৯ চৈত্র  ১৪২৯  শুক্রবার ২৪ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

শিবাজি মহারাজের দুর্গে এ কোন অভিশাপের ছায়া!

Published by: Sangbad Pratidin Digital |    Posted: May 31, 2016 6:53 pm|    Updated: May 31, 2016 6:53 pm

Sinhagad Fort Horror: Illusion or a Paranormal Encounter?

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মায়া কি মানুষকে বেঁধে রাখে পিছুটানে? মৃত্যুর পরেও?
স্বামী অভেদানন্দ তাঁর মরণের পারে বইতে লিখেছিলেন ঠিক সেই কথাই! লিখেছিলেন, আসলে না কি স্বর্গ বা নরক বলে কিছু হয় না। মৃত্যুর পর আত্মা যদি মায়া কাটাতে না পারে এবং ঘুরে বেড়ায় সেই টানে, তবে সেটাই তার কাছে সাক্ষাৎ নরক!
সেই মায়া বুকে নিয়েই এখনও থমথম করে সিংহগড় দুর্গ। শিবাজি মহারাজের বড় সাধের সিংহগড় দুর্গ।

sinhagad1_web
শুরু থেকেই সিংহগড় দুর্গকে বেঁধে রেখেছে মায়া। যা পরে পরিণত হয়েছে তীব্র জেদে। অধিকারে রাখার এবং হাতছাড়া না করার জেদ।
ইতিহাস বলে, এই দুর্গ প্রথমে ছিল শিবাজির বাবা শাহজি ভোঁসলের অধিকারে। শাহজি ছিলেন আদিলশাহি বংশের প্রতিষ্ঠাতা ইব্রাহিম আদিল শাহর সেনাপতি। শিবাজি কিন্তু আদিলশাহি আধিপত্য মেনে নিতে চাননি। হিন্দু স্বরাজ স্থাপনের লক্ষ্যে তিনি প্রথমেই দখল করেন কোন্ডন দুর্গ। আর, তখন থেকেই দুর্গের গায়ে ছিটকে এসে লাগে রক্তের দাগ। দুর্গ অভিশপ্ত হয়ে ওঠে।
কোন্ডন দুর্গ?
ওটাই ছিল এই দুর্গের আদি নাম। তখনও কোন্ডন দুর্গ সিংহগড় নামে পরিচিত হয়নি। পরিচিত হয় শিবাজির অমিতসাহসী সেনাপতি তানাজির নামে। তাঁকে সবাই সিংহবিক্রম নামেই চিনতেন।

sinhagad2_web
পরে ঔরঙ্গজেবের হাত থেকে এই দুর্গ দখল করতে গিয়ে যুদ্ধে প্রাণ দেন তানাজি। সেই সংবাদ শুনে শিবাজি দুঃখ করে বলেছিলেন, গড় আমাদের অধীনে এল ঠিকই, কিন্তু সিংহ চলে গেল!
এই দীর্ঘনিশ্বাসই অভিশাপের মতো জড়িয়ে রয়েছে সিংহগড়ের গায়ে। ক্রমাগত যুদ্ধ, হত্যা আর অন্তর্দ্বন্দ্বে ভেঙে পড়েছে দুর্গ, কিন্তু অভিশাপ আজও অটুট!
আর, দুর্গ ছেড়ে এখনও যেতে পারেননি অনেক মারাঠা বীরই!
শোনা যায়, দুর্গে ওঠার মুখে একটা বাঁক আছে। সেই বাঁকের মুখে যখন সূর্য অস্ত যায়, তখন মাঝে মাঝেই দেখা যায় এক গ্রামের মানুষকে। তার পোশাক ঠিক এই সময়ের নয়। কারও দিকে সে তাকায় না, কারও কথায় কান দেয় না। চুপচাপ গিয়ে দাঁড়ায় খাদের কাছে। ঠিক যখন সূর্য ডুবে যায় খাদের গভীরে, সেও লাফ দেয়। অনেকেই এই ঘটনা নিজের চোখে দেখেছেন। এও দেখেছেন, তাঁকে ধরতে গেলে স্পর্শ করা যায় না।
এছাড়া জানা যায়, একবার এক স্কুলবাস ৬০ জন বাচ্চাকে নিয়ে দেখাতে আসছিল সিংহগড় দুর্গ। বাঁকের মুখে এই লোকটিকে লাফাতে দেখে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। বাস গিয়ে পড়ে খাদে। তার পর থেকে অনেকেই সন্ধের মুখে ওই বাঁকে বাচ্চাদের হাসি, চেঁচামেচি, তার পর আচমকা বাসের ব্রেক কষার শব্দ শুনতে পান।

sinhagad3_web
কিন্তু, এই সবই তো আধুনিক যুগের ঘটনা। তার সঙ্গে শিবাজি মহারাজের দুর্গের কী?
আসলে, চুম্বকের মতোই সিংহগড় দুর্গ দুর্ঘটনা, বিষাদ আর বিচ্ছেদের সঙ্গে হাত ধরে হেঁটেছে। এই দুর্গ অধিকারে রাখতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন যে বীরেরা, তাঁদের বিধবাদের কান্না আজও শোনা যায় রাতের বেলায়। তাই বাধা না থাকলেও স্থানীয় লোকজন এই দুর্গের ধারে-কাছেও সন্ধের পরে থাকেন না। থাকলে, তিনি ফিরে এসেছেন মৃত্যুর মুখ থেকে- এমনটা শোনা যায়নি!
সিংহগড়ও কি মুখ ঢেকে নেই মৃত্যুর আঁধারেই?

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে