সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভুল ইনজেকশনে মাত্র আড়াই বছরের এক শিশুকন্যার মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তাল আমরি মুকুন্দপুর হাসপাতাল। ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তো আমরি কর্তৃপক্ষ মানতে চায়নি, উলটে বেসরকারি হাসপাতালটির ইউনিট হেড জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায় মৃতার পরিবারকে রীতিমতো হুমকি দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত চাপের মুখে পড়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন মূল অভিযুক্ত।
জানা গিয়েছে, গত সোমবার মুকুন্দপুরের আমরি হাসপাতালে ভরতি হয়েছিল কামালগাজির আড়াই বছরের ঐত্রী দে। বুধবার সকালে একটি ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরই শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। কিছুক্ষণ পরই মারা যায় সে। ঘটনার পর হাসপাতালে চত্বরে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পরিবারের লোকেরা। ইউনিট হেড জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায়ের সামনেও বিক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতা শিশুকন্যার পরিবার। তখনই জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায় মৃতা শিশুটির পরিবারের উপর হম্বিতম্বি শুরু করেন বলে অভিযোগ। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনেই রীতিমতো হুমকি দেন জয়ন্তী। বলেন, ‘এখানে মস্তানি করবেন না। আমার চেয়ে বড় মস্তান কেউ নেই।’ এখানেই শেষ নয়, মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে পালটা হাত মুচড়ে দেওয়ার তত্ত্বও খাঁড়া করেছেন হাসপাতালের ইউনিট হেড।
হুমকি শুনে ক্ষোভে ফেটে পড়ে শিশুটির পরিবার। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, একজন সন্তাহারা মা’কে এই ভাষায় কী করে হুমকি দিতে পারেন হাসপাতালের এক কর্ত্রী? শিশুমৃত্যুর অভিযোগে এদিনই আমরি হাসপাতালে বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে মৃতের পরিবারের লোকেরা। জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্যের পর আরও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালে। এক সন্তানহারা মাকে অকথ্য ভাষায় শাসানির অভিযোগে জয়ন্তীর পদত্যাগ দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁকে গ্রেপ্তারির দাবি ওঠে। একা তিনিই নন অবশ্য, আমরির অন্যান্য আধিকারিকরাও এদিন শোকার্ত পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর পুরোটাই ঘটেছে সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে। উত্তেজনা বাড়তে থাকায় শেষ পর্যন্ত চাপের মুখে পড়ে কান ধরে ক্ষমা চেয়ে নেন মূল অভিযুক্ত। অবশ্য তিনি সত্যি ক্ষমাপ্রাথী নাকি স্রেফ লোক দেখানো নাটক করলেন, সেই নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। এই প্রথম নয় অবশ্য, এই রাজ্যে বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এর আগেও রোগীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী একাধিক জনসভায় এই নিয়ে সতর্ক করার পরও অমানবিক প্রবণতায় যে রাশ টানা যায়নি, তা এদিনের ঘটনা থেকে ফের স্পষ্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.