Advertisement
Advertisement
অযোধ্যা

অযোধ‌্যায় পাথর খোদাই বন্ধ রাখল ভিএইচপি, অশান্তি রুখতে মোতায়েন আধাসেনা

রেলের পক্ষ থেকেও দেশজুড়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।

VHP stops stone carving work, cancels all events ahead of Ayodhya verdict
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:November 8, 2019 10:08 am
  • Updated:November 8, 2019 3:33 pm

নন্দিতা রায়, দিল্লি: অযোধ্যার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দেশের কোথাও যাতে কোনও রকম অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে, সেজন্য অতিরিক্ত সতকর্তা অবলম্বন করার কাজ শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দেশের সমস্ত রাজ্যকে সজাগ থাকার জন্য একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, মন্ত্রকের পক্ষ থেকে অযোধ্যায় অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানো হয়েছে। এই অতিরিক্ত বাহিনী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় রাজ্য সরকারকে সহায়তা করবে। কোনও অবাঞ্ছিত ঘটনা যাতে না ঘটে, তা নিশ্চিত করতেই এই অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। ৪০টি গ্রুপের প্রতিটিতে ১০০ জন করে জওয়ান সম্বলিত আধাসামরিক বাহিনী অযোধ্যার উদ্দেশে ইতিমধ্যেই রওনা হয়ে গিয়েছে।

[আরও পড়ুন: টানাপোড়েনের অবসান, সিধুকে কর্তারপুরে যাওয়ার অনুমতি দিল কেন্দ্র ]

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে একটি সাধারণ নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। যাতে তারা সমস্ত সংবেদনশীল স্থানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করতে পারে। দেশের কোনও জায়গায় কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এহেন পদক্ষেপ করা হয়েছে।

Advertisement

এর মাঝেই শুক্রবার সকালে উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যোগী প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।  উত্তরপ্রদেশের মুখ্য সচিব রাজেন্দ্র কুমার তিওয়ারি এবং পুলিশ প্রধান ওম প্রকাশ সিং-কে নিজের অফিসে ডেকে পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয় বলে সূত্রের খবর। 

Advertisement

আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি দেশের সবথেকে পুরনো অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ চলতি মাসের ১৭ তারিখ অবসর নেবেন। রায় ঘোষণা নিয়ে কেন্দ্র অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে চাইছে। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সমস্ত মন্ত্রীদের রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর সময়ে সংযত থাকার পারমর্শ দিয়েছেন বলেই সূত্রের খবর। অযোধ্যা রায়ের পর তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে কেউ অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করুক, তা একেবারেই চান না প্রধানমন্ত্রী। সেই বার্তাই তিনি স্পষ্টভাবে দিয়েছেন বলেই জানা গিয়েছে। সরকার তথা বিজেপি তো বটেই, তাদের মতাদর্শগত অভিভাবক রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘও অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণার পর সংযত থাকার জন্য সংগঠনের অন্দরে বার্তা দিয়েছে বলেই সূত্রের খবর।

[আরও পড়ুন: পাকিস্তানি যুবতীর প্রেমে পড়ে গোপন তথ্য ফাঁস, শাস্তির মুখে ২ সেনাকর্মী]

অন্যদিকে, অযোধ্যা মামলায় সুপ্রিম কোর্টের সম্ভাব্য রায়ের আগে তাদের নির্মাণ কার্যশালায় রাম মন্দির নির্মাণের জন্য পাথর ও মার্বেল খোদাইয়ের কাজ বন্ধ রাখল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। নয়ের দশকে ভিএইচপি এই নির্মাণ কার্যশালা তৈরি করে। তারপর থেকে এই প্রথমবার পাথর খোদাইয়ের কাজ বন্ধ রাখল তারা। স্থগিত রাখা হয়েছে সমস্ত কর্মসূচিও। এই খবরের সত্যতা স্বীকার করেছে ভিএইচপি। সংগঠনের মুখপাত্র শরদ শর্মা বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা পাথর খোদাইয়ের কাজ বন্ধ রেখেছি। কবে থেকে আবার এই কাজ ফের শুরু হবে সেই বিষয়ে রাম জন্মভূমি ন্যাস সিদ্ধান্ত নেবে। সংঘের শীর্ষ নেতৃত্ব গোটা ব্যাপারটি দেখভাল করছে। যে সব কর্মীরা কাজ করেছিলেন তাঁরা গুজরাতের ভুজ এবং সৌরাষ্ট্রে ফিরে গিয়েছেন।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তো বটেই, রেলের পক্ষ থেকেও অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণা নিয়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনী (আরপিএফ)-র তরফে সুরক্ষার প্রস্তুতির বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। নানা পরামর্শ সম্বলিত এই নির্দেশিকা রেলের প্রতিটি ডিভিশনে ইতিমধ্যেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরপিএফের ডিজি অরুণ কুমার এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, প্ল্যাটফর্ম, রেল স্টেশন, ইয়ার্ড, পার্কিং স্পেস, সেতু এবং টানেলগুলির পাশাপাশি উৎপাদন ইউনিট এবং কর্মশালাগুলিকে সুরক্ষিত করার কথা নির্দেশিকার বলা হয়েছে। কোনও আক্রমণ বা বিস্ফোরক লুকানোর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে এমন সম্ভাব্য হটস্পটগুলি চিহ্নিত করার কথাও সেখানে বলা হয়েছে।

সাত পৃষ্ঠার নির্দেশিকা অনুসারে, রেলস্টেশনগুলির নিকটবর্তী বা এর আশেপাশের সমস্ত ধর্মীয় কাঠামোগুলির উচ্চতা বেশি হলে সেগুলি ‘ফ্ল্যাশপয়েন্ট’ হতে পারে। এমনকী রেলওয়ের আগের আদেশে কোনও ট্রেন না থাকাকালীন বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার জন্য স্টেশনগুলিতে ৩০ শতাংশ আলো রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এর পরিবর্তে সব জায়গায় সর্বদা ১০০ শতাংশ আলোর ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুম্বই, দিল্লি, মহারাষ্ট্র এবং উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন স্টেশন সহ বেশ কিছু বড় স্টেশন চিহ্নিত করে আরপিএফ কর্মীদের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় উসকানিমূলক যে কোনও ধরনের পোস্টের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলা দায়ের হবে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে (এনএসএ)। অযোধ্যার রায় নিয়ে কোনও লিঙ্ক বা মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারণ করা হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ