Advertisement
Advertisement

Breaking News

Mithun Chakrabarty

পুরনোদের গুরুত্ব না দিয়ে অন্যত্র নজর কেন? মিঠুনের মন্তব্যে আদি বিজেপিতে ক্ষোভ

'তৃণমূলের ২১ জন বিধায়ক যোগাযোগ রাখছেন', মিঠুনের মন্তব্যে বিজেপির অন্দরে ফের অসন্তোষ।

BJP leader Mithun Chakrabarty's comment sparks row । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:October 4, 2022 1:53 pm
  • Updated:October 4, 2022 1:53 pm

রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: একুশের বিধানসভা ভোটের আগে বাংলায় দল ভাঙানোর খেলা খেলেও সফল হয়নি বিজেপি। তখন ‘যোগদান মেলা’র কর্মসূচি বুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছিল তাদের কাছে। সেই সময় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই কাজে অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল গেরুয়া শিবিরের মধ্যেই। আদি-নব্যে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল দল। বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি পর্যুদস্ত হওয়ার পর তখনকার সেই দল ভাঙানোর কৌশল যোগদান মেলা নিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল কৈলাস বিজয়বর্গীয় থেকে শুরু করে বিজেপি নেতৃত্বকে। সেই আদি-নব্য দ্বন্দ্ব এখনও চলছে বঙ্গ বিজেপির মধ্যে। আর তার মধ্যেই আবার তৃণমূলের ২১ জন বিধায়ক যোগাযোগ রাখছেন বলে বিজেপি নেতা তথা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর এই মন্তব‌্য নিয়ে দলের মধ্যেই ফের অসন্তোষ দানা বেঁধেছে।

নিজেদের সংগঠন মজবুত না করে ‘ভাড়াটে সৈন‌্য’ দিয়ে দল কতদিন চলবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বঙ্গ বিজেপির আদি নেতারা। দলের অভ‌্যন্তরে মিঠুন চক্রবর্তীর মন্তব‌্য নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকেই যাঁরা একুশের আগে বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন তাঁরা ফিরতে চাইছেন শাসকদলে। অনেকে আবার বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ত‌্যাগও করেছেন। তাহলে আবার সেই দল ভাঙানোর খেলা কেন? দলের পুরনো নেতা-কর্মীদের গুরুত্ব না দিয়ে আবার অন্য দল থেকে লোক নিয়ে আসার এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্য বিজেপির অন্দরে। বুথে বুথে কর্মী নেই। পুরনোদের অধিকাংশই নিষ্ক্রিয়। তাই বিরোধী দল থেকে আবার ভাড়াটে সৈনিক নিয়ে এসে বিজেপির শূন্যস্থান ভরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যা দলের পক্ষেই ক্ষতিকর। এমনটাই মনে করছে দলের একাংশ। পুরনো নেতাদের প্রাধান‌্য না দিয়ে, গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব না দিয়ে কেন আবার সেই পুরনো কৌশল? এটাকে ভালভাবে নিচ্ছেন না পুরনো নেতা-নেত্রীরা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: চাঁদা না দিলে অধিকার নেই অঞ্জলিতেও! মুর্শিদাবাদে ঝগড়ার মাঝে পড়ে মৃত্যু মহিলার]

গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে অন্য দলের নেতা-কর্মীদের নিতে যোগদান মেলা কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। কখনও জেলা অফিসে, কখনও রাজ্য দফতরে, কখনও বা হোটেল ভাড়া করে যোগদানের আয়োজন দেখা গিয়েছিল। আবার মেদিনীপুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সভামঞ্চেও মেগা যোগদানপর্ব চলেছিল। কেউ কেউ আবার সোজা দিল্লিতে গিয়ে যোগদান করেন। এত কিছু করেও অবশ্য বঙ্গজয়ের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায় শাহ-নাড্ডাদের। দল হারার পর এই যোগদান মেলা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের তরফে দলের সংখ্যালঘু সেলের প্রাক্তন সহ সভাপতি সামসুর রহমানদের বক্তব্য, আগে দলের পুরনো নেতা-কর্মীদের সম্মান দিতে হবে। তাঁদের সক্রিয় করতে হবে। তা না করে এভাবে আবার বাইরে থেকে নতুন লোক এনে দলে ভিড় বাড়ালে পুরনোদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়বে।

Advertisement

দু’দিন আগেই বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, মিঠুন যে ২১ জন তৃণমূল বিধায়কের সম্পর্কে মন্তব‌্য করছেন, সে বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। দিলীপের এই মন্তব‌্য থেকে স্পষ্ট যে বিষয়টি তাঁরা মোটেই ভালভাবে নিচ্ছেন না। বস্তুত, বিধানসভা ভোটের আগে এই দিলীপের নেতৃত্বেই রাজ‌্য বিজেপি নিয়মিত যোগদান মেলা করত। সেই দিলীপরাই ঠেকে শিখেছেন যে তাতে ফল ভাল হয়নি। বিধানসভা ভোটের পর সুকান্ত মজুমদারদের নেতৃত্বে রাজ‌্য দলে যে নতুন নেতৃত্ব উঠে এসেছে তাঁরা লাগাতার দিলীপ ঘোষ-সহ পুরনোদের কোণঠাসা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

রাজু বন্দ্যোপাধ‌্যায়, সায়ন্তন বসুদের মতো পুরনো নেতাদের দলে কার্যত ব্রাত‌্য করে ফেলা হয়েছে। দিলীপ-লকেটরাও প্রতি মুহূর্তে চাপের মধ্যে রয়েছেন। রাহুল সিনহা, রীতেশ তেওয়ারিরা কিছুটা বোঝাপড়া করে কোনওমতে টিকে রয়েছেন। সুকান্ত মজুমদার-অমিতাভ চক্রবর্তীরা কার্যত মিঠুনকে সামনে রেখে পুরো আদি বিজেপিকেই শেষ করে দিতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। মিঠুনকে দিয়ে এই সমস্ত কথা বলিয়ে বস্তুত, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে রাজ‌্য বিজেপি সম্পর্কে একটি ভ্রান্ত ধারণাও তৈরি করা সুকান্ত-অমিতাভদের উদ্দেশ‌্য।

[আরও পড়ুন: অষ্টমীতে মাতৃভাষাতেই পুষ্পাঞ্জলি বিগ এফএম-এর পরিবেশবান্ধব পুজোয়]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ