Advertisement
Advertisement

কোটি কোটি টাকার বাতিল নোট বদল শহরের পোস্ট অফিসে, তদন্তে সিবিআই

প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা বদলে ফেলা হয়েছে।

CBI to probe illegal note swap case against Alipore post office officials

প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা বদলে ফেলা হয়েছে।

Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:September 4, 2017 5:02 am
  • Updated:September 29, 2019 5:34 pm

অর্ণব আইচ: বেআইনিভাবে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার উপর বাতিল নোট পালটানো হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার আলিপুর পোস্ট অফিসে। এই অভিযোগে, ওই পোস্ট অফিসের ৬ জন আধিকারিক ও কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা শুরু করল সিবিআই। সিবিআইয়ের দুর্নীতিদমন শাখা ওই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছে।

[পুজোর আগেই হাতে বেতন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের]

Advertisement

গত বছরের ৮ নভেম্বর রাতে পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়। এর কিছুদিন পর সিবিআইয়ের কাছে একটি সূত্রে খবর আসে যে, আলিপুর পোস্ট অফিসের কয়েকজন আধিকারিক বিপুল পরিমাণ বাতিল হয়ে যাওয়া নোট বেআইনিভাবে পালটে দিয়েছেন। যাদের সাহায্য নিয়ে এই নোট পালটানো হয়েছে, তাদের কোনও পরিচয়পত্রও রাখা হয়নি। এই খবর পেয়ে সিবিআই আধিকারিকরা প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেন। তাঁরা পোস্ট অফিসে গিয়ে আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদও করেন। প্রায় ৯ মাস প্রাথমিক তদন্ত চালানোর পর সিবিআই এই নোট পাল্টানোর বিষয়ে অনেকটাই নিশ্চিত হন।

Advertisement

অভিযোগপত্রে সিবিআই জানিয়েছে, ৯ নভেম্বর থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরের কানাইলাল ভট্টাচার্য সরণিতে আলিপুর হেড পোস্ট অফিসে বিপুল পরিমাণ পুরনো নোট পালটানো হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে। এই অভিযোগ আসার পর সিবিআই ও ডাক বিভাগের কর্তারা যুগ্মভাবে পোস্ট অফিসে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। ওই ‘জয়েন্ট সারপ্রাইস চেক’ বা জেএসসি—র প্রাথমিক রিপোর্ট জানায়, ১২ নভেম্বর বাদ দিয়ে ৯ নভেম্বর থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেজারার ১০ লাখ ৮১ হাজার ৫০০ টাকা বদল করেছেন কোনও নথি ছাড়াই। পরের অভিযোগটি উঠেছে দুই হেড ট্রেজারার অপরেশ দে ও সুবল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। তাঁরা ওই দুই অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেজারারের কাছ থেকে ১৮ লাখ ১০ হাজার ৫০০ টাকা কোনও নথি ছাড়াই গ্রহণ করে তা বৈধ নোটে পাল্টে দিয়েছেন।

৮ নভেম্বর কেন্দ্রীয় সরকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরের দিন, অর্থাৎ ৯ তারিখ ‘নো ট্রানজাকশন ডে’ বলে ঘোষণা করে। ওই দিন নোট লেনদেন হয়নি। সিবিআইয়ের অভিযোগ, ওই দিনেই পোস্ট অফিসের অন্য এক অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেজারার শান্তিপদ ঘোষ ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার পুরনো নোট পাল্টে নেন। ডাকঘরের ‘এরর বুক’-এ লেখা রয়েছে, সিনিয়র পোস্ট মাস্টারের মৌখিক নির্দেশে ডাক বিভাগের কর্মীদের বেতন বাবদ দেওয়া পুরনো নোটই পালটে দেওয়া হয়। ৯ নভেম্বর ‘এরর বুক’-এ দুই ডেপুটি পোস্ট মাস্টার ও একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট পোস্ট মাস্টার তা দেখে সংশাপত্র দেন। কিন্তু কত টাকা কোন কর্মীর বেতন বাবদ পালটানো হয়েছিল, সেই বিষয়ে কোনও রেকর্ড রাখা হয়নি। ফলে, তার কোনও প্রমাণও মেলেনি। তবে নোট পালটানোর বিষয়ে যে রিপোর্টটি আলিপুর হেড পোস্ট অফিস থেকে সার্কেল অফিসে পাঠানো হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে কোনও রেকর্ড ছাড়াই ৫ কোটি ৬৪ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা পাল্টানো হয়েছে।

[আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলান, যোগীকে ‘ধমক’ ভাগবতের]

সিবিআইয়ের অভিযোগ, এই নোট পাল্টানোর পিছনে যে আধিকারিকরা রয়েছেন, তাঁরা ভুয়া অ্যাকাউন্ট রেকর্ড দেখিয়ে বেআইনিভাবে পুরো কাজটি করেছেন। এই বিষয়ে আলিপুর পোস্ট অফিসের সিনিয়র পোস্ট মাস্টার জয়ন্ত চৌধুরি ও অন্য পাঁচ আধিকারিক এবং অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার পর সিবিআই মামলা শুরু করেছে। এর ভিত্তিতে তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে সিবিআই। গোটা বিষয়টির সঙ্গে আরও কোনও আধিকারিকের যোগ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ