সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি হিসেবে অভিষেক লগ্নেই বিতর্কে জড়িয়ে গেলেন রামনাথ কোবিন্দ। একে তো তিনি শপথ নেওয়া মাত্র সংসদে উঠেছিল জয় শ্রীরাম ধ্বনি। যা নিয়ে সরব বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, কোবিন্দের জয় যে সংঘের জয় তা নিয়ে আর কোনও দ্বিমত থাকল না। এবার সংসদ চত্বরে আম্বেদকরের মূর্তিতে মালা না দেওয়া নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়লেন দেশের চতুর্দশতম রাষ্ট্রপতি।
[ কোবিন্দ শপথ নিতেই সংসদে উঠল ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ]
রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে যখন তাঁর নাম ঘোষণা করেছিল এনডিও, তখন অনেকেই চমকে গিয়েছিলেন। অনেক হেভিওয়েটের কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু এনডিএ সেনাপতি অমিত শাহর সুচতুর রাজনৈতিক কৌশল বেছে নিয়েছিল তাঁকেই। কোবিন্দের নির্বাচনে যে আসলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপির দলিত তাস খেলা, এ বিষয়ে মোটামুটি একমত ছিলেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এরপর রাইসিনা হিলসের পালাবদল। প্রণব মুখোপাধ্যায় মঙ্গলবারই তাঁর দায়িত্বভার তুলে দিয়েছেন কোবিন্দের হাতে। কিন্তু আসনে বসামাত্র বিতর্কে জড়ালেন তিনি। দলিত প্রশ্নেই এবার তাঁকে বিঁধলেন মায়াবতী। তীব্র কটাক্ষ করে বিএসপি সুপ্রিমো জানালেন, “আম্বেদকরের জন্যই আজ কোবিন্দ দেশের শীর্ষ আসনে। অথচ রাষ্ট্রপতি হয়ে সেই বাবাসাহেবকেই ভুলে গেলেন কোবিন্দ। কেন মালা-ফুল দিলেন না তাঁর মূর্তিতে? এই কাজ করেই উনি বুঝিয়ে দিলেন বিজেপি আম্বেদকর সম্পর্কে যেরকম বিরূপ মনোভাব পোষণ করে, কোবিন্দও তার ব্যতিক্রম নন।” ক্ষুব্ধ নেত্রী জানান, কোবিন্দের থেকে তিনি অন্তত এটা আশা করেননি। আর কেউ না বুঝুক দলিত সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে তিনি তো অন্তত বুঝবেন যে কী সংগ্রাম করতে হয়েছিল আম্বেদকরকে। কতখানি ত্যাগস্বীকার করতে হয়েছিল বাবাসাহেবকে, তা কোবিন্দের অজানা নয় উল্লেখ করে মায়াবতীর খোঁটা, আসলে রাজনৈতিক জীবনে সংঘ পরিবারের জাতি বিদ্বেষী আদর্শেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন কোবিন্দ।
[ পাঠ্যবই থেকে কবিগুরুকে ছাঁটার কথা ওঠে কী করে, সওয়াল মমতার ]
এদিকে কোবিন্দকে একহাত নিতে ছাড়েনি কংগ্রেসও। মহাত্মা গান্ধী ও দীন দয়াল উপাধ্যায়কে এক আসনে বসানোয় ক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ। তাঁর মতে, কোনও একটা দলের নেতার সঙ্গে মহাত্মার তুলনা হতে পারে না। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি তো বটেই গোটা জাতির পক্ষেই এ ঘটনা অপমানজনক। এমনকী দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহওরলাল নেহরুর নামও মুখে আনেননি কোবিন্দ। তা নিয়েও সমালোচনায় সরব কংগ্রেস। রাষ্ট্রপতি হিসেবে এনডিএ-র রবার স্ট্যাম্প হয়ে উঠবেন, না স্বতন্ত্র চিন্তাভাবনার পরিচয় দেবেন কোবিন্দ, সে তো অনেক পরের কথা। আপাতত অভিষেকেই যে তাঁকে বিতর্ক আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।