সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বভূমির অর্থনীতি নিয়ে দফায় দফায় উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন আগেই। এবার দেশের ধুঁকতে থাকা অর্থনীতির হাল ফেরাতে নয়া দাওয়াই দিলেন সদ্য নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। রুগ্ণ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলিকে বিক্রি করে দেওয়ার পরামর্শ দিলেন তিনি। ব্যাংকে আর্থিক সংকট কাটাতে এভাবেই সমাধানের উপায় বের করে দিলেন তিনি। তাঁর পরামর্শ,অলাভজনক, রুগ্ণ ব্যাংকগুলি বিক্রি করে দেওয়া জরুরি। ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে চাঙ্গা করতে ওই অর্থ কাজে লাগানো যেতে পারে।
সম্প্রতিই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলির অবস্থা খারাপ হয়েছে, এ কথা মানতে রাজি নন অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, অনেক আগে থেকেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। রিজার্ভ ব্যাংকের ‘নজরদারি’ ঠিকমতো না হওয়ায় তা আরও গভীর হয়েছে। সম্প্রতি পাঞ্জাব মহারাষ্ট্র সমবায় ব্যাংক(পিএমসি) কেলেঙ্কারির ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরকম অনেক ব্যাংকের অবস্থাই আরও সংকটজনক। বর্তমান পরিস্থিতি হিমশৈলের চূড়ামাত্র। এই সমস্যা ভবিষ্যতে আরও অনেক গভীর ও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এমআইটি’র অধ্যাপক অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।
[আরও পড়ুন: ভারতে অর্ধেক হয়েছে দারিদ্রের হার, বিশ্ব ব্যাংকের রিপোর্টে আশার আলো]
তথ্যের অধিকার আইনে জানা গিয়েছে, দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক এসবিআই ৭৬,৬০০ কোটি টাকার অনাদায়ী ঋণ হিসাবের খাতা থেকে মুছে ফেলেছে। ওই তালিকায় মোট ২২০ জন ঋণখেলাপি রয়েছেন, যাঁদের মধ্যে অনেকেই ১০০ কোটি টাকা বা তার বেশি ঋণ নিয়েছিলেন। এপ্রসঙ্গে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত, আমানতকারী, গ্রাহকদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। বহু বছর ধরে ব্যাংকে নানা সমস্যা রয়েছে। তার ফলেই এখন ব্যাংকগুলি বিপদে পড়েছে। এতদিন রিজার্ভ ব্যাংকও ওই ব্যাংকগুলিতে সতর্ক করেনি। ব্যাংকগুলির হাল ফেরাতে অনেক অনেক টাকা লাগবে। সরকারের হাতে অত টাকা নেই। তাই রুগ্ণ ব্যাংকগুলিকে বেসরকারি ব্যাংক বা কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হাতে বিক্রি করে, বেসরকারীকরণ করে সেই অর্থে অন্যান্য ব্যাংকগুলিকে বাঁচানো প্রয়োজন। অবিলম্বে কোনও ব্যবস্থা না নিলে আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
[আরও পড়ুন: অযোধ্যার ৫০০ বছরের পুরনো বিবাদের ইতিবৃত্ত পড়ুন এক নজরে]
একইসঙ্গে অভিজিৎবাবুর দাওয়াই, রুগ্ণ ব্যাংকগুলির বেশ কয়েকটি শাখা আছে। সেখানে অনেক যোগ্য কর্মীও আছেন। সুতরাং ওই ব্যাংকগুলি বিক্রি করে দেওয়া কঠিন হবে না। গত তিন বছরে ব্যাংকগুলি মোট ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ মকুব
করে দিয়েছে। যাঁরা ঋণ নিয়ে শোধ করেননি, তাঁদের মধ্যে ৪১৬ জন ১০০ কোটি অথবা তার বেশি অঙ্কের ঋণ নিয়েছিলেন।