সুব্রত বিশ্বাস: করোনা মহামারির আবহে খরচে রাশ টানতে তৎপর হয়েছে ভারতীয় রেল। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে কর্মীসংখ্যা কিছুটা কমানোর দিকে অগ্রসর হয়েছে সংস্থাটি। আর তা করতে গিয়েই ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়েছে। প্রকাশ্যে এসেছে, অবসরের পর পুনর্নিয়োগ বা কর্মীদের ‘রি-এনগেজমেন্ট’ নিয়ে দুর্নীতি। এর ফলে উঠেছে সিবিআই তদন্তের দাবি।
অভিযোগ, সাদার্ন রেল ও ইস্ট-সেন্ট্রাল রেল প্রচুর অবসর প্রাপ্ত জুনিয়র স্কেল অফিসারদের অনেক বেশি মাইনে দিয়ে ( ২.৫৭ ট্রিটমেন্ট ফ্যাক্টর) ফের কাজে বহাল করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ইচ্ছে মতো নিয়োগের পাশাপাশি, খুশি মতো পোস্টিং দেওয়া হয়েছে। অফিসার নিয়োগের পরীক্ষা পদ্ধতি ত্রিশ শতাংশ এলডিসিই ও সত্তর শতাংশ এলজিএস পরীক্ষা না নিয়ে এই ধরণের নিয়োগকে আইনবহির্ভূত বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। উঠেছে সিবিআই ও ভিজিলান্স তদন্তের দাবিও। চরম আর্থিক সংকটের সময় রেলের এহেন অর্থ ব্যয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। এর মধ্যে এইভাবে রি-এনগেজমেন্ট করা গেজেটেড ও নন-গেজেটেড কর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল দক্ষিণ-পূর্ব রেল। ওই রেলের সদর দপ্তরে কর্মরত ৯১ জন নন-গেজেটেড ও দুজন গেজেটেড কর্মীকে ছাঁটাই করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুই গেজেটেড কর্মী অপারেশন বিভাগের।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলে পুনর্নিয়োগ প্রাপ্ত এই কর্মীদের ছাঁটাই করলেও অন্য রেল এখনও এই ধরনের ছাঁটাই শুরু করেনি। পূর্ব রেলে এধরনের প্রায় দেড় হাজার নন-গেজেটেড কর্মী ও কিছু সংখ্যক গেজেটেড কর্মী রয়েছে। এই ধরনের কর্মীদের পুনর্বহালের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে কর্মী সংগঠন। মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, “যখন দেশে শিক্ষিত বেকারদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, তখন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের ফের নিয়োগ দেওয়া উচিত নয়। আমরা বরাবর এ ধরনের নিয়োগের বিরোধী। আজও এর বিরোধিতা করছি। অবসর নেওয়া কর্মীরা পঞ্চাশ শতাংশ পেনশন পান। এই নিয়োগে অবসরের সময় যা বেতন পেতেন তার অর্ধেক। অর্থাৎ পেনশন ও পুনর্নিয়োগ-এর বেতন মিলিয়ে মাইনের পুরো টাকাটাই পান এই কর্মীরা। অথচ দেশে বেকারদের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে।” এই ছাঁটাই পর্বকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রেল কর্মীরাই। লকডাউনের ফেরে খরচ কমানোর উদ্দেশ্যে রেল যে সমস্ত পরিকল্পনা নিয়েছে কর্মী ছাঁটাই তার মধ্যে একটি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.