Advertisement
Advertisement

Breaking News

ভোঁতা বনধে পথে নামায় পাশে মন্ত্রী, আমজনতাকে মিষ্টিমুখ ‘কাছের মানুষ’ ব্রাত্যর

বামেদের গোল্লা দিলাম, সহাস্য মন্তব্য রাজ্যের মন্ত্রীর।

Bangla Bandh: TMC minister distributes sweets at Dum Dum station
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:April 13, 2018 4:46 pm
  • Updated:January 10, 2019 4:06 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাতসকালে দমদম রোড ধরে বাজারের দিকে হেঁটে চলেছেন তিনি। পরনে ঘিয়ে রঙের পাঞ্জাবি আর সাদা পায়জামা। তবে একা নন। রয়েছেন কয়েকজন সঙ্গী। তাঁদের হাতে আবার একটা করে রসগোল্লার হাঁড়ি। তারপর রাস্তার ধারে বসা সবজিওয়াল, রিকশচালক থেকে শুরু করে আম পথচারী। প্রত্যেককে দেখে সুপ্রভাত, শুভেচ্ছা বিনিময় পর্ব চলছে। তারপরেই মিষ্টিমুখ। শুক্রবার সকালে এক অন্য বিধায়ককে দেখল দমদমবাসী। বামেদের ডাকা ৬ ঘণ্টার প্রতীকী বনধকে ব্যর্থ করার ডাক দিয়েছিল রাজ্য সরকার। তাই এদিন বনধকে উপেক্ষা করে বিক্রেতা থেকে সাধারণ মানুষকে উৎসাহ দিতেই এমন পরিকল্পনা নেন বিধায়ক তথা রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু। খোদ বিধায়কের হাতে মিষ্টিমুখ করে বেজায় খুশি আমজনতা।

 

Advertisement

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বামেরা। কিন্তু হাই কোর্টের দরজা দেখিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। তখন রাজ্যে ৬ ঘণ্টার প্রতীকী বনধ ডাকে ১৭টি বামদল। তবে শুক্রবার ভোর ছ’টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত বামেদের এই টি-টোয়েন্টি বনধকে ভোঁতা করতে আসরে নেমে পড়ে শাসকদল তৃণমূল। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে দাঁড়িয়ে বুধবার সাফ জানিয়ে দেন, বনধ-টনধ হবে না। কর্মসংস্কৃতি সচল থাকবে বাংলার। সেই নির্দেশ মেনেই পথে নেমেছিলেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। কিন্তু সবার থেকে আলাদা চিন্তাভাবনা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর। রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্যবাবু নাট্যজগতেরও লোক। আগেই জানিয়েছিলেন বনধ ব্যর্থ করতে পথে নামবেন তিনি। নেমেওছিলেন এদিন। কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ইন্দিরা ময়দানের দলীয় কার্য়ালয় থেকে হাঁটতে শুরু করেন। রাস্তার দু’ধারে ক্রেতা-বিক্রেতা, পথচারী, রিকশচালক, অটোচালক প্রত্যেককেই রাস্তায় নামার জন্য় রসগোল্লা খাইয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ব্রাত্যবাবু। তারপর হাঁটতে হাঁটতে দমদম স্টেশন পর্যন্ত চলে যান। তারপর দমদমের স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে নিত্যযাত্রীদের মিষ্টিমুখ করান মন্ত্রী। তাঁর এহেন সৌজন্যে কিছুটা হতবাক সাধারণ মানুষ। আবার অভিভূতও বটে।

সাধারণত জনপ্রতিনিধি সম্পর্কে নানা মানুষের নানা মত থাকে। নানান অভিজ্ঞতাও থাকে। আসলে রাজনীতিতে কাজের মানুষ, কাছের মানুষ এই পঙক্তিটাই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। কাজের বেলায় কাজি, কাজ ফুরোলেই পাজি গোছের ব্যাপার। ভোটের রাজনীতিতে জনতা ভোটের আগে জনার্দন, আর তা মিটলেই আমের আটি। তাঁদের কথা শোনার জন্য নেতা-মন্ত্রীদের পাওয়াই যায় না। এলাকার কাউন্সিলরেরই অভিব্যক্তি বদলে যায়, নেতা-বিধায়ক তো অনেক দূরের ব্যাপার। আর যেভাবে পঞ্চায়েত ভোটের আগেই বাজার গরম করতে জনপ্রতিনিধিরা কুবাক্য ব্যবহার করছেন, তাতে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সম্পর্কে জনমানসে খারাপ ভাবমূর্তি তৈরি হচ্ছে। অসবের মাঝে দাঁড়িয়ে ব্রাত্য বসু যেন সজীব বাতাস নিয়ে এলেন। রাজনৈতিক হিংসা-হানাহানির বাতাবরণে মেঘ সরিয়ে বৃষ্টি আনলেন যেন। এর আগেও একবার বনধের সময় রাস্তায় নামা মানুষকে গোলাপফুল দিয়ে ভালবাসা জাহির করেছিলেন। অনেকেই বলবেন, নেপথ্যে দলীয় কর্মসূচি সিদ্ধি। কিন্তু যে উদ্দেশ্যেই হোক, সাধারণ মানুষকে মিষ্টিমুখ করিয়ে, গোলাপফুল দিয়ে নিজেকে কাছের মানুষ প্রমাণ হিসাবে তুলে ধরায় কোনও অপরাধ আছে কি?

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ