স্টাফ রিপোর্টার: কলকাতার নামী বেসরকারি হাসপাতালেও ভুয়া ডাক্তারের হদিশ পেল সিআইডি৷ ধৃত এক ভুয়ো ডাক্তারের স্বীকারোক্তির জেরে ইএম বাইপাসের ধারের রুবি জেনারেল হাসপাতালে তদন্তে নেমেছে সিআইডি৷ উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা ভুয়ো ওই ডাক্তারের নাম কাইজার আলম৷ তাঁকে নিয়োগের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে রুবি কর্তৃপক্ষের কাছে৷ সিআইডি সূত্রে খবর, যিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন কি না সন্দেহ, সেই কাইজার বেশ কিছু ডেথ সার্টিফিকেটও ইস্যু করেছিলেন! ভুয়ো ওই চিকিৎসক আর কীভাবে চিকিৎসা করেছেন, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ শুক্রবারই রুবি হাসপাতালের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ভবনেও তদন্তে যায় সিআইডি৷
সিআইডি গোয়েন্দারা জেনেছেন, ২০১০ সালের মার্চ মাস থেকে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত রুবি হাসপাতালে চিকিৎসার কাজ করেছেন কাইজার৷ বায়োমেট্রিক অ্যাটেনেডেন্সেও সে ব্যাপারে স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে৷ নামী হাসপাতালটির কাণ্ডে রীতিমতো চোখ ছানাবড়া তদন্তকারীদের৷ দ্রুত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে৷ তবে পুলিশ নিশ্চিত, ভুয়ো ডাক্তারের চক্রের জাল বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত৷ রুবির তরফ থেকে বিষয়টি তদন্ত চলছে বলে কোনও মন্তব্য করা হয়নি৷ তবে দ্রুত জাল গোটানোর পথে পুলিশ৷ এদিকে, জলপাইগুড়ির নাগরাকাটায় ধৃত আর এক ভুয়ো ডাক্তার স্নেহাশিস চক্রবর্তীকেও কলকাতায় আনা হচ্ছে৷ পাঁচদিনের ট্র্যানজিট রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে৷ গত ১০ মে ধুমপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়৷ তাঁর হয়ে কোনও আইনজীবী দাঁড়াননি৷
উত্তর দিনাজপুর জেলা থেকে দিন দশেক আগে কাইজার আলমকে গ্রেফতার করা হয়৷ একই সময়ে গ্রেফতার করা হয়েছিল আর এক ভুয়ো ডাক্তার ধৃতিমান হালদারকে৷ এর পরেই কাইজারকে দফায় দফায় জেরা শুরু করে সিআইডি৷ জানা যায়, উচ্চ মাধ্যমিকও পাশ করতে পারেননি৷ ভুয়ো নথি দিয়ে কাজ করছিলেন তিনি৷ তাঁকে জেরা করেই বাইপাসের ধারের হাসপাতালের সঙ্গে যোগের বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিশ৷ গতকালই ওই হাসপাতালের ডিরেক্টরকে নোটিস পাঠানো হয়েছে৷
তদন্তকারীদের প্রশ্ন, প্রায় দেড় বছর একজন ভুয়া ডাক্তার কীভাবে ওই হাসপাতালে কাজ করলেন? পুলিশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছে, কোনও অস্ত্রোপচার করেছেন কি না৷ কাইজারকে যখন নিয়োগ করা হয়েছিল, সেই সময় নিয়োগ বোর্ডে কারা ছিলেন? তাঁদেরকেও প্রয়োজনে জেরা করতে পারে সিআইডি৷ ভিন রাজ্যের বা বিদেশি ডিগ্রি পাওয়া অন্য হাসপাতালের সমস্ত ডাক্তারের নাম মেডিক্যাল কাউন্সিলে নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে কি না, তার সবটাই খতিয়ে দেখবে সিআইডি৷