সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “মহিলাদের ওপর যৌন নির্যাতনের প্রমাণ প্রথম থেকে ডেরা সাচা সওদা প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের বিরুদ্ধে পাওয়া গিয়েছিল। চেয়েছিলাম, মুখোশের আড়াল থেকে মুখ বেরিয়ে আসুক। ভয় দেখানো থেকে হাজারও বাধা সত্বেও মাথা নিচু করিনি। এই রায় আইনের জয়। সত্যের জয়।” বক্তা মুলিনজা নারায়ণন। রাম রহিম কাণ্ডে তদন্তকারী সিবিআই আধিকারিক।
ডেরা সাচা সওদা প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিংকে আড়াল করতে বিভিন্ন মহল থেকে চাপ তৈরি করা হয়েছিল। সেই তালিকায় রাজনৈতিক নেতা থেকে ব্যবসায়ী—বাদ নেই কেউই। ২০০২ সালের সেপ্টেম্বরে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করার পর ২০১৭-য় এসে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন অবসরপ্রাপ্ত সিবিআই আধিকারিক নারায়ণন। অভিযোগের সত্যতা বদলে তা মিথ্যে হিসাবে প্রমাণ করতে চাপ দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ তাঁর। সাক্ষীদের ভয় দেখিয়ে প্রভাবিত করারও চেষ্টা হয়েছিল বলেও দাবি তাঁর।
ঘটনার সূত্রপাত, ২০০২ সালের এপ্রিলে। এক অজ্ঞাতপরিচয় মহিলা পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেন, সিরসায় ডেরা সাচা সওদার মহিলাদের যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে। ছ’মাস পর তদন্তে নামে সিবিআই। তখন সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার ডেপুটি আইজির পদে ছিলেন নারায়ণন। কিন্তু, কী ধরনের চাপ তৈরি করা হত? এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রথমেই সেই বছরের কথাই উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, “একজন প্রবীণ সিবিআই আধিকারিক সরাসরি এই মামলায় তদন্ত চালাতে বারণ করেন। এমনকি অভিযোগে কোনও সারবত্তা নেই বলে মামলা বন্ধ করার নির্দেশ দেন।”
দুঁদে অফিসার হিসেবে পুলিশ মহলে পরিচিত নারায়ণনের তখন জেদ আরও চাপতে শুরু করে। বুঝতে পারেন, ঘটনার পিছনে কিছু তো রয়েছে। তদন্তের গতি আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতেই নানা ধরনের চাপের মুখে পড়তে হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। নারায়ণন বলেন, “সিবিআইয়ের বিভিন্ন আধিকারিকরা নন। চাপ বাড়াতে শুরু করেন অত্যন্ত প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা থেকে বিভিন্ন ব্যবসায়ী।” চাপের কাছেও নতি স্বীকার না করার অভ্যেস তখন রক্তে বাসা বেঁধে গিয়েছিল সিবিআইয়ে সাধারণ সাব ইনস্পেক্টর পদে যোগ দেওয়া নারায়ণের মাথায়। কাজের নিরিখে যুগ্ম অধিকর্তা পর্যন্ত পদে উন্নীত হয়েছিলেন তিনি। আদালত ও সিবিআইয়ের একাংশ এই মামলায় সাহায্য করেছিল বলেও দাবি করেন নারায়ণন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.