Advertisement
Advertisement

Breaking News

কাশ্মীর

একটানা লকডাউনে নেই হাহাকার, বরং বিন্দাস কারফিউতে অভ্যস্ত কাশ্মীরবাসী

প্রায় সারা বছরই খাদ্যসামগ্রী মজুত করে রাখেন স্থানীয়রা।

Jammu Kashmir's people habituated in lockdown period

ডাল লেক (ফাইল ফটো)

Published by: Sayani Sen
  • Posted:April 18, 2020 11:10 am
  • Updated:April 18, 2020 11:10 am

সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: টানা লকডাউন। কোথাও একদানা শস্যের জন‌্য হা-হুতাশ করছেন কোনও পরিযায়ী শ্রমিক। কোথাও আবার কোলের বাচ্চার জন‌্য এক ফোঁটা দুধ জোগাড় করতে চোখের জল এক করছেন কোনও মা। দেশজুড়ে এত কষ্ট। এত কান্না। দু’মুঠো ভাতের জন‌্য এত হাহাকার। যতটা ভয় করোনা গ্রাসের, তার থেকে অনেক বেশি চিন্তা কীভাবে মিটবে খিদের জ্বালা। গোটা দেশের পেটে যখন ভয়াবহ দাবানল, ভূস্বর্গে তখন বসন্ত।

“খিদের চিন্তা? ধুস্! সে আবার কী? আমাদের ঘরে সবসময় দু’-তিন মাসের রেশন জমা থাকে।” বলছিলেন ট্রাভেলস ব‌্যবসায়ী শাবির আহমেদ। কিন্তু কেন? লাদাখ অঞ্চলের মতো শ্রীনগরে তো এত তুষারপাত হয় না যে, পথঘাট বন্ধ থাকে। তবে? বছর ত্রিশের স্থানীয় সাংবাদিক মাসুদ আহমেদ ওয়াফাই বলছিলেন, “২০১৬ সালের কথা ভুলে গেলেন জনাব? টানা দু’মাস বন্ধ ছিল আমাদের জন্নত। তার আগে ’৯৩-এ হজরতবাল কাণ্ড, ২০০৮ থেকে ২০১০-এ মাঝেমধ্যেই বিক্ষিপ্তভাবে কারফিউ হত কাশ্মীরে। সেই থেকেই আমরা আর কোনও রিস্ক নিই না। ঘরে ঘরে চাল, ডাল, আটা, ময়দা, মশলা, বিভিন্ন শুকনো খাবার এসব তুলে রাখা থাকে।”

Advertisement

Kashmir Snowfall

Advertisement

[আরও পড়ুন: চিকিৎসা পরিষেবা সচল রাখতে নয়া উদ্যোগ, ইন্দোরে চালু ওলা অ্যাম্বুল্যান্স]

কিন্তু কেন কাশ্মীরিরা এভাবে খাবার জমিয়ে রাখেন? শুধুই কি কারফিউ কালো দিনগুলোর ভয়ে? ডাল লেকের শিকারা ইউনিয়নের সেক্রেটারি বছর পঞ্চান্নর বশির আহমেদ শোনালেন ‘পুরানো সেই দিনের কথা’। মোবাইলের তরঙ্গে চেপে যেন ফিরে গেলেন নিজের ছোটবেলার দিনগুলোয়। “ভাইজান, বললে বিশ্বাস করবে, তখন জম্মুতেও বরফ পড়ত। এখন যেমন গুলমার্গে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে দশ-পনেরো ফুট বরফের চাঁই জমে থাকে, ঠিক সেই রকমই শ্রীনগরেও কুড়ি-ত্রিশ বছর আগে বরফ জমা থাকত। তখন তো পরিকাঠামো এখনকার মতো ছিল না। তাই আমাদের ঘরেও দু’-তিন মাসের মাল মজুত থাকত। সেই অভ‌্যাসটাই থেকে গিয়েছে।” আরও এক অভ‌্যাসের কথা শোনালেন লালচকের কাছে শাহদার ইন হোটেলের কেয়ারটেকার ফিরোজ আসলাম। বললেন, “বেগুন, টম্যাটো, কুমড়ো, রাঙাআলুর মতো আরও কিছু সবজি আমরা নুন মাখিয়ে রোদে শুকিয়ে রাখি। যাতে কোনও বিপদের সময়ে ডাল-ভাত বা রুটির সঙ্গে তরকারি বানিয়ে খেতে পারি।”
Jawan
পুরনো এই অভ‌্যাসের জেরেই লকডাউনে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার নিয়ে দেশের অন‌্য অংশের মতো চিন্তা নেই কাশ্মীরে। একই অবস্থা লাদাখেও। খাকশালের হেসচুক গেস্ট হাউসের মালকিন পাম ইয়ং বলছিলেন, “তিন-চার মাস তো আমরা বহির্বিশ্বের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন থাকি। তাই সব ঘরেই শস্য হোক বা আনাজ মজুত থাকে। লকডাউনে আমাদের তাই কোনও সমস‌্যাই হয়নি।”
কোথাও প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে বাঁচার অভ‌্যাস। কোথাও আবার অশান্তি থেকে রেহাই পাওয়ার চিন্তা। এইসব কারণে লকডাউনের হাত থেকে স্বস্তি পেয়েছে কাশ্মীর, লাদাখ। নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকেই তাঁরা গোটা দেশকে দিয়ে রাখছে টিপস। এবার আপনারাও তৈরি থাকুন। আবার কবে কী হয় কে জানে? তৈরি থাকতে সমস‌্যা কোথায়?

[আরও পড়ুন: বাড়ি ফেরার দাবি জানিয়ে পাঞ্জাবে খাদ্য অনশনে শামিল কাশ্মীরের পরিযায়ী শ্রমিকেরা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ