সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণতান্ত্রিক দেশ। পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার অধিকার আছে সব নাগরিকেরই। কিন্তু, সে তো কথার কথা। কিন্তু, বাস্তবে নিজের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিলে, ফল যে কী হতে পারে, তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন দুশন্ত শাহু।
[শিশুপাচার রুখতে কী উদ্যোগ নিলেন এই যুবক?]
ওড়িশার রঘুদিয়াপাড়ার গ্রামের বাড়ি দুশন্তের। তাঁর স্ত্রী মল্লিকা স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্য। দিন কয়েক আগে গ্রামের পঞ্চায়েতে ভোট হয়। আর সেই ভোটে সরপঞ্চ পদপ্রার্থী, স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতাকে ভোট দিতে রাজি হননি মল্লিকা। নিজের পছন্দমতো প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছিলেন তিনি। নিজের মান-সম্মান খুঁইয়ে স্ত্রীর সেই অপরাধের মাসুল দিতে হয়েছে দুশন্তকে। জানা গিয়েছে, ভোট হয়ে যাওয়ার পর, গ্রামে রীতিমতো সালিশি সভা বসানো হয়। সালিশি সভায় হাজির ছিলেন দুশন্ত ও তাঁর স্ত্রী মল্লিকাও। সালিশি সভায় গ্রামের মোড়লরা নিদান দেন, সরপঞ্চ পদপ্রার্থীকে ভোট না দিয়ে অপরাধ করেছেন দুশন্তের স্ত্রী। তাই দুশন্তকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। আর যদি তিনি টাকা দিতে না পারেন, তাহলে ঘণ্টা বাজিয়ে আশেপাশে ১৩টি গ্রামে ঘুরতে হবে এবং জনসমক্ষে স্ত্রীর হয়ে অপরাধ কবুল করতে হবে।
[চিনের উদ্বেগ বাড়িয়ে বঙ্গোপসাগরে বিশাল ভারতীয় নৌবহর]
নেহাতই গরিব পরিবার। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। তার পরেও ৫০ হাজার জরিমানা! তাই সালিশি সভার নিদান মেনে ঘণ্টা বাজিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘোরা ছা়ড়া দুশন্ত শাহুর সামনে আর কোনও উপায় ছিল না। দুশন্ত যখন ঘণ্টা বাজিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরছিলেন, তখন বিষয়টি কয়েকজন গ্রামবাসীদের নজরে আসে। তাঁরাই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে দুশন্তকে উদ্ধার করে। ঘটনায় বাদাখেরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও তাঁর সচিব-সহ ৫২ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। দুশন্ত শাহু বলেন, ‘আমার স্ত্রী বাদাখেরা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। কিন্তু স্থানীয় সরপঞ্চ পদপ্রার্থীকে ভোটে দেয়নি সে। তাই আমাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ঘণ্টা বাজিয়ে বাজিয়ে গ্রামে ঘুরতে বলা হয়েছে। গ্রামে সালিশি সভায় সেরকম নিদান দিয়েছে গ্রামের মোড়লরা। আমি গরিব মানুষ। এত লোকের বিরুদ্ধে লড়ার সাধ্য নেই। তাই বাধ্য হয়েই শান্তি মেনে নিয়েছি।’