সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্রবার দেশজুড়ে মহা সমারোহে পালিত হচ্ছে মহা শিবরাত্রি। শিবরাত্রি উপলক্ষে শুক্রবার দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র্র মোদি। শিবরাত্রি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন মন্দিরে সকাল থেকেই নেমেছে মানুষের ঢল। ভক্তিভরে দেবাদিদেবের পুজোয় মেতেছেন সকলে।
শিবরাত্রি নিয়ে মানুষের উৎসাহের কোনও অন্ত নেই। মহাদেবের পুজো করতে চান না এমন মানুষের দেখা মেলাও বেশ কঠিন। কিন্তু শিব আরাধনা সম্পর্কে বহু তথ্যই সাধারণ মানুষের অজানা। মহা শিবরাত্রি উপলক্ষে এমন কিছু তথ্যই রইল এই প্রতিবেদনে।
১. বছরের প্রতি মাসেই আসে শিবরাত্রি। প্রতি কৃষ্ণ পক্ষের ১৪তম রাত্রি হল শিবরাত্রি। কিন্তু মাঘ মাসের কৃষ্ণ পক্ষের ১৪তম রাতে মহাশিবরাত্রি পালন করা হয় কারণ এই রাতটা মহাদেবের সবথেকে পছন্দের।
২. হিন্দু মহাপুরাণ তথা শিবমহাপুরাণ অনুসারে এইরাত্রেই শিব সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের মহা তান্ডব নৃত্য করেছিলেন। আবার এইরাত্রেই শিব ও পার্বতীর বিবাহ হয়েছিল। এর নিগুঢ় অর্থ হল শিব ও শক্তি তথা পুরুষ ও আদিশক্তি বা পরাপ্রকৃতির মিলন।
৩. পুরাণ মতে এই মহাশিবরাত্রিতে শিব তার প্রতীক লিঙ্গ তথা শিবলিঙ্গ রূপে প্রকাশিত হয়ে জীবের পাপনাশ ও মুক্তির পথ দিয়েছিলেন।
৪. শিবমহাপুরাণ অনুসারে, অতি প্রাচীনকালে বারাণসী তথা কাশীধামে এক ব্যাধ বাস করতেন। তিনি প্রচুর জীবহত্যা করতেন। একদিন শিকারে তাঁর খুব দেরি হয়ে যায়। হিংস্র পশুদের হাত থেকে রক্ষা পেতে তিনি একটি গাছের উপর আশ্রয় নেন। কোনও শিকার না পেয়ে সে হতাশ হয়ে গাছ থেকে একটা করে পাতা ছিঁড়ে নীচে ফেলতে থাকেন তিনি। সেই গাছটি ছিল বেলগাছ। আর সেই বেলগাছের নীচে একটি শিবলিঙ্গ ছিল। সেদিন ছিল শিবচতুর্দশী অর্থাৎ মহাশিবরাত্রি। আর ব্যাধও ছিলেন উপবাসী। তার ফেলা বেলপাতাগুলো শিবলিঙ্গের মাথায় পড়ে এর ফলে তাঁর শিবচতুর্দশী ব্রতের ফল লাভ হয় তার অজান্তেই। পরদিন ব্যাধ বাড়ি ফিরে এলে নিজের খাবার তিনি এক অতিথিকে দিয়ে দেন। এতে তাঁর ব্রতপালন সফল হয়।
এর কিছুদিন পরে সেই ব্যাধ মারা গেলে যমদূতরা তাকে নিতে আসে। কিন্তু শিবচতুর্দশী ব্রতের সুফল হিসাবে শিবদূতরা এসে যুদ্ধ করে যমদূতদের হারিয়ে ব্যাধকে নিয়ে যায়। যমরাজ তখন শিকার করেন যে শিবচতুর্দশী ব্রত যাঁরা পলন করেন, তাঁদের উপর যমের কোনও অধিকার থাকেনা। তাঁর মুক্তিলাভ ঘটে এইভাবে। মর্ত্যলোকে শিবচতুর্দশী ব্রতের প্রচার ঘটে।
৫. পুরাণ মতে শিবরাত্রির রাত হল সবচেয়ে অন্ধকার রাত।