Advertisement
Advertisement

Breaking News

Electoral Bond

নির্বাচনী বন্ডের খরচ তুলতে চড়চড়িয়ে ওষুধের দাম বাড়াচ্ছে সংস্থা! মাথায় হাত আমজনতার

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার ওষুধ টেলমা প্রত্যেক বাড়িতে কেউ না কেউ ঠিক খান। গ্লেনমার্কের জনপ্রিয় এই ওষুধটির দাম গত এক বছরে ১৮-২০ শতাংশ বেড়েছে। নির্বাচনী বন্ডে গ্লেনমার্ক দিয়েছে ৯.৭৫ কোটি টাকা। ব্লাড সুগার কন্ট্রোলে রাখতে গ্যালভাস খেতে হয় ডায়াবেটিসের রাজধানী ভারতের কোটি কোটি মানুষকে। নোভারটিস ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার তৈরি এই ওষুধের দাম সাম্প্রতিক সময় কত বেড়েছে, জানেন? ২০-২৫ শতাংশ।

Pharma sector allegedly raising the price of drugs to raise the cost of electoral bonds
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:March 20, 2024 9:17 am
  • Updated:March 20, 2024 10:28 am

পৌষালী কুণ্ডু: নির্বাচনী বন্ডে (Electoral Bond) ‘চাঁদা’ দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে ‘খুশি’ করতেই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব‌্যয় করেছে ফার্মা সংস্থাগুলি। আর তার জেরেই ওষুধ কিনতে গিয়ে পকেট শূন‌্য হচ্ছে সাধারণ মানুষের। খোঁজ নিয়ে দেখুন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার ওষুধ টেলমা আপনার বাড়িতে কেউ না কেউ ঠিক খান। গ্লেনমার্কের জনপ্রিয় এই ওষুধটির দাম গত এক বছরে ১৮-২০ শতাংশ বেড়েছে। নির্বাচনী বন্ডে গ্লেনমার্ক দিয়েছে ৯.৭৫ কোটি টাকা। ব্লাড সুগার কন্ট্রোলে রাখতে গ‌্যালভাস খেতে হয় ডায়াবেটিসের রাজধানী ভারতের কোটি কোটি মানুষকে। নোভারটিস ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার তৈরি এই ওষুধের দাম সাম্প্রতিক সময় কত বেড়েছে, জানেন? ২০-২৫ শতাংশ।

হায়দরাবাদের যশোদা সুপার-স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল গ্রুপ ছাড়া ৩৬টি ওষুধ কোম্পানি মিলে প্রায় ৯০৩ কোটি টাকার ইলেকটোরাল বন্ড কিনেছে। নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) দেওয়া এসবিআই-এর এই তথ‌্য সম্প্রতি প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে। ওষুধ কোম্পানির বিপণন কর্মীদের সংগঠন ডব্লিউবিএমএসআরইউ-এর নেতা দেবাশিস কুণ্ডু এ প্রসঙ্গে বললেন, “ওষুধ কোম্পানি তো আর নিজের ঘর থেকে নির্বাচনী বন্ডে টাকা দেবে না? ওষুধের দাম বাড়িয়েই সেই টাকা তুলবে। ৯০০ কোটি টাকা নির্বাচনী বন্ডে দিয়ে ফার্মা কোম্পানিগুলি ওষুধের দাম বাড়িয়েই ৯ হাজার কোটি টাকা তুলবে।” আগে যে ওষুধ ২.৫০ টাকায় পাওয়া যেত সেটার দাম বেড়ে এখন প্রায় ১০ টাকা হয়ে যাচ্ছে। কেন এমন হচ্ছে? দেবাশিসবাবুর কথায়, আগে একটি ওষুধ বা ট‌্যাবলেট প্রস্তুতের খরচের সঙ্গে ১৫০ শতাংশ যুক্ত করে দাম ঠিক করা হত। কিন্তু এখন দাম ঠিক করার আগে সংস্থাগুলি দেখে বাজারচলতি সেই সংক্রান্ত ওষুধের প্রথম পাঁচটি ব্র‌্যান্ডের ওষুধের কী দাম রয়েছে। তার পর সেই দামকে অ‌্যাভারেজ করে ঠিক করা হয় নির্ধারিত ওষুধটির দাম। স্বাভাবিকভাবেই এর জন‌্য মহার্ঘ‌্য হচ্ছে হাই প্রেশার, হাই সুগার, কিডনি-সহ সমস্ত অসুখের ওষুধই।

Advertisement

[আরও পড়ুন: গার্ডেনরিচ কাণ্ডে গ্রেপ্তার আরও ১, এবার পুলিশের জালে জমির মালিক]

আরও জানা যাচ্ছে, বেশ কিছু দিন আগে মাইক্রো ল‌্যাবের অফিসে হানা দেয় ইডি। গুণমান পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ সাত ফার্মা সংস্থার মোটা চাঁদা কি বিজেপিকে? একপ্রকার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চাপে ১৬ কোটি টাকা নির্বাচনী বন্ডে দেওয়া হয় সংস্থাটির তরফে। এর পরই নাকি বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের প্রায় ৪৫০ কোটি টাকার একটি বরাত পেয়ে গিয়েছে মাইক্রো। যদিও সাম্প্রতিককালে কেমোথেরাপির ওষুধের দাম বাড়েনি বলে দাবি মেডিক‌্যাল অঙ্কোলজিস্ট ডা. তন্ময় মণ্ডলের। ওষুধের দাম বাড়িয়ে অসুস্থের পরিবারকে কার্যত কপর্দকহীন করে দেওয়া নিয়ে ফার্মা কোম্পানি ও রাজনৈতিক দলগুলির উপর যেমন মধ‌্যবিত্তর ক্ষোভ বাড়ছে। তেমনই বিভিন্ন ওষুধের গুণগত মান পরীক্ষায় ব‌্যর্থ হওয়া সাতটি ফার্মা কোম্পানিও নির্বাচনী বন্ডে বিপুল টাকা ঢালার কথা প্রকাশ্যে আসায় উদ্বেগও বেড়েছে।

Advertisement

এর অর্থ ডিজিসিআই বা কেন্দ্রীয় সরকারকে ঘুষ দিয়ে গুণগত মানের পরীক্ষায় পাস করতে চাইবে হেটেরোল‌্যাবস অ‌্যান্ড হেটেরো হেলথকেয়ার (৩৯ কোটি), টরেন্ট ফার্মা (৭৭.৫ কোটি), জাইডাস হেলথকেয়ার (২৯ কোটি), গ্লেনমার্ক (৯.৭৫ কোটি), সিপলা (৩৯.২ কোটি), আইপিসিএ ল‌্যাবরেটোরিজ লিমিটেড (১৩.৫) কোটি, ইন্টাস ফার্মাসিউটিক‌্যালস (২০ কোটি)-এর মতো নামী সংস্থাগুলি। এছাড়াও বন্ড কেনার তালিকায় রয়েছে অরবিন্দ ফার্মা (৫১.১ কোটি), অজন্তা ফার্মা (৪ কোটি), অ্যালেম্বিক (১০.২ কোটি), ম্যানকাইন্ড (২৪ কোটি), প্যানাসিয়া বায়োটেক (১ কোটি), পিরামল ফার্মা (৩ কোটি), হেটেরো ফার্মা (৫ কোটি), মাইক্রো ল্যাব (১৬ কোটি), ভারত বায়োটেক (১০ কোটি)-সহ একাধিক নামী দেশীয় ওষুধ কোম্পানি। ইলেক্টোরাল বন্ড থেকে অর্থপ্রাপ্তির নিরিখে বিজেপি বাকিদের থেকে অনেকটা এগিয়ে থাকায় সহজেই অনুমেয় সংস্থাগুলি কেন্দ্রের শাসক দলকেই খুশি করেছে। ওষুধের বিপণন করার জন্য বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন অনৈতিক পদ্ধতি অনুসরণ করে। কিন্তু এই অনৈতিক বিপণন বন্ধ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের যে কোডটি চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সেই কোডে অনৈতিক বিপণন বন্ধ করার জন্য কোন শাস্তিমূলক বিধান নেই। অর্থাৎ চোরকে বলল চুরি করা পাপ। কিন্তু চুরি করলে তার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কিছু নেই। ফলে পরোক্ষভাবে অনৈতিক বিপননকে প্রশ্রয় দিয়ে ঔষধের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে কর্পোরেটের। বঞ্চিত সাধারণ মানুষ।

[আরও পড়ুন: একা বিজেপিই ৭,০০০ কোটি! সব বিরোধী মিলিয়ে ৬২০০ কোটি, প্রকাশ্যে নির্বাচনী বন্ডের আয়]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ