Advertisement
Advertisement

Breaking News

কানহাইয়া

গিরিরাজের ফ্লেক্সের পালটা কানহাইয়ার স্বর, নির্বাচনী উত্তাপে ফুটছে বেগুসরাই

বিরোধী স্বর কি তাহলে বেগুসরাই থেকেই জোরালো হচ্ছে?

Poll fever grips Begusarai as Kanhaiya Vs Giriraj battle nears
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:April 24, 2019 5:23 pm
  • Updated:April 24, 2019 5:23 pm

মলয় কুণ্ডু, বেগুসরাই: ভরদুপুর। ঝাঁ ঝাঁ রোদ্দুর। স্টেশনের চৌহদ্দিটা পার হলেই দু’ধার ধরে সারি সারি দোকান। তারই মধ্যে একটায় পিছনের দেওয়ালে ঠেস দিয়ে ঝিমোচ্ছিলেন দোকান মালিক। বাধ্য হয়ে তাঁর কাঁচা ভাতঘুম ভাঙিয়ে তুলতেই হল। সব শুনে দু’চোখ গোল্লা গোল্লা করে ফের জিজ্ঞাসা করলেন, “কলকাত্তা সে? কানহাইয়া কুমারকে লিয়ে?” অবশ্য এমন অবাক তিনি না হলেই পারতেন। এই ক’দিনে ভিন রাজ্যের সাংবাদিক না হোক, দেশের বেশ তাবড় কয়েকজন সেলিব্রেটি তো দেখেই ফেলেছে বেগুসরাই। বিহারের এই আধা শহরের বছর বত্রিশের বামেদের পোস্টার বয়ের সৌজন্যে।

[বিজেপির কাঁটা বসুন্ধরা, রাজস্থানের প্রচারযুদ্ধে এগিয়ে গেহলট-শচীনরাই]

Advertisement

সেই বেগুসরাইতে স্টেশনের বাইরে দু’দিকের রাস্তার যতটা দেখা যায়, তার মধ্যে অবশ্য সিপিআই তো নেই, নেই কানহাইয়া কুমারও। বরং সব থেকে বড় যে ফ্লেক্সটা প্রথমেই চোখে পড়বে সেটা কানহাইয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির গিরিরাজ সিংয়ের। আর এই লড়াইটাও ঠিক এমনই, ক্ষমতার সঙ্গে আম জনতার কিংবা মিথ্যা প্রতিশ্রুতির সঙ্গে বাস্তবের–সেটাই জড়ো হওয়া ভিড়টাকে বোঝাচ্ছিলেন মুম্বই থেকে বেগুসরাইতে পা দেওয়া জাভেদ আখতার। পিছনে তখন ডাফলি বাজিয়ে চলছে, ‘জয় কানাইহা লাল কি’!

Advertisement

এর একটু আগে সিমেন্টের স্ল্যাব বাঁধানো রাস্তা ধরে ওই দুপুরেই হাজির হয়ে গিয়েছিলাম প্যাটেল চৌকে সিপিআইয়ের পার্টি অফিসে। গ্রামের ঝিম ধরা পুরনো দিনের স্কুল বিল্ডিংয়ের মতো বাড়িটায় শুধুমাত্র উজ্জ্বল লাল রঙের পতপতে পতাকাটা। ডাঁই করে থাকা পোস্টার, লিফলেটের মধ্যে ছোট একটা তক্তপোশের উপর আধশোয়া হয়ে একের পর এক ফোন ধরে চলেছিলেন যিনি, কানহাইয়ার প্রচারের ব্যবস্থার দায়িত্বে থাকা সেই এস এন আজাদ কলকাতা শুনেই উঠে বসে প্রথম প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিলেন, “আগে বলুন, ওখানে মমতা না বিজেপি, কে এগোচ্ছে?” পাশে বসা আর একজন যোগ করলেন, “লেফট ক’টা পাবে?”বিহারের লেনিনগ্রাদ বেগুসরাইতে বামেদের নিয়ে আগ্রহ হতেই পারে, কিন্তু তা বলে জেএনইউ-তে ‘আজাদি’ ঝড় তোলা কানহাইয়ার জন্য কেন এতদূর এলেন জাভেদ আখতার? “মুম্বইয়ের উন্নাসিক উচ্চবিত্তরা, যাঁরা পলিটিক্সে ইন্টারেস্ট নেই বলে পাশ কাটিয়ে যেতেন, তাঁরাও জিজ্ঞাসা করছেন বেগুসরাইতে কী হবে? কারণ এই শহর দেশকে বুঝিয়ে দেবে আমরা কোনদিকে এগোব।” আখতারের সঙ্গী যোগেন্দ্র যাদবের ব্যাখ্যা, “এবারের নির্বাচন আসলে গণতান্ত্রিকভাবে ভারত নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে কি না, সেটার লড়াই। বেগুসরাইয়ের এই আসনটা তার একটা গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ।”

মোদিকে পছন্দ না হলে পাকিস্তানে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বিতর্ক পাকানো বিজেপি প্রার্থী গিরিরাজকে ‘ভিসা মন্ত্রী’ বলে কটাক্ষ করে জাভেদের সাফ কথা, “এখানে সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর জন্যই গিরিরাজকে প্রার্থী করা হয়েছে।” আর উলটোদিকে থাকা আরজেডির তনভীর হাসানের ‘কমিটেড’ ভোটের কথা তুলে তাঁর খোঁটা, “কমিটেড ভোট বলে কিছু নেই। দেশের কমিটমেন্টের থেকে বড় কোনও কমিটমেন্ট হয় নাকি? মাইনরিটি যদি ভাবে তার ভাল আর দেশের ভাল আলাদা, তাহলে ভুল হবে। যে নৌকায় সে বসে আছে, সেটা ডুবলে তো সেও ডুববে।” দেশের মুসলমানরা তাহলে কি একসঙ্গে ভোট দেবে? এমন ডাক দেওয়ার কড়া সমালোচনা করে জাভেদ বলেন, “আমার একথা একেবারে ভাল লাগেনি। তাহলে কি এবার হিন্দুরা একসঙ্গে ভোট দেবে? আসলে সেকুলারিজমটা আমরা ভাল করে বুঝতে পারিনি। এখন দেশে তো তারই ফল মিলছে। সবাইকেই বুঝতে হবে, সেকুলারিজম শুধু অন্যের থেকেই চাইব, নাকি নিজেদের থেকেও দেখাব।” বিরোধী স্বর কি তাহলে বেগুসরাই থেকেই জোরালো হচ্ছে? জাভেদের বক্তব্য, “বিরোধী স্বর থাকলে তবে তো গণতন্ত্র বিকশিত হবে। যেমনটা হয়ে এসেছে। যেখানে বিরোধিতা নেই, সেই সব দেশে কী হয়েছে, তার উদাহরণ তো সবার সামনেই রয়েছে!”

[২০২৩-এর মধ্যেই খতম হবে মাওবাদীরা, দাবি রাজনাথের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ