বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: লাগাতার কর্মসূচির পরও পার্টির সদস্য সংখ্যা কমছে বলে স্বীকার করল আলিমুদ্দিন। সদ্য প্রকাশিত ৪ নম্বর পার্টি চিঠিতে সদস্য সংখ্যা কমে যাওয়ার পাশাপাশি সর্বক্ষণের কর্মীও ধারাবাহিকভাবে কমছে বলে জানানো হয়েছে। নেতৃত্বের উল্লেখযোগ্য অংশ পার্টির কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছে না। আবার ছাত্র-যুবদের অংশগ্রহণ বাড়লেও কেন সদস্য সংখ্যা বাড়ছে না? তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে পার্টি চিঠিতে।
২০১১ সালে পরাজয়ের পর থেকে গোটা রাজ্যে পার্টি ছাড়ার হিড়িক পড়ে যায়। হু হু করে কমতে থাকে দলের সদস্য সংখ্যা। সেই রক্তক্ষরণ এখনও অব্যাহত। পার্টির রক্তক্ষরণ ঠেকাতে চিকিৎসক নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রকে দায়িত্বে আনা হলেও কাজের কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। পার্টি চিঠির ১০ নম্বর পাতায় উল্লেখ করা হয়েছে, গতবছর পার্টির সদস্য সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৪২ জন। তা এবছর কমে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৬০ হাজার ৪৮৫। অর্থাৎ একবছরে সদস্য কমেছে ৭,৫৫৭ জন।
একসঙ্গে এত সদস্য কমে যাওয়ায় চিন্তার ভাঁজ বাড়ছে আলিমুদ্দিনের কর্তাদের কপালে। এর পেছনে নেতৃত্বের ব্যর্থতাকে দায়ি করেছেন সূর্যকান্ত মিশ্র-বিমান বসুরা। চিঠিতে তাঁদের আক্ষেপ, ২০১৫ সালে কলকাতা প্লেনামে ছাত্র সদস্যের সংখ্যা পার্টিতে ২০ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা বেধে দেওয়া হলেও তা পূরণ হয়নি। এখন এই অংশের সদস্য ৭.৬৮ শতাংশ। অথচ গত দুই-তিন বছরে পার্টির কর্মসূচিতে এই অংশের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। অনেক নতুন মুখ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে। নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণেই ব্যাপকভাবে এদের পার্টিতে সংযুক্ত করা যায়নি বলে চিঠিতে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে, আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্বের অংশগ্রহণ নিয়েও।
কয়েকমাস ধরেই আলিমুদ্দিনের অন্দরে অভিযোগ উঠছিল, কোভিডকে ঢাল করে অনেকেই আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন না। সেই কারণেই কর্মসূচিকে ব্যাপকতর রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। পার্টির এই অংশকে নিষ্ক্রিয় সদস্য হিসাবে গণ্য করা যায় কিনা তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে সিপিএম।
শুধু ছাত্র নয়। মহিলা সংগঠনও ধুকছে বলে পার্টি চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ২৫ শতাংশ মহিলা সদস্য করতে হবে বলে নিচুতলাকে লক্ষ্যমাত্রা বেধে দিয়েছিল সিপিএম। আজও সেই লক্ষ্যমাত্রী পূরণে ব্যর্থ পার্টি নেতৃত্ব। সদস্যপদ পুর্ননবীকরণ করার কাজ সদ্য সমাপ্ত হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট মহিলা সদস্য হয়েছেন ১৭৫৯৪ জন। মাত্র ১০.৯৬ শতাংশ। এই সংখ্যা চিন্তা বাড়াচ্ছে আলিমুদ্দিনের। মহিলাদের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.