Advertisement
Advertisement

Breaking News

অরবিন্দ কেজরিওয়াল

‘৬০-৬২টা আসনে জিতব’, আইআইটি’র সহপাঠীদের আশ্বস্ত করেছিলেন কেজরিওয়াল

দিল্লির মসনদে প্রিয় বন্ধুর হ্যাটট্রিকে অন্য সহপাঠীরাও চমকিত।

Arvind Kejriwal assured IIT mates of 60-62 seat win
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:February 12, 2020 9:13 pm
  • Updated:February 12, 2020 9:13 pm

গৌতম ব্রহ্ম: খবরটা শোনা ইস্তক গত বছরের রি-ইউনিয়নের কথাটা মনে পড়ে গিয়েছিল। টানা ছত্রিশ ঘণ্টা বন্ধুদের সঙ্গে কাটিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল। বাসে চেপে এসেছিলেন। একজনও নিরাপত্তারক্ষী ছিল না। ছিল না লালবাতি গাড়ি। এবং ‘কেজরি’ তখনই সাফ জানিয়ে গিয়েছিল, ফের দিল্লিতে সরকার করবে আপ। আসন পাবে ষাট-বাষট্টিটা। “ও এমনই।”- এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে একটু থামলেন অমিতাভ ভট্টাচার্য। আইআইটি’তে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ব্যাচমেট। দু’জনেই খড়গপুর আইআইটিতে ’৮৫ থেকে ’৮৯ পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। কেজরিওয়াল থাকতেন নেহরু হলে, পড়তেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। মাইনিং পড়ুয়া অমিতাভের ঠিকানা ছিল প্যাটেল হল। দিল্লির মসনদে প্রিয় বন্ধুর হ্যাটট্রিকে ওঁর মতো অন্য সহপাঠীরাও চমকিত, পুলকিত।

অধুনা গল্ফগ্রিনের বাসিন্দা অমিতাভবাবুকে মঙ্গলবার বিকেলে যখন ফোনে ধরা গেল, দিল্লি নির্বাচনে আম আদমি পার্টির নিরঙ্কুশ জয়ের ছবিটা মোটামুটি পরিষ্কার। প্রাক্তন কর্পোরেট কর্তা, বর্তমানে স্বনিয়োজিত অমিতাভবাবু উৎফুল্ল প্রতিক্রিয়া, “মাসখানেক আগে হায়দরাবাদে আমাদের ’৮৯ ব্যাচের গেট টুগেদার ছিল। দিল্লির ভোট অ্যানাউন্স হয়ে যাওয়ায় কেজরি যেতে পারেনি। কিন্তু ফোনে কথা হয়েছিল। তখনও বলেছিল, ষাট-বাষট্টি সিট হেসেখেলে পাবে। “ও বরাবর এমন। নির্ভুল অনুমান করতে পারে। জেদি, ফোকাসড।” মন্তব্য সহপাঠীর। এ-ও জানালেন, আপের প্রাণপুরুষ নাট্যমোদী ও তুখোড় অভিনেতাও বটে। আইআইটি’তে বাদল সরকারের ‘ভোমা’ নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ১৬ ফেব্রুয়ারি শপথ নেবেন কেজরিওয়াল, বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ঘোষণা]

আইআইটি পাশ করে কেজরিওয়াল কেন্দ্রীয় আমলা হিসাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দফতর সামলেছেন। সামনে থেকে দেখেছেন দুর্নীতিকে। তখনই মনে মনে সংকল্প করেছিলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়বেন। “আন্না হাজারের সঙ্গে জোট বেঁধে আন্দোলন সেই জেদেরই পরিণতি।”- জানাচ্ছেন অমিতাভবাবু, “আমরা ওকে সরাসরি রাজনীতিতে নামতে বারণ করেছিলাম। শোনেনি। বলেছিল, সিস্টেমের বাইরে থেকে সিস্টেমকে বদলানো যায় না।” ওঁর পর্যবেক্ষণ, “কেজরি ভারতকে নতুন দিশা দেখাল। বিজেপি-বিরোধী দলগুলিকে নতুন অক্সিজেন দিল।”

Advertisement

বন্ধুর সাফল্যে কেজরিওয়ালের আর এক আইআইটি-মেট সৈকত সরকারও বিলক্ষণ খুশি। এক বছরের সিনিয়র হলেও যিনি কেজরির সঙ্গে নেহরু হলে থাকতেন। প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর কেজরিওয়াল দক্ষিণ কলকাতায় হাইল্যান্ড পার্কে সৈকতবাবুর বাড়িতেও এসেছিলেন। সেদিনের আড্ডায় ছিলেন কেজরির আর এক ব্যাচমেট তথা ২০১১-র ম্যাগসাইসাই পুরস্কারজয়ী হরিশ হান্ডেও। “জমিয়ে আড্ডা হয়েছিল। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও আমাদের আড্ডা চলে।”-  জানাচ্ছেন সৈকতবাবু। বললেন, “কেজরি বরাবরই আড্ডাবাজ। বন্ধু অন্ত প্রাণ। ওঁর ডাকে দু’বার রামলীলা ময়দানে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। এবারও চেষ্টা করব।”

বন্ধুরা একবাক্যে জানিয়েছেন, কেজরি যেমন ছিল, তেমনই আছে। মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি ওর মধ্যে একতিলও বদল আনতে পারেনি। নিপাট সাদামাটা জীবনযাত্রা। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও নিয়মিত বাড়ি ফিরে ছেলেমেয়েদের পড়িয়েছেন।” অমিতাভবাবুর কথায়, “বারবার বলছিল ওর অফিসে যেতে। ক’দিন আগে গিয়েছিলাম। একটু সঙ্কোচই হচ্ছিল। হাজার হলেও সিএম! ও বাবা! অফিসের সবাইকে ছুটি করে দিয়ে আমার সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা মারল!”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ