সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতে নিযুক্ত পাক রাষ্ট্রদূত আবদুল বসিতকে বুধবার সমন পাঠাল নয়াদিল্লি৷ মঙ্গলবার, করাচিতে একটি অনুষ্ঠানে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত গৌতম বামবাওয়ালের বক্তব্য পেশ করার কথা থাকলেও, শেষ মুহূর্তে সেই অনুষ্ঠান বাতিল করে পাক বণিকসভা৷ তাঁর উপস্থিতির মাত্র আধঘণ্টা আগে কেন অনুষ্ঠান বাতিল করা হল, জানতে চান ক্ষুব্ধ ভারতীয় দূত৷ কিন্তু উদ্যোক্তারা তাঁর প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি৷ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে আজ ভারতের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে সমন পাঠানো হল আবদুল বসিতকে, জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ৷
১৪ আগস্ট দিল্লিতে কাশ্মীর প্রসঙ্গে প্ররোচনামূলক মন্তব্য করেছিলেন বসিত৷ সব দেখেশুনেও চূড়ান্ত সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়ে চুপচাপ ছিল নয়াদিল্লি৷ মঙ্গলবার, করাচি চেম্বার অফ কমার্সের একটি অনুষ্ঠানে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু শেষ মুহূর্তে অনুষ্ঠান বাতিল বলে ঘোষণা করেন উদ্যোক্তারা৷ ভারতীয় রাষ্ট্রদূত তাঁর ভাষণে কাশ্মীর প্রসঙ্গে পাকিস্তানের সমালোচনা করতে পারেন, সম্ভবত এই আশঙ্কাতেই অনুষ্ঠান বাতিল করেন উদ্যোক্তারা৷ গত সোমবার সংবাদমাধ্যমের সামনে কাশ্মীর প্রসঙ্গে পাকিস্তানের নাক গলানোর তীব্র নিন্দা করেছিলেন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত৷ প্রায় দু’মাস কেটে গেলেও কাশ্মীর এখনও স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি৷ এটা জেনেও পাকিস্তানের সেনাপ্রধান থেকে শুরু করে শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা, বারবার কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের হস্তক্ষেপের দাবি তুলেছেন৷ তার মধ্যেই ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের জন্য নির্ধারিত অনুষ্ঠান বাতিল করায় নয়াদিল্লির ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল৷
ভারতের কাছে এই আচরণ যে গ্রহণযোগ্য নয় এবং যথেষ্ট অপমানজনক, তা বুঝিয়ে দিতেই এদিন বসিতকে সমন পাঠাল নয়াদিল্লি৷ কাশ্মীর অশান্ত থাকলে এবং দু’পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চলতে থাকলে মোদির পাকিস্তান সফর উচিত কি না, এই ইস্যুতে প্রশ্ন করা হলে বামবাওয়ালে বলেছিলেন, “কাচের ঘরে বসে ঢিল ছোড়া উচিত নয়৷ ভারত ও পাকিস্তান দু’দেশেরই নিজস্ব অনেক অভ্যন্তরীণ সমস্যা আছে৷ ভারত নিজেদের সমস্যা নিজেরা যেমন মেটানোর চেষ্টা করছে৷ পাকিস্তানও সেটাই করুক৷ ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিয়ে নাক গলানো বন্ধ করুক পাকিস্তান৷ কাশ্মীর ভারতের নিজস্ব অভ্যন্তরীণ সমস্যা৷” তিনি আরও বলেন, ভারত মোটেই বালুচিস্তান নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না৷ ১৫ আগস্ট লালকেল্লায় প্রধানমন্ত্রী শুধু বলেছিলেন যে, বালুচিস্তানের স্বাধীনতাকামী নেতারা তাঁকে চিঠি লিখে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার জন্য৷ শুধু চিঠি পাওয়ার কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ তার মানে এই নয়, তিনি বা ভারত সরকার বালুচিস্তান নিয়ে নাক গলাচ্ছে৷ যে পাকিস্তান কাশ্মীরের মানবাধিকার নিয়ে চিন্তিত তারা নিজেরাই যে কতবার মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে সেটাই বলতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.