Advertisement
Advertisement
Dengue

ডেঙ্গুর জেরে মৃত্যু অব্যাহত, চিন্তা বাড়াচ্ছে দক্ষিণ কলকাতার পরিস্থিতি

শনিবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৫ বছরের এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে।

Dengue menace in Kolkata | Sangbad Pratidin

ছবি: প্রতীকী

Published by: Suparna Majumder
  • Posted:November 12, 2022 9:06 pm
  • Updated:November 12, 2022 9:07 pm

অভিরূপ দাস: ডেঙ্গুর (Dengue) জেরে মৃত্যু পালা অব্যাহত। এবার ডেঙ্গুর মশার দংশনে মৃত‌্যু হল ১৫ বছরের এক কিশোরীর। হুগলির বৈদ্যবাটির কায়নাত পারভিন গত কয়েকদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিল। বৈদ্যবাটি পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই কিশোরীকে শুক্রবার দুপুরে শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে ভরতি করা হয়। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই তার মৃত্যু হয়। শনিবার ৭৫৪৫ জনের ডেঙ্গু টেস্ট হয়েছে। ৯৪৫ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে বলেই খবর।

কিশোরীর মৃত্যুর পর পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন এলাকাবাসীরা। মৃতের মামা সঞ্জু হোসেন বলেন, ‘‘কয়েকদিন ধরেই ভাগ্নি জ্বরে ভুগছিল। ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ দেওয়া হচ্ছিল। রক্ত পরীক্ষাও করা হয়েছিল। আচমকা প্লেটলেট কমতে থাকায় শুক্রবার ভরতি করে দিয়েছিলাম। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। বাঁচাতে পারলাম না মেয়েটাকে।’’

Advertisement

হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনার পাশাপাশি তিলোত্তমাতেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। তবে প্রাচীন উত্তর কলকাতা নয়, বরং আধুনিক ঝাঁ চকচকে দক্ষিণ কলকাতাই এখন মাথাব‌্যাথার কারণ। কলকাতা পুরসভার (KMC) তরফে শনিবার জানানো হয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার বরো ৮ থেকে বরো ১৪-তে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক। অন্তত ৪,৬২৭ জন। তথ্য অনুযায়ী যা মোট আক্রান্তের ৭৬.৫ শতাংশ।

Advertisement

ডেঙ্গুর মশা ভনভন করছে ঢাকুরিয়া, যাদবপুর, হালতু, বেহালা, নয়াবাদ এলাকাতেই। পুরসভার তথ‌্য বলছে, উত্তর কলকাতার বরো ১ থেকে বরো ৭ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা তূলনামূলক অনেক কম। মাত্র ১,৩৭১ জন। যা মোট আক্রান্তের ২২.৬ শতাংশ। এডিস ইজিপ্টাইয়ের বাড়বাড়ন্ত জোকা ও গার্ডেনরিচেও বেশ কম। কলকাতা পুরসভার বরো ১৫ থেকে বরো‌ ১৬ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা তাই মোটে ৫৪ জন। মোট আক্রান্তের মাত্র ০.৯ শতাংশের বাস জোকা গার্ডেনরিচে।

[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে কুরুচিকর মন্তব্য, মন্ত্রী অখিল গিরির তীব্র নিন্দা করে বিবৃতি জারি তৃণমূলের]

এদিকে স্বাস্থ‌্য দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ‌্যা প্রায় পঞ্চান্ন হাজার। শুধু কলকাতাতেই মৃত‌্যু হয়েছে পঁচিশ জনের। কেন দক্ষিণ কলকাতায় ঠেকানো যাচ্ছে না ডেঙ্গু? পুরসভার মতে, বেহালা, নয়াবাদে নানা প্রান্তে একাধিক পরিত‌্যক্ত জমি। দেওয়াল ঘেরা সেসব জমিতে হাঁটু সমান ঘাস। ফেলে রাখা এসব জমিই এখন চিন্তা বাড়িয়েছে পুরসভার।

কলকাতা পুরসভার দাবি, পরিত্যক্ত জমি নিয়ে কড়া আইন আনুক রাজ্য সরকার। এদিন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, ব‌্যক্তিগত জমিতে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করতে পারে না পুরসভা। সেক্ষেত্রে খালি জমি ফেলে রাখার ক্ষেত্রে কড়া আইন চালু করতে হবে রাজ্য সরকারকে। প্রয়োজনে পুরসভা আবেদন জানাবে। কলকাতা পুরসভার হিসেব অনুযায়ী চলতি বছরে মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৫২ জন।

পুরসভার সমীক্ষায় উঠে এসেছে ফাঁকা জমির হিসেব নিকেশও। উত্তর কলকাতায় ফাঁকা জমি রয়েছে মাত্র ৩৮৩টি। যা মাত্র ৯.৯ শতাংশ। নির্মীয়মান বাড়ির সংখ্যা ১,৬৮৪ টি। যা ৩৭ শতাংশ । পুকুর ৪৩৩ টি, নর্দমা ১৫৪৫ টি এবং পাতকুয়ো ১৭৬৬টি। সেখানে দক্ষিণ কলকাতাতে ফাঁকা জমি ৩,০৩৮ টি। নির্মীয়মান বাড়ি ২,৮৪৪ টি, পুকুর ১,৪৯০ টি, নর্দমা ১১,২০৬ টি এবং পাতকুয়ো ১০,০৪৭ টি।

ডেপুটি মেয়র জানিয়েছেন, শহরে ডেঙ্গু ছাড়াও ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজারের বেশি মানুষ। ডেঙ্গু আক্রান্তের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশই এবার নতুন স্ট্রেন ডেঙ্গু-থ্রিতে আক্রান্ত বলে দাবি পুরসভার।

[আরও পড়ুন: পাহাড় থেকে নামার পথে শ্বাসকষ্ট, হিমাচলে ট্রেকিংয়ে গিয়ে মৃত্যু কসবার মহিলার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ