সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গৃহবধূরা সারাদিন গেরস্থালি সামলান। কিন্তু তাঁদের শ্রম সম্পূর্ণ বিনামূল্য হতে পারে না। তাঁরা বেকারও নন। প্রতি ঘরে ঘরে গৃহবধূরা স্ব-উপার্জনকারী। সংসারে দিনরাত যে কাজ করেন তাঁরা, তার নির্দিষ্ট মূল্য রয়েছে। গৃহবধূরা বেতন পাওয়ার যোগ্য। ১৫ বছর আগেকার এক মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta HC)। পাশাপাশি দুর্ঘটনায় (Accident) মৃত এক মহিলার পরিবারের তরফে দায়ের করা মামলায় বিচারপতি সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
২০০৮ সালে বর্ধমানের (Burdwan) ক্ষীরগ্রামের এক বাসিন্দা বাস ধরতে গিয়ে বাসের ধাক্কায় মারা যান। ক্ষতিপূরণের দাবিতে তাঁর পরিবার মোটর অ্যাক্সিডেন্ট ক্লেম ট্রাইবুনালে মামলা করে। আগেই এই মামলায় আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী প্রায় ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয় অভিযুক্ত সংস্থা। কিন্তু তা মানতে নারাজ মৃতার পরিবার। তাঁরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে ৬ লক্ষ টাকা দাবি করেন। পালটা যুক্তিতে সংস্থা দাবি করে, ওই গৃহবধূ বেকার ছিলেন, চাকরি করতেন না। তাই এত টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে কেন দাবি করা হচ্ছে?
আর তাদের এই প্রশ্নেই কার্যত ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাই কোর্টের বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তা। তাঁর এজলাসেই বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি ছিল। মামলার পর্যবেক্ষণে বিচারপতির বক্তব্য, সংসারে গৃহবধূদের অবদান অনেক বড়। তাঁরা কোনও ছুটি নেন না।৩৬৫ দিনই সংসারের যাবতীয় কাজ করেন। একই কাজ বাড়িতে পরিচারক বা পরিচারিকা রেখে করালে যে খরচ হত, তা ব্যয় করতে হয় না একমাত্র গৃহবধূদের দৌলতেই। তাই সংসারে তাঁদের কাজের আর্থিক মূল্যও রয়েছে। বিচারপতির আরও বক্তব্য, ওই শ্রমের সম্ভাব্য মূল্য মাসে যদি ৩০০০ টাকা করে ধরা হয় তাহলে তার উপর সুদ হিসেবে যে অঙ্ক দাঁড়ায়, সেটাই দিতে হবে অভিযুক্ত সংস্থাকে। আর এই অঙ্ক ৬ লক্ষ ৪১ হাজার ২০০ টাকা। তবে ইতিমধ্যে বেশ কিছু টাকা তারা দিয়ে দিয়েছে। বাকি টাকাও অবিলম্বে দিতে হবে বলে নির্দেশ দেয় বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তার বেঞ্চ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.