সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিক্ষিপ্ত উদ্যোগ ছিল। বস্তিতে দুঃস্থ মহিলাদের মধ্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিলি করে নজির গড়েছিলেন সুরাটের দম্পতি। প্যাড কাপল হিসেবে তাঁরা দেশে পরিচিত। তবে একক উদ্যোগে খুব বেশি বড় কাজ সম্ভব নয়। তাই এবার সমবেত চেষ্টা। মহিলাদের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগ মহিলাদেরই।গড়ে তোলা হল প্যাড ব্যাংক। যেখান থেকে বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন পাবেন দুঃস্থ মহিলারা।
[ টানা পাঁচ বছর বস্তিতে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিলি করে নজির দম্পতির ]
উত্তরপ্রদেশের Pinkishe Foundation নামে এক বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে তৈরি হয়েছে এই প্যাজ ব্যাংক। সংস্থার কাজকর্ম চালান মহিলারাই। মহিলাদের এই বিশেষ সমস্যার দিনগুলোর কথা তাঁদের অজানা নয়। এ যন্ত্রণার ভুক্তভোগী সকলেই। দীর্ঘদিনের সংস্কার এখনও বিদ্যমান। যে কাহিনি খানিকটা উঠে এসেছে ‘প্যাডম্যান’ ছবিতে। কিন্তু ছবি বড়জোর বার্তা দিতে পারে। বাস্তবে তার প্রয়োগ করতে হয় হাতেকলমে কাজ করেই। সেই তাগিদই অনুভব করেছে এই ফাউন্ডেশন। সংস্থার সভাপতি অরুণ গুপ্ত জানান, পুরো ভাবনাই তাঁর মেয়ের। একদিন পরিচারকার কন্যার পোশাকে রক্তের দাগ দেখে চমকে উঠেন তাঁর কন্যা। প্রশ্ন করে জানতে পারেন, ঋতুকালে স্যানিটারি ন্যাপকিন বা পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করার মতো সামর্থ্যও তাঁদের নেই। তখন থেকেই ভাবনা শুরু। একজনকে হয়তো সাহায্য করা হয়। কিন্তু এ নমুনা তো একটা নয়। গোটা দেশে অসংখ্য দুঃস্থ মহিলা আছেন, যাঁদের প্যাড ব্যবহারের সামর্থ্য নেই। সুরাদের দম্পতিও দেখেছিলেন, বস্তির কিছু কিশোরী ডাস্টবিন থেকে ব্যবহৃত রক্তমাখা প্যাড সংগ্রহ করছে। সামর্থ্য নেই, তাই সেগুলো ধুয়েমুছে ফের ব্যবহার করার প্রয়াস তাদের। কিন্তু তা যে আরও রোগ বয়ে আনতে পারে, তা ভেবেই শিউরে উঠেছিলেন তাঁরা। তারপরই ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্যাড বিলি করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। এক্ষেত্রে অরুণবাবুর কন্যা অবশ্য অকটু অন্যরকম ভেবেছেন। তিনি এই কাজে আরও মানুষকে শামিল করতে চেয়েছেন। বেশ কয়েক মাসের চেষ্টায় তা সম্ভবও হয়েছে। বহু মহিলা তাঁর উদ্যোগ জানতে পারে স্বেচ্ছায় প্যাড দান করেছেন। ফলে গড়ে উঠেছে প্যাড ব্যাংক। এবার এই প্যাডগুলি বিনামূল্যে দুস্থ মহিলাদের মধ্যে বিলি করা হবে।
[ ‘নির্ভয়ার জন্য প্রতিবাদ হলে, কুশমণ্ডির নিগৃহীতার জন্য কেন নয়?’ ]
সংগঠনের কাজকর্ম অবশ্য এক রাজ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। কলকাতা, আসানসোল। হায়দরাবাদ, পাটনার মতো বড় শহরগুলিতেও প্যাড সংঘের কাজ করছেন সংগঠনের সদস্যরা। সংস্কার ভেঙে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়াই তাঁদের লক্ষ্য। আর সে কাজ শুধু নয়, কাজেই করে দেখাতে চায় এই ফাউন্ডেশন।