সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জনতা জনার্দন। জনতাই জননেতাকে ভোট দিয়ে মন্ত্রীর সিংহাসনে বসায়। যদি জননেতা জনগণের মান রাখতে না পারেন, তাহলে বোধ হয় কাকাতাড়ুয়া থুড়ি মোদি, অমিত শাহর পরিস্থিতি হয়। অবাক হচ্ছেন? দেশের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ঠাট্টা চলছে ভাবছেন? না না, এসব দুঃস্বপ্নেও মনে আনবেন না। কর্নাটকের চাষিরা তো তেমনটা ভাবছেন না। ভাবুন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে মাঠে গিয়েছেন। আর আপনাকে চমকে দিয়ে মাঠের মাঝখানে ভাষণের ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। চমকে উঠলেন তো? চমক ভাঙতে না ভাঙতেই হাত জোড় করে আপনার দিকে তাকিয়েই হাসছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। দিবাস্বপ্ন ভেবে আঁতকে ওঠার আগে ভাল করে চোখটা মুছে নিন। হ্যাঁ, সবজি খেতে প্রধানমন্ত্রীর কাটআউট। কর্নাটকের চিকমাগালুর জেলার মাঠেঘাটে এদৃশ্য এখন হামেশাই দেখা যাচ্ছে।
মাস দুয়েক আগেই কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। জিতে গিয়েও বিএস ইয়েদুরাপ্পার মুখ্যমন্ত্রীর সিংহাসন হাতছাড়া হয়েছে। তবুও চিকমাগালুর জেলার পাঁচটি বিধানসভা আসন জিতে নিয়েছে বিজেপি। কিন্তু রাজ্যে সরকার গড়তে পারেনি দল। তাই নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ ও বিএস ইয়েদুরাপ্পার কাটআউটগুলোকে কাকাতাড়ুয়ার কাজে ব্যবহার করছেন এলাকার চাষিরা। এবছর বৃষ্টি ভাল হওয়ায় মরশুমি সবজিতে ভরেছে কর্নাটকের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। সবজি ভাল হওয়ায় তা নষ্ট করতে পাখিদেরও উৎপাত বেড়েছে। পাখির অত্যাচার থেকে বাঁচতে একমাত্র ভরসা কাকাতাড়ুয়া। তবে তা তৈরি করতেও খরচ খুব একটা কম হয় না। এই দুর্মূল্যের বাজারে তাই একমাত্র ভরসা মোদি, অমিতশাহর কাটআউট। ভোটে জিততে মাস দুয়েক আগেই এই কাটআউটগুলি এনেছে বিজেপি। মূলত প্রচারের উদ্দেশ্যে কাটাউটের আগমন। এরপর নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ এসে প্রচার করে গিয়েছেন। ভোটও মিটেছে। তীরে এসে তরী ডুবেছে বিজেপির। সিংহাসন দখল করতে না পারলেও কাটআউটগুলি অবিকল রয়ে গিয়েছে। রবীন্দ্রনাথের ‘ওরা কাজ করে’কে ফের সত্যি করে দিয়ে সেই কাটআউটকেই কাজে লাগালেন কর্নাটকের চাষিরা। কাকতাড়ুয়ার খরচ বাঁচাতে সবজি খেতে বসল নরেন্দ্র মোদির কাটআউট। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলেও হেলদোল নেই চাষিদের। ভোট গিয়েছে তাই প্রচারের কাটআউট একপ্রকার বাতিল। সেই বাতিল জিনিস যদি কাকতাড়ুয়ার কাজ করে ক্ষতি কী!
বলাবাহুল্য, সব শুনেও চোখ বন্ধ করে রেখেছে বিজেপি নেতৃত্ব। দেশের প্রধানমন্ত্রী ও দলের সর্বভারতীয় সভাপতির কাটআউট কাকতাড়ুয়ার ভূমিকা পালন করছে, মানতেই নারাজ স্থানীয় বিজেপি নেতারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.