Advertisement
Advertisement
আমফান

আমফানের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত কলকাতা, রাতভর কাজ করে শহরকে স্বাভাবিকের চেষ্টায় পুলিশ

আমফানের তাণ্ডবের জেরে শহরে মৃত ৩।

Amphan effect, kolkata police are trying to control the situation of city
Published by: Sucheta Chakrabarty
  • Posted:May 21, 2020 9:48 am
  • Updated:May 21, 2020 9:03 pm

অর্ণচ আইচ: আমফানের (Amphan) জেরে বিধ্বস্ত কল্লোলীনি কলকাতা। গাছ উপড়ে গোটা শহরের নাকাবন্দি দশা। ঝড়ের তাণ্ডবে বুধবার বিকেল থেকেই শহরের বেশ কিছু স্থানে বন্ধ বিদ্যুৎ পরিষেবা। হাতে বৈদ্যুতিক করাত, চেন করাত নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের কর্মীরা। রাতে বৃষ্টি একটু কমতেই রাস্তায় নেমে পড়লেন তাঁরা, সঙ্গে পুরকর্মীরাও। ঝড়ে লন্ডভন্ড শহরে উদ্ধারকাজের শুরুতেই সমস্যায় পড়ে পুলিশ। তবুও রাত জেগে শুধু তছনছ হয়ে যাওয়া শহরকে তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক করার মরিয়া চেষ্টায় পুলিশ কর্মীরা।

আমফান দেখছি যে আয়লার থেকেও সাংঘাতিক। থানার সামনে দাঁড়িয়ে ঝড়ে দাপাদাপি করতে থাকা গাছগুলির দিকে তাকিয়ে বলছিলেন এক পুলিশ আধিকারিক। আয়লার সময় দিনের বেলায় রাস্তা পরিষ্কার করার সুযোগ পেয়েছিল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ। কিন্তু আমফানে প্রচণ্ড ঝড়ের সঙ্গে টানা বৃষ্টির ফলে বাইরে বের হতেই পারেননি পুলিশ ও ডিএমজি। তাই কোথায় কোথায় গাছ বা লাইটপোস্ট পড়েছে, তা শনাক্ত করতেই সময় লাগে। তার উপর শহরের বহু জায়গায় জমে যায় জল। তাই সমস্যায় পড়েন ডিএমজি কর্মীরা। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সদর) শুভঙ্কর সিংহ সরকার জানান, “কলকাতার কোনও রাস্তা যাতে বন্ধ না হয়ে থাকে, সেই ব্যবস্থা নিচ্ছে ডিএমজি।” পুলিশ জানিয়েছে, “বুধবার সকাল থেকে বিকেল সাড়ে তিনটে পর্যন্ত কলকাতায় ২৭টি গাছ পড়ে। এর পর বাড়তে শুরু করে ঝড়ের তান্ডব।” এক পুলিশ কর্তা জানান যে, শুধু পূর্ব কলকাতায় ২৮টি জায়গায় গাছ ও লাইটপোস্ট পড়েছে বলে সন্ধ্যায় তাঁদের কাছে খবর আসে। এ ছাড়াও শহরের অন্যান্য জায়গায় গাছ ও লাইটপোস্ট পড়েও বিপর্যয় ঘটে। কলেজ স্ট্রিটে ছিঁড়ে যায় ট্রামের তার। গড়িয়াহাট থেকে শুরু করে উল্টোডাঙা বা মানিকতলা, অনেক জায়গায় লাইটপোস্ট ভেঙে গিয়েও জ্বলতে থাকে। ছিঁড়ে পড়ে বিদ্যুতের তার। পুলিশের পক্ষ থেকে খবর দেওয়া হয় সিইএসসিকেও। উত্তর মধ্য দক্ষিণ কলকাতায় বিভিন্ন জায়গায় বন্ধ হয়ে যায় রাস্তা। বিশেষ করে রবীন্দ্র সরোবর এলাকায় ভেঙে পড়েছে বেশ কিছু গাছ। অনেক বহুতল থেকে কাচ ভেঙে পড়ে। গোলপার্ক-এ পুলিশের গাড়ির উপর ভেঙে পড়ে গাছ। এ ছাড়াও শহরজুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কিছু গাড়ি। বৃষ্টি থামতেই ডিএমজির কর্মীরা গাছ কাটার যন্ত্রপাতি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন। যদিও বাধা হয়ে দাঁড়ায় রাস্তায় জমে থাকা জল। তার উপর কয়েকটি জায়গায় বট গাছের ডাল পড়েও সমস্যা সৃষ্টি হয়। কারণ বটগাছের আঠায় করাতের চেন আটকে যায়। যদিও এই সমস্যাকে বড় কর দেখতে নারাজ ডিএমজির এক কর্তা। তিনি জানিয়েছেন, “বড় ধরনের বিপর্যয় হয়েছে। কিন্তু শহরকে তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক করে তুলতে হবে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে যাতে শহরের সব রাস্তায় স্বাভাবিকভাবে যান চলাচল করতে পারে। সেই ব্যবস্থাই করা হচ্ছে।”

Advertisement

[আরও পড়ুন:রাজ্যে আমফানের প্রথম বলি হাওড়ার কিশোরী, প্রাণহানি বসিরহাটেও]

অন্যদিকে আমফানের তাণ্ডবের জেরে কলকাতায় মৃত তিন। রিজেন্ট পার্ক থানা সংলগ্ন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দেওয়াল ভেঙে পড়ে মারা যান এক বৃদ্ধা ও তাঁর ছেলে। মা ও দুই ছেলের উপর রাতে ভেঙে পড়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর পাঁচিল। বড় ছেলে প্রাণে বাঁচলেও মারা যায় মা ও ছোট ছেলে পিন্টু বিশ্বাস। তালতলা লেনে নুর আলি লেনের বাসিন্দা মহম্মদ তৌফিক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন। তাই শহর থেকে দ্রুত আমফানের বিধ্বংসী রূপ সরাতে ব্যস্ত পুলিশ ও পুরকর্মীরা।

Advertisement

দেখুন ভিডিও:

[আরও পড়ুন:উড়ল ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফেন্সিং, আমফানের মাঝেই বাঘের হানার আতঙ্কে কাঁটা সুন্দরবন]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ