সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সেন্ট ভ্যালেন্টাইন সাহেবের দোহাই দিয়ে আজ গোটা বিশ্ব মেতেছে প্রেম দিবস উদযাপনে। ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রেমের দিন পালন করা উচিত কি উচিত নয়, সে বিষয়ে বহু কূটতর্ক আছে। অনেকেই এই গণ প্রেমদিবস পালনের পিছনে কর্পোরেটের চক্রান্ত দেখেন। কেউ কেউ আবার বলেন এত ভাবার কিছু নেই, নেহাতই ছোট ঘটনা। এই দোলাচলের ভিতরই সোশ্যাল মিডিয়ায় আবার অন্য একটি বিষয় ভেসে ওঠে। প্রেম সপ্তাহের গোড়া থেকেই ঘোরফেরা করতে থাকে একটি পোস্ট। তা হল, ১৪ ফেব্রুয়ারিই ফাঁসি দেওয়া হয়েছিলন ভগৎ সিংকে।
ভ্যালেন্টাইনস ডে পালনকে অনেকেই পশ্চিমী সংস্কৃতির প্রভাব হিসেবে দেখেন। এ নিয়ে তর্ক কম নয়। পশ্চিমী সংস্কৃতির কোনও কিছুই যে গ্রহণযোগ্য নয়, এমনটা তো নয়। তাহলে ভ্যালেনটাইন ডে পালনেই বা আপত্তি ওঠে কোথায়, পাল্টা ওঠে এ প্রশ্নও। প্রেমের জন্য আলাদা একটা দিন বরাদ্দ থাকার মধ্যে অন্যায় দেখেন না বহু মানুষই। বাবা, মাকে সম্মান জানানো যেমন স্রেফ একটা দিনের নয়, ঈশ্বরের আরাধনাও একদিনের নয়, তবু ফাদারস ডে মাদারস ডে বা বিভিন্ন ঠাকুরের পুজোরও আলাদা আলাদা দিন থাকে। তাহলে প্রেমের জন্য দিন থাকলে কীসেরইবা আপত্তি? এ প্রশ্নের মুখেই সম্ভবত সোশ্যাল মিডিয়ায় জাতীয় আবেগ উসকে দেওয়া একটি পোস্ট ঘুরতে থাকে। যেখানে লেখা ১৪ ফেব্রুয়ারি ফাঁসি হয়েছিল ভগৎ সিং ও আরও দুই বিপ্লবীর। এই দিন প্রেমের জোয়ারে ভেসে যাওয়ার অর্থ ওই তিন মহান দেশপ্রেমিকেক আত্মবলিদানকেই অসম্মান করা, এমনটাই বলা থাকে ওই পোস্টে। কিন্তু সত্যিই কি এইদিন ফাঁসি হয়েছিল ওই তিনজনের?
ইতিহাস এই দাবিকে অবশ্য বিন্দুমাত্র মান্যতা দেয় না। তথ্য অনুযায়ী, লাহোর ষড়যন্ত্রে অভিযুক্ত ভগৎ সিং ও তাঁর দুই বিপ্লবী বন্ধুর ফাঁসির দিন ধার্য হয়েছিল ২৪ মার্চ, ১৯৩১। কোনও এক অজ্ঞাতকারণে তা প্রায় একদিন এগিয়ে আনা হয়। তিনজনেরই ফাঁসি হয় ২৩মার্চ।
অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেখে ভ্রান্ত ধারার বশবর্তী হন। কিন্তু প্রেম দিবসের সঙ্গে শহিদদের কোনও সংযোগ নেই।