলিস আর তার দলবলের হাতে। সেই জন্যই ফিরোজ শাহ কোটলায় একা মেয়ে যায় না। লোকবিশ্বাস, গেলে তার ক্ষতি হবেই! জিন সেই একা মেয়েকে হয় তখনই গ্রাস করবে! নয় তো, ধাওয়া করে বেড়াবে সারা জীবন!

Advertisement

Djinns-of-Feroz-Shah-Kotla_
তবে, ঈশ্বরের এই সৃষ্টিতে তো নিরবচ্ছিন্ন মন্দ বলে কিছু হয় না। যে ঈশ্বরের অভিপ্রায়ে মন্দ জিনরা বেহেশতচ্যুত হল আর পৃথিবীতে এল মানুষের অপকারের জন্য, তাদেরই শায়েস্তা করার জন্য ঈশ্বর আরও এক দল জিনকে পাঠালেন পৃথিবীতে। তাদের প্রধানের নাম লাট ওয়ালে বাবা।
লাট মানে মিনার বা স্তম্ভ! ফিরোজ শাহ কোটলায় এক পিরামিডের মতো আকৃতিবিশিষ্ট সৌধ আছে, নাম তার ‘মিনার-এ-জারিন’। লোকবিশ্বাস, এই মিনারেই দলবল নিয়ে বাস করে লাট ওয়ালে বাবা। অশুভ জিনের হাত থেকে মানুষকে বাঁচায় তার শুভ শক্তি।
তাই, ফিরোজ শাহ কোটলায় প্রতি বৃহস্পতিবার জিনের পুজো দেওয়া হয়। প্রদীপ আর ধূপকাঠি জ্বালিয়ে প্রার্থনা করা হয় তাদের উদ্দেশে। দেওয়া হয় মিষ্টি। অনেকে আবার সমস্যার কথা হাতে লিখে চিঠি বেঁধে যান দুর্গের লোহার দরজায়। শোনা যায়, আজ পর্যন্ত কেউ লাট ওয়ালে বাবার কাছে সমস্যা জানিয়ে বিফল হননি!

10708141_831213183578804_18
ঈশ্বরের অভিপ্রায় আসলে এটাই! তিনি সব সময়েই মানুষের সামনে উপস্থিত করেছেন ভাল আর মন্দ- দুটোই! অপকারের বিপরীতেই প্রতিকারের জন্য রেখেছেন উপকার! মানুষকে তিনি বলেই রেখেছেন, বিপদ থাকবে, কিন্তু থাকবে আশার আলোও! সেটা ভুলে গেলেই সর্বনাশের শুরু!
যদিও ফিরোজ শাহ কোটলায় পা রাখলে সবার আগে ভয়টাই গ্রাস করে! অনেক পর্যটকই ভাঙা দুর্গের মধ্যে কানের কাছে শুনেছেন একটা বিড়বিড় আওয়াজ। ভাষাটা বোঝা যায় না। অনেক সময় কাঁধে স্পষ্ট টের পাওয়া যায় উষ্ণ নিশ্বাস! ঘুরে দেখলে কারও অস্তিত্ব চোখে পড়ে না!
সেই জন্যই বৃহস্পতিবার দল বেঁধে ছাড়া আর অন্য বারে, একা একা কেউ ফিরোজ শাহ কোটলায় যান না! মেয়েরা তো নয়ই!
সাধ করে কে-ই বা আর বিপদ ডেকে আনতে চায়!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ