সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত মাসেই ছিল ছেলের জন্মদিন। সেটা পালন করেই পুনরায় কাজে যোগ দিয়েছিলেন ল্যান্স নায়েক মোহিউদ্দিন রাঠের। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার জম্মু-কাশ্মীরের সোপিয়ান জেলায় জঙ্গিদের অতর্কিত হামলায় প্রাণ হারান তিনি। মোহিউদ্দিনের মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে তাঁর গোটা পরিবার। শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা গ্রামে। শ্রীনগরে ১৫ কর্পসের হেডকোয়ার্টারে সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত মোহিউদ্দিনকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। এরপরই শুক্রবার ৩৫ বছর বয়সের ওই সেনা জওয়ানের মৃতদেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় সেনার পক্ষ থেকে। দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার যে পুঞ্চপোরা গ্রামের বাসিন্দা মোহিউদ্দিন। এদিন সেখানেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। মোহিউদ্দিনকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে স্থানীয় মসজিদে গ্রামের প্রচুর মানুষ উপস্থিত হন।
কাশ্মীরের কুঙ্গনো গ্রামে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ফিরছিলেন মোহিউদ্দিন ও অন্যান্য সেনা জওয়ানরা। কিন্তু সোপিয়ান জেলায় তাঁদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। ঘটনাস্থলেই মারা যান মোহিউদ্দিন এবং আরও দুই জওয়ান। এছাড়া আহত হন আরও দু’জন।
এদিন শুধু গ্রামের লোকেরাই নয়, মোহিউদ্দিনের নিমাজ-ই-জানাজা বা শেষ প্রার্থনার জন্য আশপাশের গ্রাম থেকেও বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। তাঁর বন্ধু মনজুর আহমেদ রাঠের বলেন, ‘মোহিউদ্দিন খুবই ভাল মনের মানুষ ছিল। যখনই কারোর প্রয়োজন হত সে এগিয়ে আসত। ওর পরিবারে বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী এবং দু’বছরের ছেলে ছাড়াও রয়েছে এক বোন। আগামী মাসেই তাঁর বিয়ে ঠিক করা ছিল।’ প্রতিবেশীরাও জানান, মোহিউদ্দিন মা-বাবার জন্য ওষুধ পাঠাতে কখনও ভুলত না।
এদিন অন্যান্য গ্রাম থেকে অনেক মহিলারাও আসেন। মোহিউদ্দিনের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তাঁর মা এবং স্ত্রী ২৬ বছর বয়সি শাহজাদা আখতার। দু’জনকেই সান্ত্বনা দিতে থাকেন উপস্থিত মহিলারা। গত বছর জুলাই মাসে হিজবুল জঙ্গি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকেই উত্তপ্ত কাশ্মীর। দেখা যাচ্ছিল ভারতীয় সেনার সঙ্গে বারবার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছিলেন সেখানকার সাধারণ মানুষ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনার পর ভারতীয় সেনার সঙ্গে একযোগে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইতে এগিয়ে আসবেন জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.