Advertisement
Advertisement
টেবল টপ রানওয়ে

কোঝিকোড় বিমান দুর্ঘটনার নেপথ্যে ঝুঁকিপ্রবণ ‘টেবল টপ রানওয়ে’, কী এর বিশেষত্ব, জানুন

ছবিতে দেখুন দুর্ঘটনাস্থলের চিত্র।

Table top runway of Kozhikode Airport behind the plane accident, know it's features
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:August 8, 2020 2:55 pm
  • Updated:August 8, 2020 4:16 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টেবল টপ রানওয়ে। দেশের যে পাঁচটি বিমানবন্দরের রানওয়ে এই বৈশিষ্ট্যযুক্ত, তার মধ্যে একটি কোঝিকোড়ের কালিকট ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট (Calicut International Airport)। এখানেই শুক্রবার সন্ধেবেলা ঘটে গিয়েছে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। রানওয়েতে নামতে গিয়ে পিছলে দু’ টুকরো হয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান পড়েছে খাদে। পাইলট-সহ অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনায়, আহত শতাধিক। এ হেন দুর্ঘটনার নেপথ্যে অনেকগুলি কারণ উঠে এলেও বিশেষজ্ঞদের তালিকায় অন্যতম কারণ রানওয়ের ভৌগলিক অবস্থান অর্থাৎ টেবল টপ রানওয়ে। তা নইলে হয়ত এত বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেত ১৮৪ জন যাত্রীবাহী এয়ার ইন্ডিয়া বোয়িং বিমানটি।

AI-flight-1
দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের খণ্ডাংশ

এখন প্রশ্ন হল, কী এই টেবল টপ রানওয়ে (Table Top Runway)? এর বিশেষত্বই বা কী আর কেন এ ধরনের রানওয়ে বিমান অবতরণের পক্ষে বেশি ঝুঁকির? সাধারণভাবে কোনও উঁচু পাহাড় অথবা মালভূমির সমতল অংশে যে রানওয়ে তৈরি করা হয়, তাইই টেবিল টপ রানওয়ে। এর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ সীমিত। ভূপ্রকৃতিগত অবস্থান অনুযায়ী রানওয়ের শেষ প্রান্তে সাধারণত গভীর খাদ থাকে। সংকীর্ণ জায়গা হওয়ায় এখানে বিমান অবতরণ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করতে হয় পাইলটকে। কারণ, অবতরণ স্থলের একচুল এদিক-ওদিক হলে, বিমান খাদে গিয়ে পড়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। তাছাড়া পাহাড়ি এলাকার মাঝে বিমানবন্দর হওয়ায়, আকাশ থেকে ভূমির দিকে বিমান নিয়ে নামার সময় দৃষ্টিবিভ্রম হতে পারে চালকের। তাই টেবিল টপ রানওয়েতে বিমান নামাতে অত্যন্ত দক্ষ, অভিজ্ঞ চালককে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কোষাগার ফাঁকা! এবার কর্মীদের সন্তানের পড়াশোনার ভাতাও বন্ধ করল রেল]

‘বন্দে ভারত মিশন’এ দুবাই থেকে কালিকট ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টগামী ১৮৪ জন যাত্রী ভরতি এয়ার ইন্ডিয়া বিমানের দায়িত্ব তাই দেওয়া হয়েছিল বায়ুসেনার প্রাক্তন উইং কম্যান্ডার দীপক বসন্ত সাঠেকে। কিন্তু পরিবেশ, পরিস্থিতি তাঁর সহায় হয়নি শুক্রবার। বেশ কয়েকদিন ধরে কোঝিকোড়ে টানা বৃষ্টি চলছিল। ফলে কালিকট বিমানবন্দরের রানওয়েতে জল জমে ছিল। এ ধরনের রানওয়ের জল দ্রুত নেমে গেলেও, তার জন্যও কিছুটা সময় লাগে। অন্যদিকে, বৃষ্টি চলায় কম ছিল দৃশ্যমানতা। এমনিতে যেখানে টেবিল টপ রানওয়েতে নামতে গেলে দৃষ্টিবিভ্রম তৈরি হয়, সেখানে কম দৃশ্যমানতা জোড়া প্রতিকূলতা। শুক্রবার সন্ধেবেলা সেই পরিস্থিতিই তৈরি হয়েছিল কালিকট বিমানবন্দরে। এছাড়া এখানকার ১০ নং রানওয়ে নিয়ে ১০বছর আগেই সতর্ক করেছিল বিশেষজ্ঞ কমিটি। ম্যাঙ্গালোরের বিমান দুর্ঘটনার পরই বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য ক্য়াপ্টেন মোহন রঙ্গনাথন সতর্ক করেছিলেন, বিশেষত বৃষ্টিভেজা আবহাওয়ায় এখানে বিমান অবতরণ করানো একেবারেই উচিত হবে না। তা উপেক্ষা করেই বিমান এই রানওয়েতে নামার অনুমোদন দেয় এটিসি (Air Traffic Control)।

AI-flight-3

প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, দৃষ্টিভ্রম এবং পিচ্ছিল রানওয়েতে নিয়ন্ত্রিত গতিতে এয়ারবাসটি নামাতে গিয়ে তা সঠিক অবতরণ স্থলে নামতে পারেনি। রানওয়েতে পিছলে এগিয়ে একেবারে শেষপ্রান্তে চলে যায় (overshot the table top runway)। তার ওপারেই খাদ, রানওয়ের ধারে ধাক্কা খেয়ে তা টুকরো হয়ে ৩৫ ফুট খাদে গিয়ে পড়ে। দুর্ঘটনার পর কালিকট বিমানবন্দরে আপাতত বিমান অবতরণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ সকালে উদ্ধার হয়েছে বিমানটির ব্ল্যাকবক্স। তা খতিয়ে দেখে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ জানার চেষ্টা করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

[আরও পড়ুন: উলট পুরাণ! এবার ঘোড়া কেনাবেচার ভয়ে রাজস্থানের বিধায়কদের গুজরাটে সরাচ্ছে বিজেপি]

টেবল টপ রানওয়ে প্রাকৃতিকভাবে এত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অনেক আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাই এখানে বিমান অবতরণ করে না। ভারতে এরকম পাঁচটি বিমানবন্দর আছে – কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালোর, কেরলের কালিকট, হিমাচল প্রদেশের কুলু, মনিপুরের লেংপুই, সিকিমের পেকিয়াং। এদের মধ্যে সাম্প্রতিককালে এত বড় দুর্ঘটনার সাক্ষী কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালোরের রানওয়ে। ২০১০ সালে এখানে একইভাবে রানওয়ে পেরিয়ে বিমান খাদে পড়ায় মৃত্যু হয়েছিল ১৫৮ জনের।

AI-flight-2
রানওয়ের শেষ প্রান্তে ধাক্কা বিমানের

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement