যমুনা সাফাইয়ে নামানো হয়ে ভারী ভারী মেশিন।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নির্দেশ দিয়েছিলেন, দিল্লিতে বিজেপির সরকার এলে প্রথম কাজ হবে যমুনা সাফাই। প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতি পালনে এবার উঠেপড়ে লাগলেন দিল্লির উপরাজ্যপাল ভিকে সাক্সেনা। বিরাট বিরাট মেশিন নামল কার্যত নর্দমায় পরিণত হওয়ায় যমুনায়। সাক্সেনা জানালেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সে কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।’
সদ্য শেষ হওয়া দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে এবার অন্যতম প্রধান ইস্যু ছিল যমুনা পরিষ্কার। বিজেপির অভিযোগ ছিল, ১০ বছর ক্ষমতায় থেকেও যমুনা সাফাইয়ের কোনও উদ্যোগ নেয়নি কেজরি সরকার। বরং কেন্দ্রের টাকা নয়ছয় করেছে। আপ সরকারকে উৎখাতের পর তাদের প্রথম কাজ হবে যমুনার হারানো গৌরব ফেরানো। পালটা কেজরির যুক্তি ছিল, করোনা পরিস্থিতির জেরে তাঁর সরকার এই কাজ করে উঠতে পারেনি, এবার ফিরলেই যমুনা পরিষ্কারের কাজ শুরু করবেন। যদিও কেজরির সে আশ্বাসে মন ভোলেনি দিল্লিবাসীর। ৭০ আসনের রাজধানীতে আপ যেখানে ২২ আসন পেয়েছে, সেখানে ৪৮ আসনে জয় পেয়ে ২৭ বছর পর দিল্লিতে ক্ষমতায় ফিরেছে বিজেপি। তবে নয়া সরকার গঠনের আগেই প্রতিশ্রুতি পূরণে কোমর বেঁধে নামলেন দিল্লির উপরাজ্যপাল। সম্প্রতি দিল্লির মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত এই বিষয়ে কাজ শুরুর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর সোমবার দেখা যায়, যমুনার পলি পরিষ্কারের জন্য ভারী ভারী ড্রেজিং মেশিন উপস্থিত হয়েছে নদীর পাড়ে।
দিল্লি প্রশাসনের তরফে জানা যাচ্ছে, হিন্দুদের ধর্মীয় আস্থার অন্যতম প্রতীক যমুনা পরিষ্কার করতে মূলত চারটি রণনীতি ব্যবহার করা হবে। প্রথমত, নদীতে জমে থাকা ময়লা, জঞ্জাল পরিষ্কার করা হবে। নদীর নব্যতা বাড়াতে তোলা হবে দীর্ঘ বছর ধরে জমে থাকা পলি। দ্বিতীয়ত, যমুনায় যে সব নালা ও নর্দমা এসে মিশেছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নজফফরগড় নালা, সাপ্লিমেন্ট্রি নালা ও অন্যান্য নর্দমাগুলিকে পুরোপুরি সাফাই করে নতুন রূপ দেওয়া হবে। তৃতীয়ত, পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগারগুলির (এসটিপি) ক্ষমতা ও কার্যকারিতা নিয়মিত যাচাই করে দেখা হবে। এবং চতুর্থ রণনীতি হল, দৈনিক প্রায় ৪০০ এমজিডি (মিলিয়ন গ্যালন) পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার ঘাটতি পূরণের জন্য নতুন এসটিপি/ ডিএসটিপি নির্মাণ করা হবে।
নির্বাচনী প্রচারেই বিজেপির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল ক্ষমতায় আসার পর তিন বছরের মধ্যেই যমুনাকে পরিষ্কার করা হবে। সেই লক্ষ্যমাত্রা নিয়েই গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে একসঙ্গে কাজ করবে দিল্লি জল বোর্ড, সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগ, পৌর কর্পোরেশন, পরিবেশ বিভাগ, গণপূর্ত বিভাগ এবং দিল্লি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সহ বেশ কয়েকটি সংস্থা। শুধু তাই নয়, কারখানা গুলির বর্জ্য যাতে যমুনায় না মেশে তার উপর কড়া নজর রাখবে দিল্লি দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.