সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা (Assembly Election 2022) নির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে। তবে বাকি চারটি রাজ্যের থেকে সবচেয়ে বেশি নজর রয়েছে উত্তরপ্রদেশের ভোটে। গোবলয় রাজনীতিতে দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশের ভোট কার্যত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর, যার প্রভাব থাকে জাতীয় রাজনীতির আঙিনাতেও। বলা হয়ে থাকে, উত্তরপ্রদেশ যার, কেন্দ্রের মসনদও তার।
উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের হাত ধরেই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে যাবে বলে মনে করছেন বহু রাজনৈতিক বিশ্লেষক। লোকসভার লক্ষ্যেই তৈরি হবে কৌশল।তবে শেষ হাসি কে হাসবে, তা নির্ভর করে রয়েছে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh Election) রাজনৈতিক কয়েকটি ফ্যাক্টরের উপর। যে দল ফ্যাক্টরগুলিকে ব্যবহারে করে নিজের পালে হাওয়া লাগাতে পারবে, ধরে নেওয়া হবে অযোধ্যার গদিতে বসবে সে-ই।
উত্তরপ্রদেশের বুকে চিরকালই ‘জাত ভিত্তিক ভোটব্যাংক’ঘিরে রাজনীতিকে আবর্তিত হতে দেখা গিয়েছে। তবে ঘরানায় সামান্য বদল দেখা যায় ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে। সে বার গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড় শুরু করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। উল্লেখ্য, বহু রাজনৈতিক অঙ্ক ওলট-পালট করে দিতেই উত্তরপ্রদেশের বুকে বারাণসী থেকে ভোটে সেবার দাঁড়িয়েছিলেন গুজরাটের ভূমিপুত্র। এমনই মত বহু বিশ্লেষকের। মোদি ছিলেন ভিন রাজ্যের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, তবুও উত্তরপ্রদেশের মাটি থেকে তাঁর জয় ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা রাজ্যের রাজনৈতিক ঘরানার বড় বদল বলে মনে করা হয়ে থাকে।
এটাও মনে করা হয় যে ২০১৪ সালে প্রথমবার জাতিভিত্তিক রাজনৈতিক অঙ্কের বাইরে বেরিয়ে এসে, উত্তরপ্রদেশ নেতাভিত্তিক রাজনৈতিক সমর্থনের রাস্তায় হাঁটে। পালটাতে থাকে উত্তরপ্রদেশের ‘ভোটিং বিহেভিয়ার’। এরপর উত্তরপ্রদেশে ২০১৭ বিধানসভা ভোট, ২০১৯ লোকসভা ভোট হয়। বিজেপি কার্যত অপ্রতিরোধ্য হয়ে যায় গঙ্গাপাড়ের এই রাজ্যে। ২০১৯ সালে বিজেপি ৫০ শতাংশ আসনে দখল রেখেছিল। তবে ‘মুখ’–এর রাজনীতির একটি সমস্যা আছে, ‘মুখ’-এর জনপ্রিয়তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। এদিকে, ভোটের ইস্যুর নিরিখে সাম্প্রতিককালে উত্তরপ্রদেশে একাধিক ফ্যাক্টর এসেছে ও গিয়েছে। তবে, জাতিভিত্তিক ভোট ইস্যু এক্ষেত্রে বড় ফ্যাক্টর।
এছাড়াও সাম্প্রতিককালে কৃষক অসন্তোষ যোগীগড়ের ভোটে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। সেক্ষেত্রে কৃষি আইন ফ্যাক্টর প্রভাব ফেলতে পারে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে। আবার উত্তরপ্রদেশের পূর্বাংশে মোদি ও যোগী ফ্যাক্টর বড় হয়ে দাঁড়াতে পারে। আবার, সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদবের মসনদ দখলের স্বপ্ন কতটা পূরণ হবে তা ঠিক করে দিতে পারে উত্তরপ্রদেশের বুন্দেলখন্ড এলাকা। এছাড়াও সার্বিকভাবে উত্তরপ্রদেশের বুকে ধর্মীয় রূপরেখার ইস্যু ভোটে যে বড় প্রভাব ফেলতে পারে তা বলাই বাহুল্য।
উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের জন্য সামাজিক প্রকৌশলীর কাজটির মূল দায়িত্বে আছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। বিজেপিতে তাঁর নেতৃত্বাধীন টিম শেষ এক বছর ধরে উত্তরপ্রদেশের গ্রামে গ্রামে বিভিন্ন পিছিয়ে পড়া জাতি গোষ্ঠীর মানুষ সহ সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে তাঁদের চাহিদার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে। এই সব তথ্যের পর্যালোচনা সহ বিভিন্ন প্রকল্প, প্রতিশ্রুতি ও স্থানীয় দলগুলির সঙ্গে জোট নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.