Advertisement
Advertisement

নজরে নাগপুরে সংঘের সমাবর্তন, ‘চাণক্য’ প্রমাণের দিন আজ প্রণবের

জাতীয় সংবাদপত্রে প্রণববাবুর নাগপুর সফর নিয়ে ‘অনর্থক রাজনীতি’ হচ্ছে৷

Pranab Mukherjee's daughter lashes out at him for RSS visit
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 7, 2018 9:08 am
  • Updated:June 7, 2018 9:08 am  

নন্দিতা রায়, নাগপুর: দুপুর রোদ্দুরের মধ্যে মাঠে দাঁড়িয়ে তখনও মঞ্চ বাঁধার কাজের তদারকি করছিলেন ৬৮ বছরের শশাঙ্ক খারে। চারপাশে কী ঘটছে, তাতে তাঁর ভ্রুক্ষেপ নেই। হাতে একটা মাঝারি মাপের লাঠি নিয়ে মঞ্চের এপাশ থেকে ওপাশ টহল দিচ্ছেন আর মাঝে মাঝে গলা উঁচু করে মারাঠিতে কিছু কিছু নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন ডেকরেটার্সের কর্মীদের।

নাগপুর শহরের মাঝখানে বিশাল ময়দান রেশমবাগ। বাড়ছে সংবাদমাধ্যমের ভিড়। এদিক ওদিক ছায়া খুঁজে নিয়ে বেশ কয়েকখানা ওবি ভ্যান দাঁড়িয়ে। সেগুলির সামনে দাঁড়িয়ে অনবরত ‘খবর’ বলে চলেছেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। অবশ্য এসবের কোনও কিছুই যে শশাঙ্কবাবুকে স্পর্শ করছে না, তা অচিরেই মালুম হল। বার পাঁচেক ডাকার পরে টহলদারি থামিয়ে একটু থামলেন বটে, কিন্তু কথা বলে সময় নষ্ট করতে যে অনীহা, সেটা পরিষ্কার বুঝিয়ে দিলেন। অল্পস্বল্প যেটুকু কথা বললেন তাতে জানা গেল, ষাট বছর ধরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সদস্য। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কর্মী ছিলেন। এখন অবসরের পরে পুরোপুরি সংঘেরই কাজ করেন।

Advertisement

[দশক পুরনো রীতিতে ইতি, পরম্পরা মেনে রাষ্ট্রপতি ভবনে হচ্ছে না ইফতার পার্টি]

আজ, বৃহস্পতিবার সংঘের অনুষ্ঠান। যেখানে ভাষণ দেবেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। সংগঠনের তরফে সেই মঞ্চ তৈরির দেখভালের দায়িত্ব শশাঙ্কবাবুর উপর। দেশের তামাম রাজনৈতিক মহল গত কয়েকদিন ধরে যে কর্মসূচিকে ঘিরে তোলপাড় হচ্ছে তাতে বিন্দুমাত্র উৎসাহ দেখালেন না তিনি। উলটে সপাট বললেন, “বহু বড় বড় মানুষ আমাদের অনুষ্ঠানে আসেন। আপনারা জানতেও পারেন না। এবার আসলে বিষয়টি নিয়ে এত বেশি রাজনীতি হচ্ছে যে সবাই ছুটে আসছেন। যেমন দেখুন আপনিও চলে এসেছেন।”

শশাঙ্কবাবুর কথারই যেন অনুরণন সংঘের একেবারে প্রথম সারির নেতা মনমোহন বৈদ্যর গলাতেও। বুধবারই তিনি একটি জাতীয় সংবাদপত্রের কলামে প্রণববাবুর নাগপুর আসা নিয়ে ‘অনর্থক রাজনীতি’ হচ্ছে বলে কংগ্রেসের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। প্রণবের দীর্ঘদিন ‘পাবলিক লাইফে’ থাকার অভিজ্ঞতা ও সংঘের সঙ্গে মতামত বিনিময়ের জন্যই তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে যুক্তি বৈদ্যর৷ অবশ্য, সংঘের তরফে প্রণববাবুকে আমন্ত্রণের বিষয়টি সহজ করে দেখানোর চেষ্টা হলেও এর পিছনে গভীর রাজনৈতিক অঙ্ক রয়েছে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। সংঘ পরিবারকে যে এখনও পর্যন্ত দেশের বুদ্ধিজীবীরা ব্রাত্য বলে মনে করে, নিজেদের গা থেকে সেই ধুলো ঝেড়ে ফেলতেই প্রণবের মতো জাতীয়তাবাদী নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলেও মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের৷

[চালু হচ্ছে বিশ্বের প্রথম ‘হাসপাতাল ট্রেন’, ১৯১টি গ্রাম ছুঁয়ে ছুটবে এক্সপ্রেস]

তাঁর নাগপুর সফর ঘিরে যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে, তা আলবৎ জানেন প্রণববাবু। তিনি কেন সংঘের অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে রাজি হলেন, সে নিয়ে সব মহল থেকেই প্রশ্ন রয়েছে। তাতে প্রণববাবু অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, যা বলার তা তিনি নাগপুরের মঞ্চেই বলবেন। এই পরিস্থিতিতে প্রণববাবু আজ ভাষণে কী বলেন, সেদিকে তাকিয়ে রয়েছেন সকলেই। দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা তাঁকে দেখছেন তাঁদের অবশ্য বিশ্বাস যে, আজ তাঁর ভাষণে চমক থাকবে। সংঘের মঞ্চ থেকেই আজ নিজেকে ‘চাণক্য’ প্রমাণ করতে হবে প্রণবকে।

বুধবার বিকেলেই নাগপুরে পা রেখেছেন প্রণববাবু। ফিরবেন শুক্রবার দুপুরে। অনুষ্ঠানে সাকুল্যে আধঘণ্টা বা তার থেকে একটু বেশি সময় মঞ্চে থাকার কথা প্রণবের। কিন্তু তার জন্য তাঁর ৪৪ ঘণ্টার নাগপুর সফর নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠছে। সচরাচর এই ধরনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি রেশমবাগ সংলগ্ন সংঘ স্থাপকদের স্মারকে শ্রদ্ধা জানান। প্রণববাবুও কি তাই করবেন, তা নিয়েও জল্পনা রয়েছে। এ বিষয়ে অবশ্য শশাঙ্কবাবু জানিয়েছেন, এমন কোনও প্রথা নেই। এটা প্রধান অতিথির ইচ্ছার উপর নির্ভর করে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement