সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কৃষিজমি অধিগ্রহণ করে এ রাজ্যেই হচ্ছিল টাটাদের ন্যানো করাখানা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লাগাতার আন্দোলনে পিছু হটতে হয়েছিল তদানীন্তন বাম সরকার ও শিল্পপতিদের। গুজরাটে সরে গিয়েছিল ন্যানো কারখানা। তা নিয়ে এখনও কটুক্তি শুনতে হয় মমতাকে। বলা হয়, সেদিন নিজের স্বার্থের জন্য আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। সেই আন্দোলনের উপর ভিত্তি করেই আজ তিনি ক্ষমতার কুরসিতে। কিন্তু কারখানাটা হলে পশ্চিমবঙ্গের হাল বদলে যেতে পারত। কিন্তু তাই কি! সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, সেদিনের প্রতিশ্রুতি জাগানো ন্যানো আজ প্রায় মরণাপন্ন। বিশ্বের সবথেকে সস্তা গাড়ি আইসিইউ-তে চলে গিয়েছে বললে অত্যুক্তি করা হবে না।
[ বিশ্বকাপের মরশুমেই ফ্রান্সকে টেক্কা দিল ভারত, জানেন কীভাবে? ]
সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, চলতি বছর জুনে মাত্র একটি গাড়ি তৈরি হয়েছে। অথচ গতবছর এই মাসেই এই সংখ্যাটি ছিল ২৭৫। বোঝাই যাচ্ছে ন্যানো থেকে মুখ থেকে ফিরিয়েছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু তার মানে সামগ্রিক গাড়ি থেকে মুখ ফিরিয়েছেন ব্যবহারকারীরা? তাও নয়। কারণ সমীক্ষা বলছে, অন্যান্য গাড়ির বিক্রি বেড়েছে বই কমেনি। বেড়েছে মোটরবাইকের বিক্রিও। বাইকের বদলে লোকে ন্যানোকেই পছন্দ করবে এরকম একটি মত দেখা গিয়েছিল বছর দশেক আগে। এই গাড়িকে বলা হচ্ছিল ‘পিপলস কার’। কিন্তু কার্যত দেখা গেল ‘পিপল’ বা আমআদমি ন্যানোকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ফলে এই জুনে মোটে একটি গাড়ি তৈরি হয়েছে। যা কোনও ইন্ডাস্ট্রি বাঁচিয়ে রাখার মতো সুখবর নয়। নাভিশ্বাস অবস্থা একরকম স্বীকারই করে নিয়েছেন টাটা মোটরসের কর্তারা। ন্যানো নিয়ে তাঁরাও বেশ আশাহত। জানাচ্ছেন, বর্তমানে গাড়ির যে নকশা আছে তাতে নতুন করে আর বিক্রি বাড়বে না। নকশা বদলে নতুন করে বিনিয়োগ করলে ন্যানো বাঁচতে পারে। কিন্তু টাটা মোটরস তা করবে কি না সন্দেহ। বরং এর আগেও এই গাড়ি তৈরি বন্ধ করারই ইঙ্গিত দিয়েছিল সংস্থা। যদিও আনুষ্ঠানিক কোনও ঘোষণা হয়নি। কিন্তু যে তথ্য সামনে আসছে তাতে ন্যানোর মরণদশা যে ঘনিয়ে উঠেছে তাতে কোনও সংশয় নেই।
[ কালো টাকা রুখতে গুগল এর ধাঁচে সার্চ ইঞ্জিন, নয়া উদ্যোগ কেন্দ্রের ]
প্রশ্ন উঠছে, এ কারখানা যদি এ রাজ্যে হত, তাহলে কী হত? কৃষিজমি অধিগ্রহণ করে তৈরি কারখানা কি দশ বছরের মধ্যেই পাততাড়ি গোটাত! আপাতত অবশ্য সে প্রশ্নের উত্তর খোঁজার দরকার নেই। কারণ কারখানা এ রাজ্যে হয়নি তা যেমন বাস্তব, তেমনই ন্যানো যে মৃত্যুর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে তাও সত্যি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.