সোমনাথ রায় ও অর্ণব আইচ: হাই কোর্টে (Calcutta High Court) ধাক্কা খাওয়ার পরই সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি। মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না সিবিআই বা ইডি। বুধবার পর্যন্ত তাঁর গ্রেপ্তারিতে রক্ষাকবচ দিয়ে দিল শীর্ষ আদালত (Supreme Court)। ফলে মঙ্গলবার মানিক সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দিলেও তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
মঙ্গলবারই কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly) নির্দেশ দিয়েছিলেন, আজকের মধ্যেই মানিক ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই (CBI)। রাত ৮টার মধ্যে সিবিআই দপ্তরে হাজির হতে হবে মানিক ভট্টাচার্যকে। তদন্তে যাবতীয় সহযোগিতা করতে হবে তাঁকে। তিনি যদি হাজির না হন বা তদন্তে সহযোগিতা না করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে যাবতীয় পদক্ষেপ নিতে পারবে সিবিআই। প্রয়োজনে তাকে হেফাজতে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। অর্থাৎ মানিক ভট্টাচার্যকে চাইলে গ্রেপ্তারও করতে পারে সিবিআই।
হাই কোর্টের এই রায়ের পর আজই মানিকের গ্রেপ্তারির একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আপাতত সেই সম্ভাবনায় ইতি। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতিকে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করা যাবে না। তাঁর দায়ের করা স্পেশ্যাল লিভ পিটিশনের (SLP) পরবর্তী শুনানি বুধবার। তাঁর আগে মানিকের বিরুদ্ধে কোনওরকম ব্যবস্থা নিতে পারবে না কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি। যদিও মানিককে সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দেওয়ার যে নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্ট দিয়েছিল, তা বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ গ্রেপ্তার করা না গেলেও মানিককে সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দিতে হবে।
এদিকে হাই কোর্টের নির্দেশ পাওয়ার পরই অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (হাই কোর্ট) সিবিআইয়ের দপ্তরে হাজিরা দেওয়ার নোটিস নিয়ে মানিক ভট্টাচার্যের যাদবপুরের বাড়িতে যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন যাদবপুর থানার পাঁচ জন আধিকারিক ও পুলিশকর্মী। মানিকবাবুর পরিবারের লোকেরা ওই পুলিশকর্তাকে জানিয়ে দেন যে, এদিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু কোথায় গিয়েছেন, বাড়ির লোকেরা তা জানেন না। সেটা দিল্লি বা এই রাজ্য অথবা কলকাতার কোথাও হতে পারে। পুলিশের পক্ষ থেকে মানিক ভট্টাচার্যর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়। কিন্তু দেখা যায়, তাঁর মোবাইল সুইচড অফ। এর পরই কলকাতা পুলিশের তরফে এসি (হাই কোর্ট) যাদবপুর থানায় গিয়ে জেনারেল ডায়েরি করে জানিয়ে দেন যে, মানিকবাবুর সন্ধান তাঁরা পাননি। সেই তথ্য হাই কোর্টকে জানানো হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন দায়ের করেন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের একক বেঞ্চ এবং পরে ডিভিশন বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছিল সেটাকেই চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান মানিকবাবু। এদিন সেই মামলারই শুনানি ছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.