Advertisement
Advertisement
জগন্নাখ ঘাটের কাছে অগ্নিকাণ্ড

আগুন দেখে মধ্যরাতে কালী মাসির চিৎকার, বাঁচল ২৩টি প্রাণ

অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই জগন্নাথ ঘাটের রাসায়নিক গুদাম৷

Alert woman saves several lives from Jagannath Ghat fire
Published by: Sayani Sen
  • Posted:June 8, 2019 5:59 pm
  • Updated:June 8, 2019 5:59 pm

অর্ণব আইচ: কালী মাসিকে এখন সবাই খুঁজছেন। কালী মাসির জন্যই বাঁচানো গিয়েছে অনেকগুলো প্রাণ। তিনিই তো পরিত্রাতা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। কারণ, কালী মাসী চিৎকারেই বেঁচে গেল বহু প্রাণ। শনিবার সকালে ঝুপড়ির সবাই কালী মাসিকেই দেখিয়ে দিলেন। বছর পঞ্চাশেক বয়স। কিন্তু তাঁর উপস্থিত বুদ্ধির জন্য বেঁচে গিয়েছে বহু পরিবার। ঝুপড়ির বাসিন্দা অন্তত ২৩ জন মারা যেতে পারতেন। সবার ভালাবাসা ও উৎসাহে তাঁকে খুঁজে পাওয়াই মুশকিল হয়ে পড়েছে।

[ আরও পড়ুন: শহরের বাতাস পরিশুদ্ধ করতে বিশ্বমানের এয়ার পিউরিফায়ার বসাবে কলকাতা পুরসভা]

অন্য অনেকের মতোই ঘুমিয়ে ছিলেন কালী মাসি। কিন্তু সবাই যখন অকাতরে ঘুমোচ্ছেন, তখনই কালী মাসির এক চিৎকার সবাইকে সজাগ করে দিয়েছেন। জগন্নাথ ঘাট এলাকার ঠিক যেখানে আগুন লেগেছিল, তার কাছেই নিজের ঝুপড়ির বাইরে ঘুমোচ্ছিলেন তিনি। সারাদিন পিঁয়াজ বিক্রি করেছেন। রাতে ঘুমোতে বেশি দেরি করেননি। স্বামী মাধাই মণ্ডল মুটের কাজ করেন। ওই পরিবার প্রায় ২৫ বছর ধরে ওখানে থাকে। ছেলে-বউমা ও নাতিকে নিয়ে সংসার। স্বামীও বাইরের খাটিয়াতে শুয়ে ছিলেন। তবে ছেলে শুভঙ্কর ও বউমা ন’মাসের নাতি সুরজকে নিয়ে ঘরের ভিতরেই ছিলেন। ছেলে শুভঙ্কর একটি বরফের দোকানে কাজ করেন। রাত আড়াইটে নাগাদ আচমকা বাঁশ ফেটে যাওয়ার মতো এক প্রকাণ্ড শব্দে ঘুম ভেঙে যায় কালী মাসির। চোখ মেলে তাকাতেই তিনি দেখেন, পাশের ঘর থেকে আগুন যেন ছুটে আসছে। চিৎকার করতে থাকেন তিনি। ‘ওরে, কে আছিস। সবাই বাইরে বেরিয়ে পড়। আগুন!’ কালী মাসির চেনা গলায় চিৎকার শুনে সবাই বাইরে বেরিয়ে আসেন। রেল গেটের দিকে দৌড়তে থাকেন ওঁরা।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: হায় ঈশ্বর! মূর্তি বসাতে পরীক্ষা পিছোল বিদ্যাসাগর কলেজে]

শুভঙ্কর ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বললেন, “যে যে অবস্থায় ছিলাম, ছুটে আসি। আমার ছেলের বার্থ সার্টিফিকেট বা ভোটার কার্ড কিছুই বের করে আনতে পারিনি। টাকাও ভিতরেই রয়ে গিয়েছে।” কোনওরকমে ছেলের জন্য প্যাকড দুধ জোগাড় করেছেন। সেটাই খাওয়াচ্ছেন ছেলেকে। তবে শুভঙ্কর এটাও বলেছেন, “মায়ের জন্য সবাই রক্ষা পেয়েছি। আমি, বাবা সবাই মিলে খেটে আবার টাকা রোজগার করতে পারব। জীবন তো বাঁচাতে পেরেছি।” চাদর খাটিয়ে বাইরেই বসেছিলেন রাজু, সিকান্দররা। ওঁরাও ধন্যবাদ দিচ্ছেন কালী মাসিকে। স্বামী মাধাই বাইরে ঘুমিয়ে থাকলেও বিন্দুমাত্র টের পাননি। তিনি গর্বিত তাঁর স্ত্রীয়ের জন্য।

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ