Advertisement
Advertisement

চিনা হুমকির পাল্টা চাল মোদির, বেজিংকে ঘিরে চক্রব্যূহ ভারতের

চিনকে ঘিরতে মোদির হাতিয়ার কোন কোন দেশ?

India plans strategic encirclement of China
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:January 19, 2017 11:57 am
  • Updated:January 19, 2017 11:57 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বদলাচ্ছে সমীকরণ৷ আমেরিকা, রাশিয়ার মত সুপার পাওয়ারদের একচ্ছত্র আধিপত্যেকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ছে চিন ও ভারত৷ আমূল পাল্টে যাচ্ছে সামরিক ও কৌশলগত হিসেব-নিকেশ৷ এককালের গলায় গলায় ভাব ছিল যাঁদের, তাঁরাই আজ একে অপরের বিরুদ্ধে অস্ত্রে শাণ দিচ্ছে৷

(ভিয়েতনামকে অস্ত্র বিক্রি করলে ভারতকে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি চিনের)

এমনই পরিস্থিতিতে এশিয়া মহাদেশে ভারত ও চিনের উত্থান উস্কে দিয়েছে আধিপত্যের লড়াই৷ বিশ্বের দ্রুততম অর্থনীতি ভারতের৷ রয়েছে পরমণু অস্ত্র সম্ভার৷ সংবেদনশীল ও দায়িত্ববান দেশ হিসেবে ভারত বিশ্বে পরিচিত৷ জাপান, ভিয়েতনামের মত দেশগুলোর সঙ্গে তার সুসম্পর্ক রয়েছে৷ তাই দিল্লির উত্থানে চরম অশনি সংকেত দেখছে চিন৷ এশিয়া মহাদেশে বেজিংয়ের সামরিক উচ্চাকাঙ্খার পথে ভারত একটি প্রাচীর বলে মনে করে সে দেশের কমিউনিস্ট সরকার৷

Advertisement

তাই ভারতকে রুখতে ক্রমাগত পাকিস্তান ও অন্যান্য ভারত বিরোধী শক্তিগুলোকে মদত যুগিয়ে চলেছে চিন৷ দক্ষিণ চিন সাগরে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে চিন৷ পাকিস্তানের করাচি ও গদর বন্দরেও মোতায়েন রয়েছে চিনা রণতরী৷ শুধু তাই নয় শ্রীলংকার বন্দরেও দেখা গিয়েছে চিনা সাবমেরিন৷ তবে ভারতকে ঘিরে ফেলতে লালফৌজের প্রস্তুতির যোগ্য জবাব দিতে এবার তৈরি ভারতীয় সেনাও৷

Advertisement

(চিনকে ‘শিক্ষা’ দিতে ভিয়েতনামকে ‘আকাশ’ মিসাইল দিচ্ছেন মোদি)

malabar_web

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় এসেই চিন ও পাকিস্তানের কূট-অভিসন্ধি রুখতে ‘লুক ইস্ট পলিসি’ তৈরি করেছেন৷ জাপান, ভিয়েতনামের সঙ্গে ক্রমশ বাড়িয়ে তুলছেন সামরিক সহযোগিতা৷ সামরিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, এবার চিনকে ঘিরে ফেলতে তৈরি ভারত৷ কী ভাবে ভারত তৈরি করছে সেই চক্রব্যূহ?

(বেজিংকে রুখতে গেলেই যুদ্ধ বাধবে, আমেরিকাকে সতর্ক করল চিন)

সামরিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জাপান ও ভিয়েতনামের সঙ্গে ক্রমাগত  সামরিক সহযোগিতা বাড়াচ্ছে নয়াদিল্লি৷ এমনকি ভিয়েতনামকে ভয়ঙ্কর আকাশ মিসাইলও সরবরাহ করতে পারে ভারত৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর সাফ জনিযে দিয়েছেন, যে ভিয়েতনামের সেনাকে প্রশিক্ষণ দেবেন এদেশের জওয়ানরা৷ তিনি আরও বলেছেন, হ্যানয়কে কিলো ক্লাস সাবমেরিন ও সুখোইয়ের মত অত্যাধুনিক জঙ্গি বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ দেবে দিল্লি৷ ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হ্যানয় সফরে গিয়ে কৌশলগত ভাবে পারস্পরিক সহযোগিতার বার্তা দিয়েছেন৷

অন্যদিকে, জাপানের সঙ্গেও ভারত সামরিক সহযোগিতা ক্রমশ বাড়াচ্ছে৷ দক্ষিণ-চিন সাগরে লালফৌজের আগ্রাসী কার্যকলাপে উদ্বিগ্ন জাপান এবার নয়াদিল্লির সঙ্গে হাত মিলিয়ে চিনকে রুখতে প্রস্তুত৷ দক্ষিণ-চিন সাগরে লালফৌজকে নজরে রেখে ভারত-জাপান ও আমেরিকার নৌসেনারা ‘মালাবার’ যুদ্ধ মহড়াও সেরে ফেলেছে৷

(যে ১০টি ক্ষেত্রে ভারত গো-হারা হারাবে আমেরিকা-চিনকেও)

ভারতের তুরুপে রয়েছে আরও তাস৷ সম্প্রতি ভারত ‘অগ্নি-৪’ ও ‘অগ্নি-৫’ ব্যালেস্টিক মিসাইলের সফল উৎক্ষেপন করেছে৷ ৫০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম ওই পারমাণবিক মিসাইলের আওতায় এসে গিয়েছে বেজিংও৷ সম্প্রতি, ১০ ঘন্টায় দিল্লি দখলের হুমকি দিয়েছিল চিন৷ ভিয়েতনামকে মিসাইল দিলে বেজিংও চুপ থাকবে না বলে দাবি করেছিল চিন৷ যদিও সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিনের এই হুমকি আদতে প্রমাণ করে যে, ভারতের ক্রমবর্ধমান শক্তি দেখে তারা ভয় পাচ্ছে৷

(ভারতকে ঘিরে ফেলছে চিন, গদর বন্দরে মোতায়েন রণতরী)

china_web

এলিট পরমাণু ক্লাবে ভারত যাতে প্রবেশ করতে না পারে, সেই বিষয়েও কট্টর বিরোধিতার করছে চিন। ওবামা যেন বিদায়ী পুরস্কার হিসেবে ভারতকে পরমাণু ক্লাবে প্রবেশের ব্যবস্থা না করেন, এমনটাই হুঁশিয়ারি ছিল সে দেশের। ঠারেঠোরে তারই উত্তর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। চিনের আগ্রাসন ক্রমশই বাড়বাড়ন্তের দিকে। সেদিকে নজর দিয়েছেন সদ্য দায়িত্ব নেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। জানা যাচ্ছে, বাড়তে থাকা চিনা খবরদারিতে রাশ টানতে উদ্যোগী তিনিও। মার্কিন মুলুকে নিযুক্ত বিদায়ী ভারতীয় রাষ্ট্রদূত সে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন,  পরমাণু ক্লাবে ভারতের প্রবেশের ক্ষেত্রে সদর্থক ভূমিকা নেবেন ট্রাম্প।

(ঔদ্ধত্যে লাগাম টানতে নাম না করেই চিনকে বার্তা প্রধানমন্ত্রীর)

ট্রাম্প প্রশাসনের কাছ থেকে এই ইঙ্গিত মিলতেই কৌশলে দেশের বিদেশনীতি স্পষ্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কোথাও অবশ্য চিনের নাম নেননি তিনি। তবে এ কথা স্পষ্ট বলেছেন, কোনও কোনও দেশের অত্যাধিক উচ্চাকাঙ্খা ও ক্রমাগত শত্রুতা ছড়ানোই ইদানিং মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্পত্তির বাড়বাড়ন্ত ও সামরিক সরজ্ঞামের প্রাচুর্যই এখন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় সমস্যা। একক শক্তিতে বলীয়ান হওয়ার বদলে আন্তর্জাতিক নিয়মকে মান্যতা দেওয়ার উপর জোর দেন তিনি। স্পষ্টতই তাঁর নিশানায় ছিল চিন। সামরিক শক্তি থেকে পরমাণু- একের পর এক ইস্যুতে ভারতকে নাজেহাল করতে উঠেপড়ে লেগেছে চিন। তাতে লাগাম টানতেই এবার দেশের নীতি কৌশলে জানিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। (চিত্র প্রতীকী)

(ভারতের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে চিনা পরমাণু সাবমেরিন)

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ