Advertisement
Advertisement
সেনা

‘ফের দুঃসাহস দেখালে পাকিস্তানের ভূগোল বদলে দেব’, হুঁশিয়ারি কারগিল বিজয়ীদের

ইসলামাবাদকে কড়া বার্তা সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াতের৷

Kargil Vijay Diwas: Indian Army slams Pakistan Army
Published by: Tanujit Das
  • Posted:July 26, 2019 6:59 pm
  • Updated:July 26, 2019 7:00 pm

সোমনাথ রায়, দ্রাস: তাঁদের দেখলে কে বলবে দু’দশকের লম্বা সময় কাটিয়ে এসেছেন! অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল বেদপ্রকাশ মালিক হোন কিংবা টলোলিং জয় করতে গিয়ে তিনটি গুলি শরীরে নেওয়া রণবীর সাক্সেনা। অথবা বোমার আঘাতে হাঁটুর নিচ থেকে দু’টি পা এবং কনুই থেকে ডানহাত খুইয়ে ফেলা নায়েক দীপ চাঁদ। বিজয় দিবসের কুড়িতম বর্ষপূর্তির ঠিক আগের দিন, প্রত্যেকেই পাকিস্তানকে দিয়ে রাখলেন প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি। জানালেন, ভবিষ্যতে যদি পাকিস্তান কারগিলের মতো কোনও অসদুপায় অবলম্বন করে, তাহলে এবার আর শুধু মাতৃভূমি রক্ষা করার লড়াই নয়, আধুনিক রণসজ্জায় সজ্জিত ভারত একেবারে গুঁড়িয়ে দেবে পাকিস্তানকে। বিশ্ব মানচিত্র থেকে মুছে দেওয়া হবে তাদের চিহ্ন।

[ আরও পড়ুন: আরও বড় দায়িত্ব, সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হলেন অধীর ]

Advertisement

বৃহস্পতিবার লামোচান ভিউ পয়েন্টে একত্রিত হয়েছিলেন ভারতীয় সেনার সে যুগ ও এ যুগ। সেখানেই প্রতিবেশীর জন্য হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতীয় সেনা আধিকারিকরা। দ্রাস সেক্টরের লামোচান ভিউ পয়েন্ট থেকে স্পষ্ট দেখা যায় বাত্রা পয়েন্ট, টাইগার হিল ও টলোলিং টপ। কুড়ি বছর আগে কোন শৃঙ্গের কোন ঘাঁটি কীভাবে পাকিস্তানের কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করেছিলেন ভারতীয় বীর জওয়ানরা, ‘বীর নারী’-দের উপস্থিতিতে সেই বর্ণনা দেওয়া হয় এদিন। এরপর কারগিল যুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন বীর জওয়ানরা। শহিদ পরিবারের পক্ষ থেকেও বক্তব্য রাখেন কয়েকজন। দিনের এই পর্বেই পাকিস্তানের উদ্দেশে প্রথম কড়া বার্তা দেন তৎকালীন সেনাপ্রধান মালিক। বলেন, ‘‘তিনটি বড় যুদ্ধে শোচনীয় ফলের পরও শিক্ষা হয়নি ওদের। মাঝে মধ্যেই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন, জঙ্গি কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। সে বারও মুজাহিদিনদের আড়ালে এসেছিল ওরা। একটা জিনিস ভুলে যায় যে, মাঝের কুড়ি বছরে ভারতীয় সেনা আরও শক্তিশালী হয়েছে। আর যদি এই ভুল ওরা করে, তাহলে কারগিলের থেকেও ভয়াবহ ফল হবে ওদের।” এদিকে কারগিল বিজয় দিবস উপলক্ষে দ্রাস থেকে এদিন একটি বড় বাইক র‌্যালির সূচনা করে জম্মু—কাশ্মীর রাইফেলস। এটি ১৮৫০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করবে ২১ দিনে। র‌্যালিতে থাকবেন দশ জন সেনাকর্মী।

Advertisement

অতীত দিনের নায়কদের অনুষ্ঠানের মাঝেই উপস্থিত হন সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। ভারতীয় সেনার দুই প্রজন্মের সাক্ষাৎ ছিল দেখার মতো। সেখানে ছিল না ‘প্রোটোকলের’ মতো কোনও ভারী শব্দ। একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে বিজয় দিবস অভিনন্দন জানানোর পালা চলল। তার মাঝেই সেনাপ্রধান ঘি ঢাললেন একটু আগে ভি পি মালিকের আগুন জ্বালানো বক্তব্যে। পাকিস্তানকে হয়তো এতটাই ঘৃণা করেন যে, নিজের বক্তব্যে একবারও তাদের নামটাই নিলেন না। বললেন, “মানুষ অতীত থেকেই শিক্ষা নেয়। কিন্তু ওদের মধ্যে তার হেলদোল দেখছি না। মাঝেমধ্যেই বিভিন্নভাবে ওরা শান্তিপ্রক্রিয়া ভঙ্গ করছে। আমরা শুধু ওদের পাল্টা জবাব দিয়ে ফেরত পাঠাচ্ছি। অনেক কষ্ট করে ধৈর্য্য ধরে আছি আমরা। তবে আজ ওদের সতর্ক করে দিতে চাই। ভুল করেও যেন কারগিলের মতো ঘটনার কথা কল্পনা না করে।”

[ আরও পড়ুন: ‘গরু অক্সিজেন দেয়’, বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী

বুধবারই পুলওয়ামা নাশকতায় তাঁদের কোনও ভূমিকা না থাকার দাবি করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। প্রসঙ্গ ওঠায় তাচ্ছিল্যের হাসি দেখা গেল বিপিন রাওয়াতের মুখে। বললেন, “ওদের বক্তব্যের কোনও গুরুত্ব নেই। সত্যিটা সবাই জানে। আমরা যাবতীয় প্রমাণ দিয়ে দিয়েছি। শুধু একটাই কথা বলব, ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেওয়া ওরা বন্ধ করুক।” পাহাড়ের মগডালে এক সময় এত ঝোড়ো হাওয়া শুরু হল, দাঁড়িয়ে থাকাই মুশকিল হচ্ছিল। দেখতে পেয়ে হেসে ফেললেন রণবীর সাক্সেনা। তিনবারের চেষ্টায় যাঁর নেতৃত্বে জয় করা গিয়েছিল টলোলিং টপ। বললেন, “ভাবুন তাহলে আমরা কীভাবে নিচ থেকে উপরে উঠেছি। পাকিস্তানের মনে রাখা উচিত, এভাবেই ভারতীয় সেনা যে কোনও পরিস্থিতিতে মাথা উঁচু করে উপরেই ওঠে। আশা করব, সেবারের মতো ভুল ওরা আর করবে না। এবার কিন্তু বিশ্ব মানচিত্র থেকে ওদের দেশটাকেই নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ