Advertisement
Advertisement

Breaking News

২৫ ঘন্টা দেরিতে পৌঁছল রাজধানী এক্সপ্রেস, খাবারের অভাবে যাত্রী বিক্ষোভ চরমে

দেশের ‘এলিট ক্লাস’ ট্রেন রাজধানীর পরিষেবার বেহাল ছবিটা ফুটে উঠল আরও একবার।

Delayed Rajdhani Express sparks passenger protest

ফাইল ছবি

Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:January 3, 2018 9:24 am
  • Updated:January 3, 2018 9:24 am

সুব্রত বিশ্বাস: দেশের ‘এলিট ক্লাস’ ট্রেন রাজধানীর পরিষেবার বেহাল ছবিটা ফুটে উঠল আরও একবার। সোমবার বিকেলের শিয়ালদহগামী রাজধানী এক্সপ্রেস প্রায় ২৫ ঘণ্টা পর পৌঁছল বুধবার সকাল ৬টা ১০মিনিটে। এরই পাশাপাশি রাজধানীর খাবার নিয়ে ফের প্রশ্নের মুখে রেল কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়ে আইআরসিটিসির পূর্বাঞ্চলীয় গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজান দেবাশিস চন্দ্র জানিয়েছেন, “এমন অস্বাভাবিক দেরিতে ট্রেন চললে আমাদের কিছু করার নেই। মঙ্গলবার দুপুরের লাঞ্চ নিয়ে কিছু অভিযোগ উঠলেও পরে সমস্যা ছিল না। খাবারের সমস্যা মেটাতে ‘রেডি টু ইট’ খাবার দেওয়া হয়েছে। কোন ট্রেন কখন, কোন স্টেশনে পৌঁছবে, সেটা আগাম জানতে না-পারায় সময়মতো যথেষ্ট খাবার তোলা যাচ্ছে না। ফলে সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে যাত্রীদের। তবে শুকনো খাবার দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কানপুরে ট্রেনে রাতের খাবার তোলা হয়। পরে আর কোনও সমস্যা হয়নি।”

[দুর্ঘটনাগ্রস্ত বায়ুসেনার মিগ-২৯, অল্পের জন্য প্রাণরক্ষা চালকের]

রেল সূত্রে খবর, সোমবার বিকেল সাড়ে চারে নাগাদ নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে শিয়ালদহগামী রাজধানী এক্সপ্রেস ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই ট্রেন পরে রি-শিডিউল করে রাত সাড়ে ন’টায় ছাড়ার কথা বলা হয়। যদিও বাস্তবে নয়াদিল্লি থেকে সেই ট্রেন কলকাতার উদ্দেশ্যে ছাড়ে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ, প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর। এরপর সেই ট্রেন শিয়ালদহে পৌঁছয় সাড়ে ২৪ ঘণ্টা পরে বুধবার সকাল ছ’টা দশ মিনিটে। রেলের হিসাব অনুযায়ী এই ট্রেনযাত্রা অস্বাভাবিক দেরি শুধু নয়, রাজধানীর মতো এলিট ক্লাস ট্রেনের দেরির তালিকার অন্যতম নজির। যথারীতি যাত্রীরা ট্রেনে ঠিকমতো খাবার মিলছে না বলেও অভিযোগ করেন রাজধানী, শতাব্দীর মতো ট্রেনে যে-সংস্থা খাবার সরবরাহ করে, সেই রেলওয়ে ক্যাটারিং ও টুরিজম কর্পোরেশনও স্বীকার করছে, খাবারের অভাবে যাত্রীদের কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে। ওই সংস্থার কর্তাদের দাবি, ট্রেনে রান্নার কোনও ব্যবস্থা নেই। ওই রুটে কয়েকটি নির্দিষ্ট স্টেশন থেকে রান্না করা খাবার নিয়ে যাত্রীদের দেওয়া হয়। যদিও এই সব অজুহাত মানতে নারাজ যাত্রীরা। রাজধানী দিল্লি থেকেই ছেড়েছে ১২ ঘণ্টা পর। তারপরও পরিষেবা নিয়ে এই উদাসিনতা মানা যায় না। খাবার কম ওঠার অজুহাত দেখিয়ে ট্রেনের মধ্যেই বেশি পয়সা নিয়ে খাবারের কালোবাজারি হচ্ছে বলেও অভিযোগ। তাঁদের দাবি, কেউ খাবার না পেত তাহলে রেলের ক্যাটারিং সংস্থার এই যুক্তি মানা সম্ভব হত। কিন্তু একটা ট্রেনের অনেক যাত্রীই খাবার পাচ্ছেন। সেটা কী করে হচ্ছে। আবার কেটারিং সার্ভিসের ‘টিপস’-এর দৌরাত্ম্য। কার্যত যাত্রীদের বাধ্য করছেন টিপস দিতে। খাবারের পাশাপাশি রেলে কামরায় খাওয়ার জলও ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। যাত্রীদের অভিযোগ, এমনিতে ট্রেন দেরিতে চলছে। তার উপর আবার খাবারের পরিষেবা এমন হলে ভোগান্তি আরও বাড়বে।

Advertisement

[জাতি হিংসায় জ্বলছে মহারাষ্ট্র, মোদিকে ‘মৌনী বাবা’ বলে কটাক্ষ কংগ্রেসের]

কিন্তু এই রাজধানীর মতো এলিট ক্লাস ট্রেনের ২৫ ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছানোর কারণ কী। রেলের একাংশের কর্তাদের দাবি, উত্তর ভারতে কুয়াশার দাপটে সব ট্রেন দেরিতে চলছে। তারই প্রভাব পড়ছে রাজধানীর উপর। যদিও রেলের অপারেশন বিভাগ জানিয়েছে, এলাহাবাদ থেকে বক্সারের মাঝে (ভায়া মোগলসরাই) চতুর্থ লাইন না হলে এই ট্রেন চলাচলের অনিয়ম বন্ধ হবে না। এই পরিকল্পনাও বাস্তবায়নের কোনও উপায় নেই। কারণ ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরের প্রকল্প রূপায়ণ হলে সমস্যা কিছুটা মিটবে। তাই এলাহাবাদ থেকে বক্সার চতুর্থ লাইন হবে না। ফ্রেট করিডরের জমি অধিগ্রহণ সমস্যা কবে বাস্তবায়িত হবে এখনও নিশ্চিত নয় রেল। অতএব সমস্যাতেই আপাতত চলতে হবে যাত্রীদের। অপারেশন বিভাগ জানিয়েছে, ট্রেন চলাচলের সময় একটি ট্রেনের সঙ্গে অন্যটির গ্যাপ রাখা হয়, ‘ব্লক’ অনুযায়ী। এই গ্যাপের সময়ের আবর্তে রক্ষণাবেক্ষণের সময় ধরা থাকে। অর্থাৎ, লাইন, সিগন্যাল, ওভারহেড তার, খাম্বা প্রতিটি রক্ষণাবেক্ষণ একই সূত্রে ধরা থাকে। এখন ট্রেনের সংখ্যা বেড়েছে, বেড়েছে মালগাড়ির সংখ্যা। ফলে ‘ব্লকে’র যে নির্ধারিত সময় ছিল তা এখন পাওয়া যাচ্ছে না। ব্লকের নির্ধারিত সময় না পাওয়ায় বিপত্তির মধে্য ট্রেন পড়লেই একধারে অসংখ্য ট্রেন পরপর দাঁড়িয়ে পড়ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা এই পরিস্থিতিতে মার খাচ্ছে ট্রেনগুলি।

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ