সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুর্গম পার্বত্য এলাকায় থাকা জন্মভিটে ছাড়তে চাননি। তাই বলে কি ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা শেখার সুযোগ পাবে না। নিশ্চই পাবে। পড়াশোনার জন্য জেলা শহরে যাওয়াটা জরুরি। তাই পাহাড়ি এলাকার সঙ্গে জেলা শহরকে জোড়ার জন্য নিজের হাতে রাস্তা তৈরি করে ফেললেন জলন্ধর নায়েক। ছেলে মেয়েরা যাতে সেই পথ পেরিয়ে শহরের স্কুলে পড়তে যেতে পারে। নিজে একদিন এই দুর্গমতার কারণেই পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। একই অবস্থা ছেলেমেয়েদের হোক চান না পাহাড়ি মানুষ জলন্ধর। সেই জন্য পাহাড়ি গ্রাম গুমসাহি থেকে কন্ধমাল জেলার মফস্বল শহর ফুলবনি পর্যন্ত নিজের গরজে রাস্তা তৈরি করছেন।
একাহাতে ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা তৈরির জন্য কোনওরকম সহকারী নেননি তিনি। পেশায় সবজি বিক্রেতা জলন্ধর সকাল সকাল রাস্তা তৈরির কাজে লেগে পড়তেন। নিজের উপার্জনের কাজের ফাঁকে দৈনন্দিন আটঘণ্টা রাস্তা তৈরির জন্য পরিশ্রম করতেন তিনি। এই বিধিনিয়মে কাজ চালিয়ে গেছেন টানা দু’বছর।তবে নিজে একা থাকলে এতসব করার কথা ভাবতেন না। ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই দুর্গম পার্বত্য এলাকাকে সুগম পথে পরিবর্তন করেছেন।
এই প্রসঙ্গে স্থানীয় বিডিও এস কে জেনা জানিয়েছেন, তিনি জলন্ধরের জন্য যাবতীয় সুয়োগ সুবিধা দিতে তৈরি। তিনি প্রায় একাকি পরিবার নিয়ে ওই গ্রামে বসবাস করেন। এর আগে বেশ কয়েকবার তাঁকে জেলা শহরে এসে বসবাসের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাখান করেছেন ওই পাহাড়ি মানুষ। এই কাজের জন্য সবসময় তিনি সরকারি সমর্থন পাবেন। তবে তাঁকে সম্মানিত করা হবে কি না তানিয়ে এখনও কিছু চিন্তাভাবনা করা হয়নি।
বলাবাহুল্য, গুমসাহি গ্রামে একমাত্র জলন্ধর নায়েক তাঁর পরিবার নিয়ে থাকেন। বাকিরা এই দুর্গম এলাকা এড়াতেই গ্রাম ছেড়েছেন। অন্য বাসিন্দাদের দলে শামিল না হয়ে নিজে দুর্গমতা জয় করেছেন জলন্ধর। সমগ্র ওড়িশাবাসীর কাছে জলন্ধর এখন অনুপ্রেরণা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.