সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আশঙ্কা ছিলই। তা সত্যি করে বাম ছাত্র-যুব সংগঠনের নবান্ন অভিযান ঘিরে শুক্রবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল সংশ্লিষ্ট এলাকা। হাওড়ার মল্লিক ফটকের কাছে মিছিল জমায়েত হয়ে নবান্নের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তা আটকে দেয়। ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে চান আন্দোলনকারীরা। তাতেই রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে নবান্ন সংলগ্ন রাস্তাঘাট। পুলিশকে লক্ষ্য করে মিছিল থেকে পালটা ইটবৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের লাঠিচার্জে মিছিলে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন জখম হন। মাথা ফেটে যায় এক তরুণীর। খবর করতে গিয়ে আক্রান্ত হন এক সাংবাদিকও। তিনি গুরুতর জখম বলে খবর। এক্ষেত্রেও অভিযোগের তির আন্দোলনকারীদের দিকেই।
[আরও পড়ুন: যমে-মানুষে লড়াইয়ে ইতি, হাসপাতালেই মৃত্যু কেষ্টপুরে বিস্ফোরণে জখম পুলিশকর্মীর স্ত্রীর]
কর্মসংস্থান, বেকার ভাতা চালু-সহ একগুচ্ছ দাবিতে এসএফআই, ডিওয়াইএফআই-এর দু দিন ব্যাপী কর্মসূচি শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার। ‘সিঙ্গুর থেকে নবান্ন চলো’ অভিযানের সূচনা হয়। রাতে ডানকুনিতে বিশ্রামের পর আজ সকালে থেকে ফের মিছিল করে নবান্নমুখী হন বাম ছাত্র ও যুব সংগঠনের প্রতিনিধিরা। এই অভিযান ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে, এই আশঙ্কায় পুলিশ আগাম সতর্কতা নিয়েছিল। রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন একেবারে নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয়েছিল। পালটা প্রস্তুতি ছিল আন্দোলকারীদেরও। পুলিশের লাঠিচার্জ, জলকামান, টিয়ার গ্যাস সামলাতে তাঁরাও আগাম সতর্কতা নিয়েছিলেন।

শুক্রবার দুপুর নাগাদ নবান্নের দিকে মিছিল এগোতেই প্রত্যাশামতো পুলিশি বাধার মুখে পড়েন মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা। পুলিশ এবং বিক্ষোভকারীদের মুখোমুখি সংঘর্ষে ধুন্ধুমার বেঁধে যায়। মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে, ছোঁড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। সময় গড়াতে দেখা যায়, মিছিল সামলাতে হিমশিম দশা পুলিশের। রাস্তা এমন রণক্ষেত্র হওয়ায় আশেপাশের বহুতলের ছাদগুলি মিছিলকারীদের দখলে চলে যায়। অভিযোগ, সেখান থেকে রীতিমতো জঙ্গি কায়দায় হামলা চলে পুলিশের উপর। ছোড়া হয় বোমা। ইটবৃষ্টির জেরে পুলিশ কর্মীরা আহত হন। ইটের আঘাতে মাথা ফেটে গিয়েছে এক সাংবাদিকের। জখম হয়েছেন বিক্ষোভকারীদেরও অনেকে। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠায় তড়িঘড়ি অ্যাম্বুল্যান্স ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর চেষ্টা করে। তবে মিছিলের মধ্যে পড়ে রাস্তা আটকে যায় অ্যাম্বুল্যান্সের। এদিনের ঘটনার জেরে শনিবার রাজ্যজুড়ে ধিক্কার মিছিলের ডাক দিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম অভিযোগ তুলেছেন, ছাত্র-যুব সংগঠনের সদস্যরা ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে গিয়েছিলেন। তাই তাঁদের উপর পুলিশের এই অত্যাচার নিন্দনীয়।

তবে এই ধুন্ধুমার পরিস্থিতিতে নিজেদের দায় এড়িয়ে বাম ছাত্র-যুব সংগঠন দাবি করছে, তাঁরা নন, মিছিলে বহিরাগত হয়ে ঢুকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে আসলে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এই অভিযোগ যথারীতি অস্বীকার করেছে তৃণমূল।