সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় চোখের সামনে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে মাথার ছাদ৷ ধ্বংসস্তূপের নিচে ছটফট করছে প্রিয়জন৷ মাথার ঠিক রাখতে পারেননি মুম্বইয়ের ডোংরির বাসিন্দা দানিশ৷ হাত লাগিয়েছিলেন উদ্ধারকাজে৷ ভেবেছিলেন তাতেই হয়তো বেঁচে যাবেন পরিজনেরা৷ রক্তমাখা অবস্থায় পরিজনদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু ভাবনার সঙ্গে বাস্তব মিলল না৷ পরিবর্তে চোখের সামনে মৃত্যু হল পরিজনদের৷ তবে প্রতিবেশীদের বাঁচিয়ে ‘সুপার হিরো’ যুবক৷
মুম্বইয়ের ডোংরির বহুতলেই ছোট থেকে বেড়ে ওঠা দানিশের৷ মঙ্গলবার রক্ত পরীক্ষা করার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি৷ ফেরার পথে বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলেন৷ কিন্তু পা রাখামাত্রই কানে আসে বিপদের খবর৷ শোনেন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে ওই বহুতল৷ আর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেননি দানিশ৷ দৌড়ে চলে যান বহুতলের সামনে৷ ততক্ষণে অবশ্য কংক্রিটের স্তূপে চাপা পড়ে গিয়েছেন বহু মানুষ৷ যাদের মধ্যেই ছিলেন দানিশের পরিজনেরাও৷ হতচকিত হয়ে পড়েন ওই যুবক৷ বাড়ির লোকগুলি বেঁচে আছে তো, এই প্রশ্নই যেন মাথাচাড়া দেয়৷
ইতিমধ্যে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কাছে ভয়াবহ দুর্ঘটনার খবর পৌঁছে গিয়েছে৷ তবে উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজে হাত লাগান উদ্বিগ্ন দানিশ৷ বেশ কয়েকজনকে উদ্ধারও করেন তিনি৷ নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে৷ দানিশের চেষ্টায় প্রাণে বাঁচেন অনেকেই৷ বিপদ ছুঁতে পারেনি তাঁকেও৷ কিন্তু বছর তেইশের যুবকের একটাই আফশোস, চোখের সামনেই অসহনীয় যন্ত্রণায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর পরিবারের দুই সদস্যের৷
বুধবার সকাল পর্যন্ত ডোংরির বহুতল ভেঙে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের৷ নিহতদের পরিবার পিছু আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছে মুম্বই প্রশাসন৷ মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস নিহতদের পরিবারপিছু ৫ লক্ষ টাকা এবং আহতদের চিকিৎসা খাতে ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন৷ কী কারণে আদতে ওই বহুতলটি ভেঙে পড়ল, তা খতিয়ে দেখারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷ তবে স্বজন হারানোর যন্ত্রণায় ক্ষোভে ফুঁসছেন ডোংরির বাসিন্দারা৷ বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় প্রশাসনিক গাফিলতিকেই দায়ী করছেন তাঁরা৷ দানিশের মতো আরও অনেক যুবক এগিয়ে আসায় প্রাণহানির সংখ্যা কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছেন শোকগ্রস্ত স্বজনহারারা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.