Advertisement
Advertisement

Breaking News

শ্লীলতাহানির পর দুই যুবতীকে ‘অপহরণ’, রাতের শহরে শাটল আতঙ্ক

পুলিশের তাড়ায় গ্রেপ্তার চালক।

2 Women molested by Cab driver
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:January 6, 2019 8:41 pm
  • Updated:January 6, 2019 8:41 pm

অর্ণব আইচ: চলন্ত গাড়ির ভিতর থেকে ‘হেল্প হেল্প’ চিৎকার দুই যুবতীর। শুনে রাস্তার ধারে দোকানদাররা সহজেই বুঝতে পেরেছিলেন যে, বিপদে পড়েছেন দু’জন। তখন দক্ষিণ কলকাতার কবরডাঙা থেকে নেপালগঞ্জে যাওয়ার আধো অন্ধকার ধরে রুদ্ধশ্বাসে ছুটে চলেছে গাড়িটি। যুবতীদের বাঁচাতে পিছনে বাইক নিয়ে গাড়িটিকে তাড়া করেছেন এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা।

শনিবার রাতের শহরে দেখা গেল এই দৃশ্য। যদিও এভাবে কিলোমিটার দু’য়েক যাওয়ার পরই অনেকটা সিনেমার কায়দায় তাড়া করে বাইক আরোহী ও হরিদেবপুর থানার পুলিশের টহলদার গাড়ির হাতে ধরা পড়ে যায় ‘অপহরণকারী’ চালক। উদ্ধার হন দুই যুবতী। রাতের কলকাতায় শাটল গাড়ির মধ্যে দুই মহিলা আরোহীর শ্লীলতাহানি মদ্যপ চালকের। প্রতিবাদ করতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন একজন। আতঙ্কে গাড়ির দরজা খুলে ফেলায় তাঁর পায়েও আঘাত লাগে। গাড়িতে থাকা দুই যুবতী চিৎকার করতে শুরু করলে বেগতিক বুঝে অন্য রাস্তা দিয়ে তাঁদের ‘অপহরণ’ করে নিয়ে যায় ওই চালক। শেষ পর্যন্ত শ্লীলতাহানি ও ‘অপহরণ’-এর অভিযোগে হরিদেবপুর থানার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে গাড়ির চালক কানাই দাস।

Advertisement

পুলিশের মতে, শাটল গাড়ি নিয়ে এর আগেও বিভিন্ন সময় পুলিশের পক্ষ থেকে শহরবাসীকে সতর্ক করা হয়েছে। বাইপাস-সহ শহরের কিছু জায়গায় শাটল খাটার অভিযোগে অনেক গাড়ি ধরাও পড়েছে। তবু বহু চালক সুযোগ পেলেই তাঁর গাড়ি শাটলের জন্য ব্যবহার করেন। পুলিশের মতে, আরও বিপদ বাড়ছে। এই ঘটনার পর শাটলের বিষয়ে পুলিশ আরও সতর্ক হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাতে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড থেকে হরিদেবপুরের মহাত্মা গান্ধী রোড ধরে কবরডাঙা যাওয়ার অটো বন্ধ হয়ে যায়। তাই প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের উপর গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন অনেক যাত্রী। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অভিযোগকারিণী দুই যুবতী। তাঁরা কবরডাঙার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে এক যুবতী একটি শপিং মলের কর্মী। রাত সাড়ে ন’টার পর তিনিও শপিং মল থেকে বেরিয়ে রাস্তায় গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। একটি গাড়ি তাঁদের সামনে এসে দাঁড়ায়। চালক জানায়, গাড়িটি কবরডাঙায় যাবে। গাড়িতে ৯ জন আরোহী ওঠেন। হরিদেবপুরের ক্যাওড়াপুকুর বাজারের কাছে সাতজনই নেমে যান। গাড়িতে চালকের পাশের আসনে বসে ছিলেন এক যুবতী। অন্য যুবতীটি বসে ছিলেন গাড়ির পিছনের সিটে।

Advertisement

[বালিগঞ্জে যৌথ পরিবারে বিকৃত যৌনাচার, দুই জা-কে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করবে পুলিশ]

সামনের সিটে যিনি বসে ছিলেন, সেই যুবতীর অভিযোগ, মিশন পার হওয়ার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে অভব্য আচরণ শুরু করে শাটল গাড়ির চালক। মদ্যপ অবস্থায় সে তাঁর উদ্দেশে কুরুচিকর মন্তব্য করতে থাকে। যুবতী প্রতিবাদ করে ওঠেন। পিছন থেকে অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদ করে উঠে পিছনের সিট থেকে চেঁচিয়ে গাড়ি থামাতে বলেন অন্য যুবতীও। গাড়ি থামানোর বদলে গতি বাড়িয়ে দেয় শাটল চালক। হরিদেবপুর থানার সামনে দিয়ে প্রচণ্ড গতিতে গাড়িটি কবরডাঙায় নিয়ে যায় সে। গাড়ি না থামিয়ে কবরডাঙা থেকে জুলপিয়া রোড ধরে নেপালগঞ্জের দিকে গাড়ি চালাতে শুরু করে চালক। তার পাশে বসা যুবতী আতঙ্কে চলন্ত গাড়ির দরজা খুলে নামার চেষ্টা করেন। তখন রাস্তার পাশে অন্য একটি গাড়ির সঙ্গে দরজাটির ধাক্কা লাগে। অন্য গাড়ির চালক চিৎকার করে ওঠেন। এর পর গতি আরও বেড়ে যায় গাড়ির। এদিকে, গাড়ির দরজা যুবতীর পায়ে লাগে। এই আঘাতের ফলে যন্ত্রণায় কঁকিয়ে ওঠেন যুবতী। উপায় না দেখে তিনি ও অন্য যুবতী গাড়ির জানালা থেকে ‘হেল্প হেল্প’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। কিন্তু চালক গাড়ির গতি বাড়িয়ে আধো অন্ধকার রাস্তা দিয়ে দুই যুবতীকে নিয়ে যেতে থাকে। তাঁদের চিৎকার শুনে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বাইক নিয়ে গাড়িটিকে তাড়া করেন। রাস্তায় ছিল পুলিশের টহলদার গাড়ি। মহিলাদের চিৎকার শুনে পুলিশও গাড়িটিকে তাড়া করে। দু’কিলোমিটার এভাবে তাড়া করার পর পুলিশ গাড়িটিকে ধরে ফেলে। ততক্ষণে চালক মহিলাদের রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে। রাতেই যুবতী হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। চালককে গ্রেপ্তার করে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ