Advertisement
Advertisement

Breaking News

সুর

ওটিতে সুর-চিকিৎসা! বিশ্বরেকর্ড গড়লেন বাগুইআটির অর্থোপেডিক সার্জন সুমন্ত ঠাকুর

অস্ত্রোপচারের সময় ফুল বডি অ্যানেস্থেশিয়া না করে মিউজিক থেরাপির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।

Bengal's orthopedic surgeon gets global recognition for music therapy.
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:July 18, 2019 7:19 pm
  • Updated:July 18, 2019 7:19 pm

গৌতম ব্রহ্ম: বাঁ হাতে অস্ত্রোপচার চলছে। ডান হাত তাল তুলছে দারবুকায়। পায়ে অস্ত্রোপচার চলাকালীন রোগী ডুবকি বাজিয়ে গান ধরেছেন। হিপ জয়েন্টের মতো ম্যারাথন অপারেশনও কণ্ঠরোধ করতে পারেনি অশীতিপর বৃদ্ধার। কোথায় টেনশন, কোথায় ভয়! রক্তে মাখামাখি অপারেশন থিয়েটার হয়ে উঠছে রিহার্সাল রুম। পর্দার ওপারে অপারেশন। সার্জনের কাটাছেঁড়া। এপারে সুরের মহড়া।

[আরও পড়ুন- মেট্রোয় জোর করে ওঠার চেষ্টা, প্রথমবার জরিমানা ভিনরাজ্যের যাত্রীর]

অনেকদিন ধরেই এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন বাগুইআটির একটি বেসরকারি নার্সিংহোমের সহ-অধিকর্তা অর্থোপেডিক সার্জন ডাঃ সুমন্ত ঠাকুর। শল্য চিকিৎসার সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছেন সুরের মায়াজাল। তাতেই নাকি ম্যাজিক হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে অস্ত্রোপচারের জায়গাটুকু অবশ করলেই কাজ হয়ে যাচ্ছে। ‘ফুল বডি অ্যানেস্থেশিয়া’ করার দরকার হচ্ছে না। ফলে অস্ত্রোপচার পরবর্তী জটিলতা অনেক কম। খরচও কমছে। এমনই দাবি সুমন্তর।

Advertisement

ডাঃ ঠাকুরের এই সুর, শল্যচিকিৎসার জাদু এবার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল। নির্বাচিত হল ‘ইউআরএফ গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ড, ২০১৯’-এর জন্য। সম্প্রতি ‘ইউনিভার্সাল রেকর্ড ফোরাম’ (ইউআরএফ)-এর তরফে ভাইস প্রেসিডেন্ট শুভদীপ চট্টোপাধ্যায় ও মিডিয়া ইনচার্জ উদয়ন বিশ্বাস সুমন্তবাবুর হাতে শংসাপত্র ও স্মারক তুলে দেন। উদয়ন জানালেন, “মিউজিক থেরাপির এমন ব্যবহার সুমন্তর আগে কেউ করেননি। তাই এই স্বীকৃতি।” আর সুমন্তর পর্যবেক্ষণ, “মিউজিক আমাদের শরীরের ‘লিম্বিক সিস্টেম’-কে প্রভাবিত করে। শরীরে এমন কিছু হরমোনের ক্ষরণ বাড়ায় যাতে ব্যথার প্রকোপ ও উদ্বেগ কমে। সেটাই প্রমাণ করার চেষ্টা করছি।”

Advertisement

[আরও পড়ুন- শাসানো হয়েছে মাধবী মুখোপাধ্যায়কে, পরোক্ষে তৃণমূলকে তোপ বঙ্গীয় চলচ্চিত্র পরিষদের]

এখনও পর্যন্ত একশোরও বেশি রোগীর উপর পরীক্ষা চালিয়েছেন সুমন্ত। ৫০ জন রোগীকে অস্ত্রোপচারের আগে ‘লোকাল অ্যানেস্থেশিয়া’, ‘রিজিওনাল ব্লক’ ও ‘স্পাইনাল অ্যানেস্থেশিয়া’ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শোনানো হয়েছে পছন্দসই মিউজিক বা গান। বাকি ৫০ রোগীকে ‘ফুল অ্যানেস্থেশিয়া’ করা হয়েছে। সুমন্তর দাবি, মিউজিক থেরাপি হওয়া প্রথম ৫০ জনের মধ্যে ৪৩ জনের উপর সুর-তালের সদর্থক প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। তাঁদের রক্তচাপ, নাড়ির স্পন্দন, হৃদস্পন্দন ‘ফুল অ্যানেস্থেশিয়া’ হওয়া রোগীদের তুলনায় অনেক ভাল। পরীক্ষালব্ধ পর্যবেক্ষণকে সম্প্রতি একটি সেমিনারেও তুলে ধরেন সুমন্ত। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডাঃ টি ভি সাইরাম, কল্যাণ সেন বরাট, অগ্নিভ বন্দ্যোপাধ্যায়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দীপক ঘোষ প্রমুখ। প্রত্যেকেই একবাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন, ডাক্তারবাবুরা যদি প্রেসক্রিপশনে এবার থেকে ওষুধের সঙ্গে একটু-আধটু সুরের দাওয়াই লেখেন, তবে রোগ নিয়ে রোগীদের ভীতি অনেকটাই কমবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ