সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভয়াবহ নির্ভয়া কাণ্ডের পঞ্চম বর্ষপূর্তি থেকে মাত্র চারদিন দূরে দাঁড়িয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ অভিযুক্তর আইনজীবীর। পুলিশ ও প্রশাসনের থেকে ঘুষ নিয়েছেন নির্ভয়ার মা-বাবা। তার জেরেই পুলিশের তৈরি করা গল্প অনুযায়ী সাক্ষ্য দিয়েছেন তাঁরা। এই অভিযোগের পরই কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি।
[ দেশের প্রতিটি টোল প্লাজায় স্যালুট জানাতে হবে জওয়ানদের, নির্দেশ কেন্দ্রর ]
দিল্লিতে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন নির্ভয়া। বছর পাঁচেক আগের সে ঘটনায় আজও শিউরে ওঠে দেশবাসী। ধর্ষণের পর নির্মম অত্যাচার করে হত্যা করা হয়েছিল ওই যুবতীকে। এই ঘটনার পরই দেশে ধর্ষণের সংজ্ঞাতেও বদল আনা হয়। রেয়ারেস্ট অফ দ্য রেয়ার হিসেবে এ ঘটনাকে চিহ্নিত করে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছিল আদালত। তারই পুনর্বিবেচনা সংক্রান্ত মামলায় আদালতে সওয়াল করছিলেন অভিযুক্ত মুকেশের আইনজীবী। তাঁর অভিযোগ, নির্ভয়া বিচারপ্রক্রিয়া কখনওই স্বচ্ছ নয়। কেননা পুলিশ ও প্রশাসন ঘুষ দিয়েছিল নির্ভয়ার মা ও বাবাকে। সেইমতো পুলিশের শেখানো বুলি আওড়েছেন তাঁরা। আইনজীবী এমএল শর্মার অভিযোগ, দ্বারকায় যে ফ্ল্যাটটি নির্ভয়ার পরিবারকে দেওয়া হয়েছে তা ঘুষই। এছাড়া ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হয়েছিল ২০ লক্ষ টাকা। সেও ঘুষেরই নামান্তর। তার জেরেই পুলিশের সাজানো গল্প আদালতে দাঁড়িয়ে বলেছেন নির্ভয়ার মা-বাবা। গত মে মাসে নির্ভয়া ধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্ত মুকেশকে ফাঁসির সাজা দিয়েছিল আদালত। তা পুনর্বিবেচনা করতে সুপ্রিম কোর্টে আরজি জানায় অভিযুক্ত। সেখানেই এই অভিযোগ আইনজীবী শর্মার।
[ আপনার আধার কি অন্য কেউ ব্যবহার করছে? ধরে ফেলুন নিজেই ]
এহেন মন্তব্য শুনেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র। আইনজীবীকে তিরস্কার করে তিনি জানান, এই ধরনের মন্তব্য তিনি করতে পারেন না। তাও সুপ্রিম কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার ক্ষেত্রে কখনওই এ ধরনের কথা কাম্য নয়। আইনজীবীর সওয়ালে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিচারপতি। পালটা ধমক দিয়ে নির্ভয়া কাণ্ডের ভয়াবহতার কথা তুলে ধরেন তিনি। আইনজীবীকে তিনি বলেন, “তাহলে প্রমাণ করুন আমাদের অ্যানিলিসিস ভুল হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড দেওয়া ভুল হয়েছে। ডিএনএ রিপোর্ট ইত্যাদি সব ভুল কথা বলছে।” তিনি সাফ জানান, “যদি কোনও ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড দিতে হয়, তবে এর থেকে জঘন্য ঘটনা আর কিছু হয় না। মানবিকতার সমস্ত সীমা এখানে লঙ্ঘিত হয়েছে।”
[ ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে লাগাতার যৌন হেনস্তা, গ্রেপ্তার প্রধানশিক্ষক ]
অন্যদিকে এরকম অভিযোগ পেয়ে প্রায় আকাশ থেকে পড়েছেন নির্ভয়ার বাবা। তাঁর প্রশ্ন, “কী করে একজন আইনজীবী এরকম অভিযোগ আনতে পারেন? উনি তো আমাদেরই অপমান করার চেষ্টা করছেন।”