সুব্রত বিশ্বাস: ট্রেনের সুরক্ষা যাঁদের হতে, আজ তাঁরাই অর্থাৎ গার্ডরা নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। আর এজন্য সম্পূর্ণ উদাসীন দক্ষিণ-পূর্ব রেল। এমনই অভিযোগ গার্ডদের। ওই রেলের আদ্রা ডিভিশনের আনারা গার্ড লবির ১২০ জন গুডস গার্ডকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করতে হচ্ছে ওয়াকিটকি ছাড়াই। সার্ভিস কন্ডাক্ট রুলে এই সরঞ্জাম গার্ডের কাছে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই ওয়াকিটকি চলন্ত ট্রেনে সর্বক্ষণ চালক ও গার্ডের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে। তবুও ১২০ জন মালগাড়ির গার্ডকে দীর্ঘ দিন ধরে চালকের সঙ্গে সম্পর্কহীন যাত্রার সঙ্গী করে রাখা হয়েছে। রেল মালগাড়ি থেকে গার্ড তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে আগেই। এভাবেই কি তবে বিদায়লগ্নের সূচনা? প্রশ্ন তুললেন গার্ডরাই।
[ উপত্যকায় গুলির লড়াইয়ে নিকেশ জঙ্গি, গ্রেনেড হামলায় শহিদ সেনা ]
মালগাড়ি আন কাপলড হয়ে পড়ে অনেক সময়। যা ‘ট্রেন পার্টিং’ বলে পরিচিত। এই অবস্থায় ইঞ্জিন এক অংশ নিয়ে দৌড় দিলেও পেছনের অংশ রোল ডাউন হয়ে গড়িয়ে যেতে পারে পিছনের দিকে। ফলে পিছনের অন্য গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটার আশঙ্কা থেকে যায়। ব্রেক বাইন্ডিং হলে লাইনচ্যুত হতে পারে মালগাড়ি। বহু সময় ওয়াগনের দরজা খুলে যায়। সেই দরজা ওভারহেডের মাস্টে ধাক্কা লেগে ভয়ানক বিপদ ঘটাতে পারে। এই ধরনের ঘটনা ঘটলে গার্ড ওয়াকিটকিতে খবর দিয়ে চালককে সতর্ক করেন ও ট্রেন দাঁড় করান। এড়ানো সম্ভব হয় বিপদ। সেই ওয়াকিটকিই নেই গার্ডদের কাছে। ফলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিপদ লক্ষ করা ছাড়া আর কিছু করার নেই।
[ বাল্ব চুরি করতে বিস্তর ব্যায়াম! হাতসাফাইয়ের কেরামতিতে তাক লাগালেন এই ব্যক্তি ]
কেন এই অব্যবস্থা? সে সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানায়নি দক্ষিণ-পূর্ব রেল। আদ্রার সিনিয়র ডিসিএম আদিত্য চৌধুরি জানান, পুরো বিষয়টি তাঁর অজানা। অপারেশন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গার্ডদের কথায়, কমন ইউনিফায়েড গ্রুপ (সিইউজি) সিম থাকলেও রেলের নিরাপত্তা বিভাগের সার্কুলার অনুযায়ী ট্রেন চালানোর সময় চালক এই সিইউজি সিম ব্যবহার করতে পারবেন না। ফলে চালকদের সঙ্গে গার্ডের যোগাযোগের সব রাস্তাই বন্ধ থাকছে। এমনকী পথে বিপদ বা আপৎকালীন হিসাবেও পরের স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না গার্ডরা। ফলে আনারা লবির ১২০ জন গার্ড এখন ঢাল ও তরোয়ালহীন ‘নিধিরাম সর্দার’।