গোবিন্দ রায়: রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলিতে অস্বাভাবিক ফি বৃদ্ধি ও শিক্ষকদের বেতন কাঠামো-সহ একাধিক বিষয়ে নিয়ন্ত্রণে শিক্ষা বিল নিয়ে এসেছে রাজ্য সরকার। এপর্যন্ত তা রাজ্যপালের স্বাক্ষরের অপেক্ষায় তা পড়ে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যা নিয়ে এবার জটিলতা তৈরি হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। বুধবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এসলাসে এই সংক্রান্ত মামলায় এই শিক্ষা বিল নিয়ে রাজ্যের অবস্থান কি তা জানতে চেয়েছে আদালত। শুক্রবার মামলার পরবর্তী শুনানি।
এদিন শুনানি পর্বে, আদালতের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে বিচারপতি বসু বলেন, “অনেক স্কুলে ঘোড়া বা উটের দৌড় শেখানো হলেও একটা বেসিক ফি রাখা করা উচিত। অনেক স্কুলে এটা বাড়তি আয়ের জায়গা।” তাঁর কথায়, “এই রাজ্যে অনেক বেসরকারি স্কুলে স্কুল ফি বৃদ্ধি নিয়ে অনেক আবেদন জমা পড়েছে। এই রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে রাজ্যের কিছু নিয়ম দরকার। অনেক ক্ষেত্রে ‘চার্জ’ নামে যে ‘ফি’ বৃদ্ধি হচ্ছে সেটা অন্যায্য। এটার উপর কি কন্ট্রোল থাকবে না!” তার প্রেক্ষিতে রাজ্যের তরফে আইনজীবী বিশ্বব্রত বসু মল্লিক জানান, “এই শিক্ষা সংক্রান্ত বিল এক বছরের বেশি সময় ধরে রাজ্যপালের কাছে পড়ে রয়েছে। যেহেতু রাজ্যপাল ছাড়েননি, সেজন্য সরকারও কোনও পদক্ষেপ। নিতে পারছে না। রাজ্যপাল এটা ছেড়ে দিলে বৃহত্তর মানুষের উপকার হয়।”
এপ্রসঙ্গে বিচারপতি বসু বলেন, “সব ক্ষেত্রে আদালত নির্দেশ দিতে পারে না। রাজ্য সরকার অন্যান্য বিলের মত এক্ষেত্রেও সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী এটা নিয়ে ভাবছেন না?” কেন রাজস্থান মডেল মানা হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সেখানের পুর মেকানিজম দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি। পরে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতে উপস্থিত হয়ে জানান, “আগামী শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে রাজ্যের অবস্থান জানানো হবে।”
এ রাজ্যে বেসরকারি স্কুলে অস্বাভাবিক ফি বৃদ্ধি নিয়ে তিনটি প্রথম সারির স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক সংগঠনের আনা মামলায় বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু জানতে চেয়েছিলেন, এই সমস্ত বেসরকারি স্কুল গুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্যের কি পদক্ষেপ। একইসঙ্গে, স্কুলের ফি বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা নিয়েও গাইডলাইন তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। সেসময় রাজ্যের তরফে জানানো হয়, রাজ্যের বেসরকারি স্কুল পরিচালনায়, স্কুলগুলিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে নতুন আইন নিয়ে আসছে রাজ্য সরকার। এনিয়ে নথিও পেশ করা হয়। সিবিএসসই ও আইসিএসই বোর্ডের স্কুলের সংখ্যা কত এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ডের অধীনে কত সংখক বেসরকারি স্কুল রয়েছে তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়। এদিন সেই মামলায় এবার রাজ্যের অবস্থান জানতে চেয়েছে আদালত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.