সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক কিলো দইয়ের দাম ৯,৭২০ টাকা। প্রতি লিটার রিফাইন তেলের দাম ১,২৪১ টাকা। না কোনও পাঁচ তারা রেস্তরাঁর খাবারের দাম নয়, সেন্ট্রাল রেলওয়ে নাকি বাজার থেকে এই রেটে বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী কিনে গুদামে মজুত করে রাখে। সম্প্রতি একটি আরটিআই আবেদনের ভিত্তিতে এই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। খবরটি জানিয়েছে ‘দ্য হিন্দু’।
বিভিন্ন সামাজিক ইস্যু নিয়ে আন্দোলনকারী অজয় বসু রেলের কাছে আরটিআই আইনে জানতে চান, সেন্ট্রাল রেলওয়ের ক্যাটারিং দপ্তর কোন খাদ্য সামগ্রী কিনতে কত টাকা খরচ করে? কেন দিনের পর দিন কোটি কোটি টাকা লোকসান হয় রেলের? প্রথমবার আবেদনের ভিত্তিতে কোনও জবাব দেয়নি রেল। দ্বিতীয়বার আবেদন করলে অজয় বসুর প্রশ্নের উত্তরে সেন্ট্রাল রেল যা যা তথ্য দেয়, দেখে চোখ কপালে উঠে যেতে বাধ্য। রেল সূত্রে জানানো হয়, প্রতি কিলোগ্রাম দই কিনতে রেলের ৯,২৭০ টাকা খরচ হয়। ৬৫০ কিলো বোনলেস চিকেন কিনতে খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। অর্থাৎ, প্রতি কিলোর জন্য প্রায় ২৫০ টাকা। এখানেই শেষ নয়, জল ও নরম পানীয়র এক একটি বোতল কেনা হয়েছে ৬০ টাকা দামে।
বোঝাই যাচ্ছে, বাজারের চেয়ে ঢের বেশি দামে এই সব সাধারণ খাদ্যপণ্য কেনা হয়েছে। কিন্তু কেন কেনা হয়েছে, সেই বিষয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি রেল। ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাসের গুদামে এই সব খাবার মজুত করে রাখা হত। যার মধ্যে বেশিরভাগটাই চলে যায় IRCTC-র জন আহার ক্যান্টিনে। অজয় বসুর অভিযোগ, খাবার কিনতে এমন দুর্নীতি হয় বলেই লোকসানে চলে রেল। তাঁর অভিযোগ, শুধু খাদ্য সামগ্রীই নয়, মামুলি টিস্যু কেনা নিয়েও রেলের অন্দরে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি চলে। তাঁর আরটিআই আবেদনের উত্তরে রেল জানিয়েছে, ২০১৬-র মার্চ মাসে প্রতি লিটার রিফাইন অয়েল কিনতে ১২৪১ টাকা, প্রতি প্যাকেট নুন কিনতে ৫০ টাকা খরচ হয়েছে।
শুধু তাই নয়, কেনার পর এই সব খাবার বন্টন নিয়ে উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ। গতবছর ২৫০ কিলো ময়দা সাড়ে সাত হাজার টাকা দিয়ে কেনা হলেও রেলের বেস কিচেনে নাকি পৌঁছেছে ৯০ কিলো, জন আহার ক্যান্টিনে পৌঁছেছে ৩৬০ কিলো ময়দা। তাহলে বাকি ময়দা কোথা থেকে এল? উত্তর নেই কারও কাছে। একই অভিযোগ উঠেছে বাসমতি চাল নিয়েও। সেন্ট্রাল রেলের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন। নয়াদিল্লির এক উচ্চপদস্থ রেলকর্তা জানিয়েছেন, এভাবে দুর্নীতি ঘটে বলেই প্রতি বছর রেলের খাবার, ক্যান্টিনে কোটি কোটি টাকার লোকসান দেখানো হয়। এবার এগুলি খতিয়ে দেখার উপযুক্ত সময় চলে এসেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.