সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাড়িতে পিতা-মাতা ও স্ত্রী রয়েছেন। নিজেও একজন সফল শিল্পপতি। কিন্তু প্রেমিকাকে খুশি করতে যাওয়াটাই কাল হল। জেট এয়ারওয়েজে কর্মরতা ওই মহিলা কিছুতেই চাকরি ছাড়তে না চাওয়ায় তাঁর জন্য আস্ত একটি বিমান সংস্থা খোলার কথাও ভেবেছিল ধৃত কোটিপতি বিরজু সাল্লা। নামও ঠিক হয়ে গিয়েছিল, রয়্যাল এয়ারলাইন্স। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই বিমান হাইজ্যাকের ভুয়ো চিঠি লিখে নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে ধরা পড়ে যায় কোটিপতি গহনা ব্যবসায়ী বিরজু। দোষী সাব্যস্ত হলে হতে পারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
A man Salla Birju has confessed that he had kept the ‘threatening note’ to destabilise operations in the Jet Airways flight.
— ANI (@ANI) October 30, 2017
[হাইজ্যাকের ভুয়ো চিঠি, জরুরি অবতরণ জেট এয়ারওয়েজ বিমানের]
ধৃতকে জেরা চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ। সম্প্রতি কোনও মামলায় এতটা চমকে ওঠেননি দুঁদে পুলিশকর্তারা। হতবাক জয়েন্ট কমিশনার অফ পুলিশ (ক্রাইম) জে কে ভাটও। স্রেফ প্রেমিকাকে চাকরি করতে দেবেন না বলে মাঝআকাশে বিমান ছিনতাইয়ের নাটক করে অভিযুক্ত, জানিয়েছে পুলিশ। বিমানে নাকি ১২ জন জঙ্গি রয়েছে, ফাঁদে এমন গল্পও। যদিও জরুরি অবতরণের পর বিমানে কিছুই মেলেনি। সম্প্রতি ১৯৮২-র বিমান ছিনতাই বিরোধী আইন আরও কড়া হয়েছে। নয়া আইনে এই প্রথম কাউকে গ্রেপ্তার করা হল। গত সোমবার ভোররাতে মুম্বই থেকে দিল্লিগামী ৯ডব্লিউ৩৩৯ জেট এয়ারওয়েজের বিমানের শৌচাগারে উর্দুতে একটি চিঠি লিখে আসে অভিযুক্ত। ওই চিঠিতে লেখা ছিল, বিমান ঘুরিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে না নিয়ে গেলে মাঝ আকাশেই উড়িয়ে দেওয়া হবে। হুমকি চিঠি পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিমানটি জরুরি অবতরণ করে আমেদাবাদে। ধরা পড়ে বিরজুর কীর্তি। সে প্রায়ই জেট এয়ারওয়েজের বিমানে চড়ে যাতায়াত করত। এমনকী বিমান সংস্থার সিআইপি বা ‘কমার্শিয়ালি ইমপরট্যান্ট প্যাসেঞ্জার’ ছিল সে।
[পুরোহিতের প্রশিক্ষণ নিতে হবে শিক্ষকদের, নইলে কড়া সাজার হুমকি]
বিরজু চাইত, তার প্রেমিকা জেটের চাকরি ছেড়ে তার সঙ্গেই বেশিরভাগ সময় কাটাক। প্রেমিকা সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাঁর জন্য আস্ত একটি বিমান সংস্থা খুলে ফেলতে চেয়েছিল বিরজু। মুম্বইয়ে কর্মরত তারই এক বন্ধু বিপিন প্যাটেলের কাছ থেকে এই আইডিয়া পায় সে। দুবাই কেন্দ্রীক একটি সংস্থার একাধিক চার্টার্ড বিমানের খরচপাতিও জেনে নেয় সে। বিরজুর ইচ্ছা ছিল, তার এই বিমান সংস্থার ব্যবসা দেখুক তার প্রেমিকা। কিন্তু প্রেমিকা জেট এয়ারওয়েজ ছাড়তে নারাজ। তাই ইচ্ছা করে জেটের সুনাম নষ্ট করতে বিমানের শৌচাগারে হাইজ্যাকের চিঠি রেখে আসে বিরজু। ইচ্ছা ছিল, এই ঘটনায় আতঙ্কে প্রেমিকা জেটের চাকরি ছেড়ে দিলে তাঁকে বিরজু নয়া এয়ারলাইন্সের মালকিন করে দেবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আপাতত জেলের চার দেওয়ালের মধ্যে কয়েদ হয়ে রইল। নয়া চিন্তায় বিরোধী আইন বেশ কড়া। এই আইনে বিরজুকে বাকি জীবনটা জেলেই কাটাতে হতে পারে।