Advertisement
Advertisement
বিজেপি

লোকসভার ফর্মুলাতেই ‘মিশন ২০২১’, বিধানসভা জয়ের নয়া রুটম্যাপ বঙ্গ বিজেপির

পুজোর পরেই ময়দানে নামছেন দিলীপ-কৈলাস-মুকুলরা৷

BJP is planning a new strategy for Bidhansava Poll in West Bengal

ফাইল ছবি

Published by: Tanujit Das
  • Posted:June 7, 2019 9:10 am
  • Updated:June 7, 2019 2:13 pm

সুদীপ রায়চৌধুরি ও রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: ৪২-এর মধ্যে ১৮। সাফল্যের হার প্রায় ৪৫ শতাংশ। বৃদ্ধির হার একলাফে ৯ গুণ।পরিসংখ্যানের নিরিখে এবারের লোকসভা নির্বাচনে এটাই রাজ্য বিজেপির মার্কশিট। চোখ ধাঁধানো এই রেজাল্টের কারণে নয়াদিল্লির পণ্ডিত দিনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বাংলার নেতাদের আজ বেজায় কদর!

[ আরও পড়ুন: নম্বর বিভ্রাট! মমতা ভেবে তৃণমূলের নেতাকে ঘনঘন ফোনে উত্যক্ত বিজেপি কর্মীদের ]

Advertisement

কিন্তু এই ঝকঝকে মার্কশিটের পিছনে রয়েছে টানা তিন থেকে চার বছর ধরে বহু পরিশ্রমের কাহিনি। চৈত্র-বৈশাখের প্রবল দাবদাহ ছিল। ছিল প্রতিপক্ষের তৈরি প্রশাসনিক ব্যারিকেড। কিন্তু সেসব বাধা টপকে দিনের পর দিন নিখুঁত অঙ্ক কষে তৈরি রণকৌশল অনুযায়ী নিঃশব্দে একের পর এক ‘টার্গেট’ পেরিয়ে গিয়েছেন মোদি-অমিত শাহর বেছে নেওয়া ভোট ম্যানেজাররা। নিঃশব্দে পর্দার আড়ালে থেকে সংগঠন বিস্তার থেকে বুথে বুথে কমিটি তৈরির মতো কাজে নেতৃত্ব দিয়ে গিয়েছেন আরএসএস থেকে রাজ্য বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। আরএসএসের কৌশলকে সামনে রেখে জেলায় জেলায় সংগঠন বিস্তারের কাজ করে গিয়েছেন তিনি। বিস্তারক নিয়োগ থেকে শুরু করে বুথ কমিটি গড়ে তোলা। নিঃশব্দে সাজিয়েছেন সংগঠনের জাল। আর লোকসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে থেকে বাংলায় এসে সেই কাজকে আরও ত্বরান্বিত করে গিয়েছেন সুনীল দেওধর, হিমন্ত বিশ্বশর্মাদের মতো ভিন রাজ্যের নেতারা। বস্তুত লোকসভা নির্বাচনে মূলত বুথ সংগঠনেই বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছিল এ রাজ্যে।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: নির্বাচনে সাফল্য পেতে নয়া অস্ত্র, প্রশান্ত কিশোরের স্ট্র্যাটেজিতে বিধানসভায় লড়বে তৃণমূল ]

লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বঙ্গে জয়ের অন্যতম সেনাপতি মুকুল রায়, রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়রা চষে বেড়িয়েছেন এক জেলা থেকে অন্য জেলা। জয়ের রণকৌশল সাজিয়েছেন। আর পর্দার আড়ালে থেকে টিম সাজিয়ে বুথে বুথে সংগঠন তৈরির কাজ করে গিয়েছেন সুব্রত চট্টোপাধ্যায়রা। এক শীর্ষ নেতার কথায়, সকলে মিলে কার্যত একটা টিম কাজ করেছে। সেই টিমে বিজেপির কেউ ছিলেন ব্যাটসম্যান আবার কেউ বোলার। দীর্ঘ সময় এরাজ্যে দলের সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক হিসাবে কাজ করার কারণে রাজ্যে দলে সংগঠনটা হাতের তালুর মতোই চেনা সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের। ১৯৮৪ সালে আরএসএস-এর ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে ঘর ছাড়েন। মিতভাষী, পরিশ্রমী, উচ্চশিক্ষিত সুব্রতবাবু দ্রুত আরএসএস-এর উপরতলার নজরে চলে আসেন। ২০০৫ সালে রাজ্যে অনুপ্রবেশ, জনসংখ্যার আধিক্য-সহ একাধিক ইস্যুতে সংঘের হয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে দমদম সেন্ট্রাল জেলে ২৪ দিন কারাবাসে কাটাতে হয় তাঁকে। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের কিছুদিন আগেই তাঁকে রাজ্য বিজেপিতে নিয়ে আসার প্রস্তুতি শুরু হয়। কেন্দ্রের বিপুল সাফল্যের মাঝে বাংলায় গেরুয়া শিবিরের সংগঠন সেই সময় কিছু ছিল না। ঘাটালে সুব্রত যখন মহকুমা প্রচারক হিসেবে কাজ করছেন, দিলীপ তখন সংঘের হয়ে ওই জেলার বিস্তারক। দিলীপ-সুব্রত জুটি সেসময় সাফল্য পেয়েছিল ভালই। রাজ্যে বিজেপিকে বাড়াতে তাই সেই পুরানো জুটির উপরই ভরসা রেখেছিল কেশব ভবন। ফলও হাতে হাতে। নতুন জুটি কাজে নামার পরই বিজেপির গোটা রাজ্যে থাকা ৪৫০টি মণ্ডল একলাফে পৌঁছে যায় ১,২৩৮-য়।

[ আরও পড়ুন:  অঞ্জু ঘোষ ভারতীয়ই, বার্থ সার্টিফিকেট প্রকাশ করে দাবি বিজেপির ]

সেই লোকসভা যুদ্ধ জয় শেষ। এবার ‘মিশন ২০২১।’ মুরলীধর সেন লেন সূত্রে খবর, পুজোর পর থেকেই এ রাজ্যে আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দেবে বিজেপি নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, লোকসভা নির্বাচনে যে ফর্মুলায় সাফল্য এসেছে, সেই একই ফর্মুলাকে অনুসরণ করে তৈরি হচ্ছে ‘মিশন ২০২১’-এর রুট ম্যাপ। অর্থাৎ সামনে থেকে মাঠে-ময়দানে যুদ্ধ করবেন দিলীপ ঘোষ-মুকুল রায়-কৈলাস বিজয়বর্গীয়রা। আর পিছনে পর্দার আড়াল থেকে সংগঠনকে বাড়াবেন সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের মতো দক্ষ সংগঠকরা। মিশন ২০২১ কে সামনে রেখে সংগঠন মজবুত করার কাজ শুরুও করে দিয়েছেন তিনি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ